আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীঘ্রই আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে ইরান-

আমি সত্যে অবিচল। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে না। স্ট্রাইকারের ভূমিকায় থাকবে ইসরাইল। ইরাকের পারমানবিক প্রকল্প ধ্বংস করতে ইসরাইল কাল বিলম্ব না করলেও, ইরানের ক্ষেত্রে বেশ হিসাব নিকাশ করেই এগুতে হচ্ছে। বারাক ওবামার কাছে থেকে সবুজ সংকেত না পেলেও অন্তত নিষেধাজ্ঞা পায়নি।

ওবামাও বুঝে গেছেন ইসরাইলের মাধ্যমে ইরান আক্রমনে তার লাভ অনেক। প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে উভয় রাষ্ট্রই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে। ইরান নিয়ে তাদের মাথাব্যথা এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবে ইরানকে পরমাণু শক্তিধর দেশ হতে দেবে না।

এ জন্য ইসরাইলকে দিয়ে তারা ইরানে হামলা চালাতে পারে। (রয়টার্স-এর সংবাদ)। মধ্যপ্রাচ্যে গণতন্ত্রের ঢেউ বয়ে গেলেও, তা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্যে কোন সুফল বয়ে আনেনি। মিশরের মোবারক সরকারের পতন ইসরাইলের জন্যে এক বিরাট আঘাত হিসাবেই বিবেচিত হচ্ছে। নানা কারনেই যুক্তরাষ্ট্র এবার মনোযোগ দিয়েছে চিরশত্রু ইরানের দিকে।

এরই মধ্যে মার্কিন শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা ইরানে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইসরাইল বলেছে, 'পরমাণু অস্ত্র তৈরির আগেই ইরানকে থামাতে হবে। ' ইরান আক্রমনের প্রায় সব আয়োজনই ইতিমধ্যে সেরে ফেলা হয়েছে। জাতিসংঘ পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ইরানের বিরুদ্ধে। ইরানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের মজুদ আছে— জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদনে তেমনটিই উল্লেখ করা হচ্ছে।

আর ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ইরানে অভিযানের ব্যাপারে জোর পাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। সহেযোগিতার হাত বাড়াবে বৃটেন, ফ্রান্স এবং উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ। সৌদি আরব তার আকাশ ব্যবহার করতে দেবে। মুসলিম বিশ্বে যাতে সৌদির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন না হয় সে জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদুতকে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগ ইতিমধ্যেই আনা হয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে। এটাকেই কাজে লাগাবে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ।

ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের স্বার্থে এবং আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় হুমকি ইরান। ' তিনি আক্রমনের ইংগিতও দেন। রয়টার্স জানায়, ওই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে শর্ত ছিল মার্কিন ওই কর্মকর্তার নাম তাঁরা প্রকাশ করতে পারবেন না। এদিকে ‘চ্যানেল টু নিউজ’ ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজের কাছে জানতে চেয়েছিল, কূটনৈতিক তৎপরতার চেয়ে ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে ঘটনাপ্রবাহ মোড় নিচ্ছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তাই মনে করি এবং ইরানের হাতে খুব বেশি সময় নেই।

’ এদিকে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে ভাষণের সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি বলেন, ‘ইরানের সাম্প্রতিক আচরণ এবং তাদের পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিলাষ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইরান ইসরাইলের জন্য হুমকি হলে আমরা হাত-পা গুটিয়ে চুপচাপ বসে থাকব না। ’ ইরান যদিও যে কোন ধরনের আগ্রাসনের জবাব দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু ইরানের এ হুমকিতে কান না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্র ইসরাইল বারবারই বলছে, ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি ঠেকাতে সামরিক অভিযানসহ সব ধরনের হামলার কথাই তারা মাথায় রেখেছে। দুয়েকটা ক্ষেপনাস্ত্র ছোড়া ব্যতীত ইরান সৌদি সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে কোন আক্রমন চালাতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন না ইসরাইলী বিশেষজ্ঞরা।

এ আক্রমনে যুক্তরাষ্ট্রে ওবামার জনপ্রিয়তা অনেক তুঙ্গে উঠে যাবে। যুদ্ধ ব্যয়ের তেমন কোন বড় ঝুঁকি নেই। উপরন্তু আরব দেশগুলোর আকুন্ঠ সমর্থন পাওয়া যাবে। নিরাপদ হবে ইসরাইল। নিরাপদ হবে হরমুজ প্রণালী।

পেন্টাগনের মুখপাত্র জর্জ লিটল বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে ইরানকে চাপে রাখার চেষ্টা করছি। ’ তবে চীন ও রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানে অবরোধ আরোপের বিপক্ষে। তারা বলেছে, ইরান যে পশ্চিমাদের ওপর হুমকি, তারা তা মনে করে না। তবে পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়াতে ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। বিশ্লেষকদের মতে, ইরান বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বড় তেল রপ্তানিকারক দেশ।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল হামলা চালালে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। আর তা যাতে না হয় সেজন্যে উপসাগরিয় সহযোগিতা পরিষদ কাজ করে যাবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, খুব শীঘ্রই আগ্রাসনের শিকার হতে যাচ্ছে ইরান। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.