আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাহারার যুগে হঠাৎ করে গ্রেপ্তার হলে কি করবেন????????

আমি কোনকিছুই সু-ভাবে প্রকাশ করতে পারি না। বর্তমানে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভালো। এতই ভালো যে, আপনি কোন দোষ না করলেও আপনাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে আর তার পরদিন হয়ত আপনি পড়বেন ক্রসফায়ারের কোপে। এই পোস্টটি আপনার মতো সাধারণ মানুষদের জন্য। অবশ্য আপনি যদি মহান সন্ত্রাসী হয়ে থাকেন তবে চিন্তা নাই আর।

এই পোস্টটি আপনার জন্য নয়। কারণ, পুলিশ জেনে শুনে আপনাকে ধরে কি আর মরবে। আফটার অল আপনি তার নির্ভরযোগ্য ইনকামের উৎস। আসুন মূল লেখাটাতে আসি। এটা প্রকাশিত হয়েছিল "প্রথম আলু"র আইন পাতায়।

লেখাটা বেশ কার্যকরী। আপনি হঠাৎ গ্রেপ্তার হলে কি করবেন তা নিয়ে পোস্টটি। আমি লেখাটাকে একটু সাজিয়ে আপনাদের জন্য দিচ্ছি। ----------------------------------------------------------------- আমাদের দেশে যে কেউ যেকোনো মুহূর্তে বিনা ওয়ারেন্টে পুলিশের দ্বারা গ্রেপ্তারের শিকার হতে পারেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুয়ায়ী, পুলিশকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এখন আপনি প্রথমেই জানবেন যে, আপনাকে ওয়ারেন্ট ছাড়া নাকি ওয়ারেন্টসহ আটক করা হয়েছে??? আপনার বিরুদ্ধে যদি কোনো ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়, তবে পুলিশ ওয়ারেন্টের বিষয় সম্পর্কে আপনাকে অবহিত করবেন এবং প্রয়োজনে তা দেখাতে বাধ্য থাকবেন। এ ক্ষেত্রে আদালতে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হওয়ার জন্য আপনাকে পুলিশ বা গ্রেপ্তারকারী তাঁর সামনে জামানতের দ্বারা মুচলেকা সই করিয়ে জামিন লাভের সুযোগ দিতে পারেন। আপনি নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা এবং পরিচয় দেওয়ার পরও যদি গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম না হন, তাহলে আপনাকে সম্ভাব্য অনেক বিপদ থেকে মুক্তি লাভের জন্য সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। পুলিশের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে আপনার পরিচয় দেবেন। বেশি জোরাজুরি করলে বলবেন, আমি সবকিছু আদালতে বলব।

কারণ নাম-ঠিকানা বাদে কোনো কিছুই পুলিশকে বলতে আপনি বাধ্য নন। আদালতে বলা আপনার অধিকার। এরপর, যা করতে হবে, তা হলো পুলিশের কাছে আপনাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইবেন। পুলিশ আপনাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানাতে বাধ্য। এরপর যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ কোনো পরিচিতকে গ্রেপ্তারের ঘটনা জানান কিংবা আপনার কাছে মুঠোফোন থাকলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত আইনজীবী নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে বলুন।

সম্ভব হলে আপনার আইজীবীর সঙ্গে সরাসরি মুঠোফোনে যোগাযোগ করুন। থানায়: গ্রেপ্তার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে নিকটস্থ থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। আপনাকে থানায় নেওয়ার পর যেখানে আটক রাখা হবে, সেখানে আপনি আপনার পরিধেয় বস্ত্র বাদে আর কিছুই নিতে পারবেন না। তাই গ্রেপ্তার হওয়ার সময় যা যা আপনার সঙ্গে ছিল, তা যখন পুলিশ নিয়ে যাবে, তখন সেগুলোর বিবরণ খাতায় লিপিবদ্ধ করার সময় কিছু বাদ দিল কি না, সেদিকে লক্ষ রাখুন। নিশ্চিত হওয়ার পর খাতায় স্বাক্ষর করবেন।

থানায় নেওয়ার পর পুলিশ আপনাকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে জেরা করবে আর আপনার বিবৃতি দিয়েই আপনাকে অপরাধী বানানোর একটা অপচেষ্টা পুলিশ চালাতে পারে। তাই পুলিশের জেরার মুখে মাথা ঠান্ডা রাখুন আর যেকোনো প্রশ্নের জবাব, যা আপনাকে অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত করবে, তা প্রদান করা থেকে বিরত থাকুন। পুলিশের কাছে আপনি যা বলবেন, তা তারা লিখে নেবে। তাই লিপিবদ্ধ করার পর পুলিশকে তা পড়ে শোনাতে অনুরোধ করুন। আর কিছু বলে ফেললেও তা কিন্তু সাক্ষ্য হিসেবে আদালতে গণ্য হবে না।

আপনার যা কিছু বলার তা আদালতে আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে বলুন। এটা আপনার অধিকার। ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট: গ্রেপ্তারের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করতে হবে। এর অধিককাল পুলিশ আপনাকে আটকে রাখতে পারবে না। এটা আপনার সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার।

২৪ ঘণ্টা সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর কোনো অবস্থাতেই (ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়া) পুলিশ আপনাকে আটক রাখতে পারবে না। এই সময় পার হয়ে গেলে পুলিশ আপনাকে অবশ্যই রিমান্ডের প্রার্থনা করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যাবে। ম্যাজিস্ট্রেট আপনাকে জামিনে ছেড়ে দেবেন অথবা রিমান্ড মঞ্জুর করবেন কিংবা রিমান্ড মঞ্জুর না করেই জেলখানায় পাঠিয়ে দিতে পারেন। আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যদি জামিনযোগ্য হয়, তাহলে জামিনপ্রাপ্তি আপনার অধিকার। তাই আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো জামিনযোগ্য কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির দ্বিতীয় তফসিলের ৫ নম্বর কলামটি দেখুন অথবা এ বিষয়ে আপনার আইজীবীকে সতর্ক হতে বলুন।

অভিযোগের কারণ গুরুতর অথবা জামিনযোগ্য না হলে আপনি জামিন না-ও পেতে পারেন। তবে জামিন পাওয়ার জন্য আইনজীবীর মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, আপনাকে জামিন নিতে হলে জিম্মাদার লাগবে, সঙ্গে লাগবে টাকা। তাই এ দুটোর ব্যবস্থা করতে যথাযথ উদ্যোগ নেবেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব আইনজীবী নিয়োগ করুন।

আপনার সামর্থ্য না থাকলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিনা মূল্যে আইনি সহায়তা পেতে আবেদন জানান। আর যদি সামর্থ্য থাকার পরও যোগাযোগ করতে পারছেন না এমন হয়, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সহায়তার জন্য সাহায্য চান। আপনাকে যদি থানায় অত্যাচার করা হয়ে থাকে, তাহলে তা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান এবং আপনাকে চিকিৎসা প্রদানের জন্য অনুরোধ করুন। তাই পুলিশ যদি এই অধিকারগুলো লঙ্ঘন করে, তাহলে আপনি আপনার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে হাইকোর্ট বিভাগে রিট করতে পারেন। ----------------------------------------------------------------- সবাই সতর্ক থাকুন।

ঈদে মজা করুন। সবাইকে ঈদ মোবারক। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.