আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রিয় বালিশের প্রতি (অনুবাদ কবিতা)

‍প্রেম নয় কবির অন্বিষ্ট হলো বিরহ ।/ কিন্তু বিরহ দুর্লভ বড়, প্রেমের ওপারে থাকে সে ।/ তাই কবিকেও প্রেমে পড়তে হয়,/ অবশ্য তা প্রেমের জন্য নয়-/ একদিন বিরহকে কাছে পাবে বলে । ...নির্মলেন্দু গুণ । ওহে মম নিঃসঙ্গ শয্যার একমাত্র সাথী, সুবালিশ মোর! সেই সব যুবা, যারা বিষাদে কাটায় রাতি বধূহীন নিদ্রাহীন অশান্তির ঘরে, তোমারে সৃজিলা প্রভূ তাহাদের তরে সহজেই যাতে তারা সব কষ্ট যেতে পারে ভুলি এবং করিতে পারে তব সাথে হর্ষে কোলাকুলি! কিসের বা কষ্ট তাহে, কিসের বিষাদ যদিও এ ওষ্ঠ মম না পারিল নিতে কোনো সুন্দরীর অধরের স্বাদ? নাহি তাতে খেদ মোর, তাহা লাগি এতটুকু দুঃখ না করি আমার তো আছো তুমি সুকোমল স্বাস্থ্যবতী বালিশ-সুন্দরী! যবে নিশি আসে নামি পৃথিবীর ’পরে; প্রকৃতির তুলি দিয়া আঁকাআঁকি করে মেদিনী গগন আর জলধির মুখ; সেই ক্ষণে, মম এই তাপিত অন্তরে তুমি শুধু ঢালি’ দাও কী মধুর সুখ! এমন দয়াদ্র বন্ধু, বালিশ আমার, এই ধরাধামে দুটি আছে বলো কার! যদিও এ শয্যা ’পরে পড়েনি লুটিয়ে কোনো উর্বশীর রূপ, শোয়নি সুন্দরী কোনো, স্বর্গধাম মোর প্রতি বিরাগ বিরূপ; কিন্তু তাতে কষ্ট কী বা—সব কষ্ট সব দুঃখবিষ তব স্পর্শ দিয়া ঘুচায়ে দিয়াছ তুমি, হে আমার রূপসী বালিশ! কাহারও প্রেমিক আমি নই, কাহারে না আমি ভালোবাসি; একদা যদিও ঢের বাসিতাম ভালো, বন্ধুগণে—সেই প্রেম হইয়াছে বাসি; কত মানবিরে, আহা! দিয়াছি হৃদয়, কী দিয়াছে তারা বিনিময়ে? দিয়াছে মৃত্যুর জ্বালা, দুঃখশোক ভাঙা সে-হৃদয়ে! জীবন পেয়ালা আজি হয়ে গেছে পরিপূর্ণ শুধু তিক্ততায়— কারণ তাহারা কেউ বাসে নাই ভালো; তবু এ ধরায় একজন তো আছে মোর বেদনার সাথী সুন্দরী, বিশ্বস্ত, যার সনে মহানন্দে কেটে যায় রাতি! সুপ্রিয় বালিশ মোর, বুকে এস, বক্ষমাঝে ঢালো সুখমধু; ধিক সব মানবিকে! আজ থেকে তুমি হও সম্রাজ্ঞী আমার, জীবনের একমাত্র বধূ । মূল কবিতা : মাইকেল মধুসূদন দত্ত ইংরেজি থেকে অনুবাদ : সায়ীদ আবুবকর

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.