আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পর্যাপ্ত চাহিদা ও সংকট না থাকায় ধ্বস নেমেছে বাজারে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে কোল্ড ষ্টোরে সংরক্ষণ করা আলুতে পচন ও চারা \ আলু চাষি, ব্যবসায়ী এবং মজুদদাররা বিপাকে

অধিক লাভের আশায় আলু সংরক্ষণ করে এখন কোল্ড ষ্টোর বিমুখ হয়ে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের শত শত ব্যবসায়ী, আলু চাষি এবং মজুদদাররা। সংরক্ষণের পর ৬ মাসের মধ্যেই ধাপেরহাটের আরভি কোল্ড ষ্টোরে রাখা আলু পচন ধরে চারা গজিয়েছে। আলু মজুদের সময় অব্যবস্থপনার ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই আলুর পচন এবং চারা গজিয়েছে বলে কৃষকরা অভিযোগ করেন। বর্তমানে আলুর পর্যাপ্ত চাহিদা ও সংকট না থাকায় ধস নেমেছে স্থানীয় আলুর বাজারে। ফলে মাথায় হাত পড়েছে সংরক্ষণকারীদের।

এছাড়াও কৃষকদের ওই সংরক্ষিত আলু পচে যাওয়ায় অতিরিক্ত বাড়তি দামে তাদের বীজ আলুর কিনে রোপন করতে হবে। এতে এলাকার কৃষক ও মজুদকারী ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। আলু চাষি, ব্যবসায়ী ও কোল্ড ষ্টোর মালিক সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে এ উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি চাষি ও কোল্ড ষ্টোরের কর্মকর্তা-র্কচারীরাও অধিক লাভের আশায় নিজ সাধ্যমত আলু সংরক্ষণে ঝুঁকে পড়েন কোল্ড ষ্টোরগুলোতে। কিন্তুু উপজেলায় একটি মাত্র কোল্ড ষ্টোর রয়েছে।

ওই ষ্টোরের আলু সংরক্ষণের ক্ষমতার বাইরে (৮৪ কেজি ওজনে এক বস্তা) এর প্রায় ৯০ হাজার বস্তা আলু রাখা হয়। এদিকে সংরক্ষণের ৬ মাস যেতে না যেতেই আলু পচন ধরে এবং অনেক আলুতে চারা গজিয়ে যায়। অথচ যে আশায় বিপুল সংখ্যক আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল কিন্তুু আলুর বাজার দর পড়ে যাওয়ায় সে আশার গুঁড়েবালি হয়ছে। তাই পুঁজি হারানোর শঙ্কায় কোল্ড ষ্টোর থেকে আলু উত্তোলন করছেন না সংরক্ষণকারীরা। কোল্ড ষ্টোরের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম জানান, বাজারে আলুর দাম কম হওয়ায় মজুদ ৯০ হাজার বস্তার মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ৩০ হাজার বস্তা আলু তুলেছে মজুদকারীরা।

তিনি আরো জানান, বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে সময়মত তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি মজুদকারীরা আলু তুলতে না পারায় ষ্টোরে পর্যাপ্ত জায়গা ফাঁকা না হওয়ায় সংরক্ষিত আলু পচন ও গজিয়ে উঠছে। আলু ব্যবসায়ী খায়বর রহমান জানান, আলুর মৌসুমে অধিক লাভের আশায় বস্তা প্রতি ৮০০ থেকে সাড়ে ৯০০ টাকায় তিনি ২ হাজার বস্তা আলু কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। এরপর কোল্ড ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ প্রতি বস্তায় আরও ৩০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়। সবমিলে প্রতিবস্তা আলুর দাম পড়ে ১০০০ হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।

কিন্তু এখন এক বস্তা আলু সাড়ে ৫ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি করলে বস্তা প্রতি তার লোকসান হবে ৫ থেকে ৬শ টাকা। তাই লোকসানের ভয়ে কোল্ড ষ্টোর মালিকের তাগাদা শর্তেও তিনি আলু উত্তোলন করছেন না বলে জানান। এছাড়াও নন্দন কুমার সাহা নামের এক কৃষক বলেন, বাড়তি লাভের আশায় ধার দেনা করে ৬০০ বস্তা আলু বীজ কিনে মজুদ রাখি। কিন্তু সেই বীজ আলুতে পচন ধরেছে। এতে ৬ লক্ষাধিক টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।

আর.ভি কোল্ড ষ্টোরের শ্রমিক নেতা ও ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম বলেন বাজারে আলুর দাম পড়ে যাওয়া ও কোল্ড ষ্টোরের ভাড়া বৃদ্ধি কারনে ব্যবসায়ী ও চাষিরা আথীক ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হয়েছেন। ফলে আলু ব্যবসায়ী ও সংরক্ষণকারীদের এবার প্রচুর লোকসান হবে। কারো কারো পুঁজি বিলীন হয়ে যাওয়ারও সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। যা এ উপজেলায় আলু উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.