আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের সংবাদপত্র এক আজব জিনিস...

১. বাংলাদেশের সংবাদপত্র এক আজব জিনিস। এদের একটি চরিত্র আছে। কিন্তু সেই চরিত্রটি যে কি তা সুস্থ্য মস্তিষ্কের পাঠকের কাছে বড়ই রহস্যময়। একটা সময় দৈনিক ইত্তেফাক হয়ে উঠেছিল বাংলা চলচিত্রের বিজ্ঞাপন প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম। পত্রিকায় সংবাদ অপেক্ষা বাংলা ছবির বিজ্ঞাপন দেখতে দেখতে অস্থির মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছিল।

এটি ইত্তেফাক অনুধাবন করবার আগেই ইনকিলাব ইত্তেফাকের স্থান দখল করতে শুরু করে। তবে ইনকিলাবের জয়যাত্রা অতি অল্প সময়ে থেমে যায় তার সরকার তথা এরশাদশাহীর তোষামদীর কারনে। ২. একটা সময় দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক ভোরের কাগজ আর জনকন্ঠ এসে পত্রিকার ধ্যান ধারনা পাল্টে দেয়। কিন্তু সেই পত্রিকাগুলো নিজেরা বদলাতে পারে নাই। তারা সংবাদ পরিবেশন অপেক্ষা দলীয় চরিত্র সংরক্ষণে নিজেদের সম্পৃক্ততা ও আনুগত্য প্রকাশে বেশী সচেতন হয়ে যায়।

এই দেশের সংবাদপত্র পাঠক যে কোন রাজনৈতিক আদর্শেরই হোক না কেন, সে সংবাদপত্রের নিকট নিরপেক্ষ ও সত্য সংবাদ প্রত্যাশা করে। তাই সংবাদ পত্রের একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করলেও পত্রিকাগুলোর বর্তমান সত্যিকার প্রচার সংখ্যা দু:খজনক। ৩. দুই টাকার পত্রিকা যে কতটা শক্তিশালী হতে পারে তার প্রমান আমাদের সময়। যাত্রা পথে এই পত্রিকার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। জনপ্রিয়তা আর সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখায় এই সংবাদপত্র বাসের যাত্রাপথ ছেড়ে স্থির বাসাবাড়ীতেও স্থান করে নেয়।

কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় এই কূল রাখি এবং ঐ কূল রাখি চরিত্রের জন্য জনপ্রিয়তায় ধ্বস নামে। বর্তমানে পত্রিকাটি একটি বাণিজ্যিক গ্রপ কিনে নিয়েছে। এখন পত্রিকাটির চরিত্র কি হবে তা সময়ই বলবে। ৪. দৈনিক পত্রিকার মধ্যে প্রথম আলো প্রথম কর্পোরেট ইমেজে আত্নপ্রকাশ করে। এই পত্রিকার সংবাদ এবং অন্যান্য কার্যক্রম পাঠক প্রিয়তার অধিকাংশ অর্জন করে নেয়।

কিন্তু জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা পত্রিকাটির ওয়ান ইলেভেনের ভূমিকা, দেশবাসীকে দেশপ্রেম শিখানো, বদলে যাও, বদলে দাও নামক ফালতু শ্লোগান আর অতিসম্প্রতি কানিজ আলমাসের প্রতি পক্ষপাতিত্ব ও অর্ধসত্য সংবাদ পরিবেশন তাদের চরিত্রকে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর করে তুলেছে। পারসোনার বিজ্ঞাপন এবং পারসোনার পক্ষে একটি অর্ধসত্য রিপোর্টই প্রমান করে কিসের বিনিময়ে সম্পাদকের সাথে সুসম্পর্কের কারনে একটি অর্ধসত্য রিপোর্ট করানো যায়। ৫. প্রথম আলোর প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আত্নপ্রকাশ করে কালের কণ্ঠ এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন। যতদূর শোনা যায়, বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে সব চাইতে বেশী বাজেট নিয়ে আত্নপ্রকাশ করে পত্রিকা দুইটি। কিন্তু সম্প্রতি পত্রিকা দুইটি বিশেষতত বাংলাদেশ প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন নিয়ে গড ফাদার শামীম ওসমানের যে ভাবে বন্দনা করছে তাতে ,মনে হয় তিনি বিশ্বনেতা।

বঙ্গবন্ধু আদর্শের একমাত্র কান্ডারী। বাংলাদেশ প্রতিদিন বর্তমানে শামীম ওসমান প্রতিদিন হয়ে গেছে। ৬. সংবাদ পাঠক এখন বোকার দল নয়। তারা বোঝে কোন সংবাদের কি উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। কোন সংবাদরে কতটুকু সত্য।

আর এই সত্য অনুসন্ধানে তারা একাধিক সংবাদপত্রও পড়ে। অথচ সংবাদপত্রের সম্পাদকরা এই সত্য জানেন না, বা জানতে চাননা । কারন তারাও কোন না কোন রাজনৈতিক দলের আদর্শের সৈনিক। তাদের নেতারাই জানতে চাননা বা মানতে চাননা, তারা জেনে বা মেনে কি করবেন। ৭. বাংলাদেশের সংবাদপত্র এক আজব জিনিস।

এর একটি চরিত্র আছে। তবে চরিত্রটি এতই মিহিন যে, আছে বলে বোঝা যায়না। বিশেষ দ্রষ্টব্য: খুব অল্প কথায় লিখলাম। অনেকটা সারাংশের মত। তবে বাংলাদেশের সংবাদপত্র নিয়ে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে।

সতত শুভ কামনা আপনার জন্য, সকলের জন্য। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.