আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৃত্তের বাইরে - ২

আমার এমন কিছু দুঃক্ষ আছে যার নাম... তিলক কামোদ এমন কিছু স্মৃতি যা... সিন্ধু ভৈরবী জয় জয়ন্তীর মত বহু ক্ষত রয়ে গেছে ভিতর দেয়ালে কিছু কিছু অভিমান , ইমন কল্যাণ শরদ বাজাতে জানলে বড় ভালো হত.....!!!!!! শুক্রবার সকাল থেকে ঘুমকাতুরে টোকনকে ৩/৪ বার ফোন করে শেষ পর্যনতো দুপুর ৩ টায় পাওয়া গেল তাকে, টয়ার খুব ইচ্ছে একসাথে দুজনে মিলে একবার অন্তত Dinner এ যায়, লাল শাড়ী পরে ,হাতে চুড়ি , কপালে টিপ বাংঙ্গালি সাজে যাবে। কারন টোকন আজো তাকে এই রুপে দেখেনি। লাল রং টোকনের খুব পছন্দ যদিও এই ক্ষ্যাত রং টয়া পড়েই না । গত ঈদে টোকনের কারনেই লাল শাড়ীটা কেনা । কিনত্ত সব আশা গুড়ে বালি টোকনের সময় হবে না , ওর আব্বা আম্মাকে নিয়ে বাইরে যেতে হবে ।

কি আর করা! রাতে ঘুমোবার আগে ছুটির দিন বলে কিছুক্ষন আডডা দিতে গেল চ্যাট রুমে অমনি আখি টয়া কে দেখে বলে উঠলো আরে টয়া আপি , জানো একটু আগে আমরা সবাই মিলে টোকন ভাইয়ের সাথে আশুলিয়ার দিকে ঘুরতে বেরিয়ে ছিলাম । তুমি থাকলে অনেক ভালো হত। টয়া অবাক হল ! এমন তো হবার কথা নয়। রাতে টোকন ফোন করলো রাগে, অভিমানে,দুংখে সব কথা টয়ার গলায় আটকে থাকল । টোকন বুজতে পারলো কাজটা ঠিক হয়নি ,sorry বলায় টয়ার দুঃখ গুলো ফোটায় ফোটায় পরতে থাকল।

ফোনের ওপাশে চুপ করে থাকা টয়া কে টোকন বুঝে , টয়ার কান্না নিঃশব্দ কেবল বড় বড় চোখ দুটো কান্নায় ভিজে যায় , এর আগেও টোকন দেখছে চোখের পানি লুকোতে টয়াকে। অনেক আদর করে টোকন তা মুছেও দিয়েছে , বলেছে জানো না তুমি কাঁদলে আমার ভালো লাগে না। এমনি মান অভিমান, হাশি কান্না আবেগ ,অনুভুতি নিয়ে দুজনের একই পথ চলা। ছোটবেলা থেকেই কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মাঝে বড় হয়েছে টয়া, পড়ালেখায় বরাবরি ভালো সে, চঞ্চল, talkative ,হাশিখুশি, অল্পতেই রেগে যায় আবার কিছুক্ষন পরেই ঠান্ডা। আর প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি ছেলেমানুষ।

ভুলোমন, বদমেজাজি ,চুপচাপ ,আগোছালো স্বভাবের টোকন এর প্রতি আসক্তিটা তাই প্রচন্ড। বিপরীত স্বভাবের টোকন কে তাই টয়া ভালোবেসেছে। দুজনের খুব কমই দেখা হয় মাসে বড়জোর একবার তাও ২/৩ ঘন্টার জন্যে। মুগ্ধতায় কেটে যায় সময়টা, টয়া বক বক করতে থাকে আর টোকন মাঝে মাঝে বলা নেই কওয়া নেই টয়ার গালে আলতো করে আদর করে দেয় । টয়া কথার খেই হারিয়ে ফেলে , লজ্জা পায় ।

কিনত্ত এভাবে দিন যায় নি ওদের। যত দিন যায় টোকন তত বদলাতে থাকে , আগের মত সময় দেয় না, ব্যস্ততার দোহাই দেয় , এটা নিয়ে অভিযোগ করলে বলে চলে যাও আমাকে ছেড়ে নতুন কাউকে খুঁজে নাও। দুজনের মাঝে টয়ার সামাজিক , বৈবাহিক, পারিপার্শিক অবস্হান একটা অদৃশ্য দেয়াল তৈরি করে। সমাজ , সংসার আর সংস্কারের বেড়াজালে বন্দি টয়া আর টোকন পারল না ভালোবাসা দিয়ে তা অতিক্রম করতে। ধীরে ধীরে টোকন হারিয়ে যেতে থাকল ।

টয়া যত তাকে অন্ধকারে হাতরে বেরায় ততই গভীড় থেকে গভীড়ে টোকন হারাতে থাকে। টোকন ইদানিং টয়াকে সহ্যই করতে পারে না। যখন তখন এটা সেটা বলে অপমান করে, পুরো সমাজ আর পৃথিবীর উপর সব রাগ টোকন টয়ার উপর দেখায়। মাসের পর মাস খোঁজ খবর নেয় না, টয়া ফোন করলে ধরে না, যদিওবা কদাচিৎ টয়া ওর নাগাল পায় এমন ভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে টয়া বেদনায় ক্ষত বিক্ষত হতে থাকে। ইচ্ছে হয় চিৎকার করে বলে টোকন চলেই যদি যাবে তবে এসেছিলে কেন আমার জিবনে ? সব কিছু জেনেই তো এসেছিলে কিছুইতো তোমার কাছে লুকাই নি আমি , ভালই তো ছিলাম আমি আমার একার পৃথিবীতে ,তবে আজ কেন সমাজ ,সংসার, পরিবার সব এত বড় হয়ে গেল তোমার কাছে ? আজ কেন তুমি আমাকে অবৈধ নারী বল ? হায় টয়ার কিছুই বলা হয়ে উঠে না।

চলব.... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।