আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বব্যাপী মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লংঘনের খতিয়ান (৩)

মানবতার গান গেঁয়ে যায়-তারুণ্যের প্রেরণায় ২৬. দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ইঙ্গ-মার্কিন প্রত্য সহযোগিতায় আরব বিশ্বের হ্রদপিন্ডের উপর বিষফোঁড়া সদৃশ ইসরাঈল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করা হয়। অতঃপর এই রাষ্ট্রের অস্থিত্ব রা, স্থিতি ও বিকাশের জন্য মার্কিনীদের প্রত্য সহযোগিতা আরব নিধন ও ভূ-খন্ড দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়। মার্কিন ভেটোর কারণে বিশ্ব স¤প্রদায়ও কিছু করতে পারছে না। প্রকৃত অর্থে প্রতিটি আরব শিশুর রক্তে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাত রঞ্জিত, তাদের ইঙ্গিতে এখনো সেখানে রক্ত ঝরছে। ২৭. ১৯৫৬ সালে মিসর সুয়েজ খাল জাতীয় করণ করলে বৃটিশ ও ফরাসীরা ইসরাঈলকে মিসরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়।

ইসরাঈল মিসরের সিনাই এলাকা দখল করে নেয়। মার্কিন মদদে ইসরাঈল ১৯৬৭ সালে জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম সিরিয়ার গোলান মালভূমি, মিসরের গাজা ও সিনাই এলাকা দখল করে নেয়। ১৯৭৩ সালে ইসরাইল আবারও মিসর ও সিরিয়া হামলা চালালে ইখওয়ানুল মুসলিমিনের কর্মীরা সর্বশক্তি দিয়ে মিসর ও-সিরিয়ার সৈন্যদের সাথে মিলে ইসরাইলে হামলা প্রতিহত করে। প্রতিরোধ বাহিনী ইসরাইলের প্রতিরা লাইন ভেদ করে তেল আবিবের দিকে অগ্রসর হলে মার্কিন চাপে মিসর যুদ্ধ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। ইখওয়ানুল মুসলিমীনের কর্মীদের সামরিক প্রশিণ ও সাহসে ভীত হয়ে মার্কিনীরা প্রমোদ গোনে ।

ভবিষ্যতে এরা মিসরের মতা দখল করবে এ ভয় দেখিয়ে মিসরীয় শাসকদের দ্বারা তাদেরকে হত্যা ও দেশছাড়া করায়। এ অবস্থায় মিসরীয় শাসকরা মার্কিন সেবাদাসে পরিনত হয় এবং মুসলিম বিশ্বের স্বার্থবিরোধী কাজে মার্কিনীদের সাহায্য করে চলেছে। সা¤প্রতিক আরব বিশ্বের জাগরণের ঢেউয়ে ভেসে যায় মার্কিন সেবাদাস মোবারক সরকার। এরপরও মার্কিন ষড়যন্ত্র থেকে নেই। ইখওয়ানুল মুসলিম কে ঠেকানোর সকল প্রস্তুতি চলছে।

২৮. স্বাধীনতার শুরু থেকেই আলজেরিয়ার জনগণ সেখানে ইসলামী শাসনব্যবস্থার চালু করার দাবী জানিয়ে আসছে। কিন্তু পাশ্চত্য তা হতে দেয়নি। গত নির্বাচনে জনগণের ভোটে ইসলামপন্থীদের মতায় যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে মার্কিন ইন্ধনে সেখানে ইসলাম বিরোধী সাময়িক অভ্যুথান ঘটিয়ে সামরিক জান্তা ইসলাম পন্থীদের ওপর বেধড়ক নির্যাতন, নিপীড়ন, জেল জুলুম ও হত্যাযজ্ঞ চালায়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার লোক নিহত হয়েছে। ২৯. স্বাধীনভাবে চলার অপরাধে হত্যার উদ্দেশ্যে মার্কিনীরা লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট কর্নেল গাদ্দাফীর তাঁবুতে পেনাস্ত্র হামলা চালায়।

কিন্তু ভাগ্যক্রমে গাদ্দাফী বেঁচে যায়। অতঃপর প্রামনহীন সন্ত্রাসের অভিযোগে লিবিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ৩০. ১৯৯৭ সালে ইসলামী বিপ্লব সংগঠিত হবার পর মার্কিন গুপ্তচররা বোমা বিস্ফোরন ঘটিয়ে ইরানে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীসহ ৭০ জন শীর্ষ স্থানীয় নেতাকে হত্যা করে সেখানে প্রতি বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা চালায়। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। অতঃপর ইরানের একটি যাত্রীবাহী বিমানে পেনাস্ত্র হামলা চালিয়ে ২৯০ জন যাত্রীকে হত্যা করে, যার মধ্যে ৫০ জন শিশু ছিল।

আর্ন্তজাতিক আদালত এর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাত কোটি ডলার জরিমানাও করে। ৩০. কোন প্রকার প্রমাণ ছাড়াই মার্কিন দূতাবাসে হামলার অভিযোগে আমেরিকা ৯৯ সালে সুদানের ঔষুধ কারখানায় ও আফগানিস্তানের বেসামরিক এলাকায় পেনাস্ত্র হামলা চালায়। আফগানিস্তান থেকে রুশ সৈন্য চলে যাওয়ার পর সেখানে যাতে ইসলামী শাসন বা কোন স্থিতিশীল সরকার হতে না পারে সেজন্য গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে রাখা হয়। তালেবানরা তা অনুগত রাখতে চেষ্টা করে। তালেবানরা আপোষহীন হতে থাকতে চাইলে লাদেন অজুহাতে তাদের উপর নেমে আসে যুদ্ধের বিভীষিকা ।

৩১. মার্কিন অস্ত্রবাজার চাঙ্গা রাখার জন্য আমেরিকা আরব, ইসরাইল, চেচনিয়া, বলকান, কুর্দি, কাশ্মির, কুর্দি, আফগান, আরাকান, মিন্দানাও প্রভূতি সংকটের স্থায়ী রুপ দিতে চায়। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে এবং পেন্টাগনে বিমান হামলার পর আমেরিকান সকল কোম্পানীর শেয়ারের দাম পড়ে গেলেও অস্ত্র কোম্পানীর শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে। পর্যবেনদের মতে, আফগানিস্তানে পর ইরাকে এতবার হামলা হলে অস্ত্র কোম্পানীগুলোর যে আয় হবে, তা দিয়ে কয়েকটি বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র গড়া যাবে। এছাড়া ১৯৬৭ সালে আমেরিকা পেরুতে হামলা চালায়। গ্রানাডা, পানামা, হাইতিও একাধিকবার মার্কিন হামলার শিকার হয়।

এসব ঘটনাও সামগ্রিক চিত্র নয়। # মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব সন্ত্রাসের জন্মদাতা। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ফিরিস্তি অনেক। যুগে যুগে তাদের কৃত সন্ত্রাসের যৎকিঞ্চিত তুলে ধরা হলো : * বৃটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর আমেরিকা ২১৬ বছর বিভিন্ন দেশে সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং অভিযান পরিচালনা করেছে। * বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমেরিকান বাহিনী একশো বারের বেশি হামলা ও হস্তপে করেছে।

* যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ১৮৯০ সালে ৩০০ ‘লাকোটা’ কে হত্যা করেছে। * ১৯৫৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৪০ টির বেশি দেশে হস্তপে করেছে। * দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০ টি দেশে বোমা নিপে করেছে। দেশগুলো হল : চীন-১৯৪৫-৪৬, কোরিয়া-১৯৫০-৫৩, চীন-১৯৫০-৫৩, গুয়েতামালা-১৯৫৪, ইন্দোনেশিয়া-১৯৫৮, কিউবা-১৯৫৯-৬০, গুয়েতামালা-১৯৬০ ,কঙ্গো-১৯৬৪, পেরু-১৯৬৫, লাওস-১৯৬৪-৭৩ ,ভিয়েতনাম-১৯৬১-৭৩, কম্বোডিয়া-১৯৬৯-৭০, গুয়েতামালা-১৯৬৭-৬৯, গ্রানাডা-১৯৮৩, লেবানন-১৯৮৪, লিবিয়া-১৯৮৬, এলসালভেদর-১৯৮০, নিকারাগুয়া-১৯৮০, পানামা-১৯৮৯, ইরাক-১৯৯১-৯৯, সুদান-১৯৯৮ ,আফগানিস্তান-১৯৯৮, যুগোশ্লাভিয়া-১৯৯৯, আফগানিস্তান-২০০৩, ইরাক-২০০৫, লিবিয়া-২০১০ চলবে------ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.