আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেবী, মন্দিরে-বাহিরে-ক্ষমতায়!!!

বাস্তবতাময় প্রকাশ্য ছোটবেলায় দুর্গোৎসব ছিলো আমার অসম্ভব প্রিয়। দশমীর দিনে যে মেলা হতো, তাতে প্লাস্টিকের লাটিম পাওয়া যেতো, হাতে পেঁচিয়ে শূন্যে ছেড়ে দিলে যে লাটিম বাতাসে ঘুরে উঠতো। লোহার আলযুক্ত কাঠের লাটিম ঘোরানোর সাহস আমার তখনো হয়নি! ছোটবেলায় ভিতু ছিলাম কিনা জানিনা, তবে কখনো হাতি দেখলে ভয়ে দৌড়ে পালাতাম। অথচ আশ্চর্য, ষষ্টীর সকালে আমি মন্দিরের সামনে ছুটে যেতাম গনেশ ঠাকুরকে দেখার প্রত্যাশায়! আমি এখনো ছুটে যাই, তবে গনেশকে নয় দেবী দুর্গাকে দেখতে, দুর্গাদের দেখতে!!! মন্দিরের ভেতরে এক দুর্গা, বাহিরে অসংখ্য দুর্গা!!! মন্দিরে অসুর বিদ্ধ হয় ত্রিশুলে আর বাহিরে আমি বিদ্ধ হই দৃষ্টির দংশনে!!! তবে দৃষ্টি কিম্বা ত্রিশুলে যেমন বিদ্ধ হয় সুর কিম্বা অসুর! তেমনি গনতন্ত্রে বিদ্ধ হয়, হয়েছিলো অগনতান্ত্রিক অসুরেরা! ওয়ান/ইলেভেনের পর এ জাতির ওপর চেপে বসেছিলো অসংবিধানিক অসুরেরা। যারা দুই নেত্রীকে করেছিলো কারাঅন্তরীপ, মেতেছিলো প্লাস-মাইনাসের দানবীয় খেলায়! কিন্তু সেদিন দূর্গতিনাশিনী দূর্গা ভর করেছিলো, দুই নেত্রীর মাঝে! ত্রিশুলে বিদ্ধ না হলেও অসুরেরা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিলো, গনতন্ত্রের কাছে পরাজিত হয়েছিলো অসংবিধানিক সরকার।

এবার দূর্গতিনাশিনী দূর্গা মর্তে এসেছেন হাতির পিঠে! আর আমাদের অগনতন্ত্রনাশিনী এক দেবী ক্ষমতায় এসেছেন থ্রি/ফোর্থ মেজরিটির রোলস রয়েস-এ! সঙ্গে নিয়ে এসেছেন অনেক প্রত্যাশা......ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন, জঙ্গিবাদ ও দূর্নীতি দমন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের স্বপ্ন নিয়ে। আড়াই বছর চলে গেছে...চারিদিকে অসুরেরা ফেলিছে নিঃশ্বাস...ধর্মের নামে জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধী অসুর! শেয়ার বাজারে দরবেশ অসুর! বাজারে মজুতদার অসুরেরা নিঃশ্বাস ফেলছে! রাজপথে গরু-ছাগল চিনলেও অচেনা মানুষের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে চলন্ত অসুরেরা.....!!! এর মধ্যেই আবার কল্যানময়ী, দূর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা শারদ বার্তা নিয়ে এসেছেন। আমি জানিনা, হিন্দু ধর্মালম্বীরা এবার দেবীর কাছে কি চাইবে? তবে শেয়ার বাজারে পুঁজি হারানো, পাগলপ্রায় ব্যাক্তিটি চাইতে পারে- কল্যানময়ী মা, শেয়ার বাজারে কল্যান দাও... সঞ্চয় হারানো মধ্যবিত্ত, বাজার থেকে ফিরে দীর্ঘশ্বাসে চাইতে পারে- মা দূর্গতিনাশিনী, দ্রব্যমূল্যের দূর্গতি দূর করো... জীবিকার প্রয়োজনে রাস্তায় থাকা স্বামীর জন্য ভীত স্ত্রী চাইতে পারে- মা, আমার সীথির সিঁদুর তুমি অক্ষয় করো... এর পাশাপাশি দেশের দেবীর কাছে সবাই চাইতে পারে- প্রধানমন্ত্রী মা, কল্যান দাও। শেয়ার বাজারে দরবেশ অসুর, বাজারে মজুতদার অসুর, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের অসুর, দমন করো... যদি তারা তোমার দলের হয় তবুও...!!! তুমিতো আর অসুরদের দেবী নও....তুমি দেশের দেবী। তুমি বাস্তবায়ন করো, তোমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি....দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন করো, ফ্রী দিতে নাই পারো কৃষককে কম মূল্যে সার দাও, ঘরে ঘরে চাকরি নাই দাও...ঘরে ঘরে নিরাপত্তা দাও।

মা, যানজটের শহরে জটের মতো কি আটকে থাকবে যুদ্ধাপরাধী বিচার প্রক্রিয়া! সিগনাল শুধু সবুজ রাখো মা, এক্ষেত্রে আমরা লাল সিগনাল দেখতে চাইনা। চারিদিকে ঢাকের শব্দে, ধিরে ধিরে বিদায়ের সুর.....দেবী আর কিছুক্ষন পর বিদায় নেবেন....তবে তিনি যে কল্যান রেখে যাবেন তা আরো কল্যানময় করার জন্য, দূর্গতিনাশ করার জন্য, সবাই চেয়ে থাকবে দেশের দেবীর দিকে....... মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা আপনার দিকে চেয়ে রয়েছি.....  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।