আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকার জনগন ও বিমান বাহিনী

উন্নত দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা জনগনের জান মাল হেফাযতের, সুযোগ-সুবিধা প্রদানের, পৌর কার্যক্রম ও যথাথথ উন্নয়নের মাধ্যমে সেবা প্রদানের দায়িত্ব সরকারের। সরকার এজন্য বিভিন্ন ভাবে কর আদায় করে থাকে। পুলিশ করে আভ্যন্তরীন হেফাযত (যদিও অনেকে ভিন্নমত পোষন করবেন, আমি রাষ্ট্র পরিচালনায় বিভিন্ন অধিদপ্তর বা বিভাগের কর্ম সমুহ উল্লেখ করছি), সসশ্ত্র বাহিনী দেশের জনগনকে বহি আক্রমন ও সমুহ আক্রমন থেকে রক্ষা করতে নিয়োজিত। দুটো বাহিনীই (পুলিশ বাহিনী, সসস্ত্র বাহিনী) জনগনের করের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। বিশ্বব্যাপী প্রায় একই নিয়ম।

প্রশাসন ও জনগনের করের মাধ্যমে পরিচালিত। এই সাধারন জনগন যদি ভালভাবে থাকেন, তা'হলে অধিকতর কর দিয়ে দেশোন্নয়ন সহ কর দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন সংস্থাকে আর উত্তম সুযোগ সুবিধা দিতে পারবেন। ঢাকা শহরে বিমান বাহিনী পুরোনো বিমান বন্দরের পাশ দিয়ে পরিকল্পিত মেট্রোরেলের স্থপনায় আপত্তি জানিয়েছেন। যার কারনে ঢাকায় প্রস্তাবিত মেট্রোরেল স্থাপনের প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। বিমান বাহিনীর আপত্তি " 'প্রতিরক্ষা' বিঘ্নিত হতে পারে" দেশের অভ্যন্তরে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব তো বিমান বাহিনীর নয়।

আর বিমান বাহিনী যে স্থানে আপত্তি দিচ্ছে ঐ স্থানটিও বিমান বাহিনীর নয়। বিমান বাহিনীর পক্ষে শুধু বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ইমারতের উচ্চতা যদি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে শুধু ঐ সময়ে রাজুককে বলতে পারে যে, অত উচু ইমারতটি ঐ স্থানে করা যাবে না। মেট্রোরেলের উড়াল লাইন ১৫(পনেরো) মিটারের বেশী উঁচু হবে না। ঐ স্থানে অবস্থিত "নভো থিয়েটারের" উচ্চতা এর চেয়ে বেশি হবে। সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে এইখানে বিমান বাহিনীকে ছাড়পত্র দেবার জন্য চিঠিই বা কে পাঠিয়েছে(!) যার কোন সংশ্লিষ্টতাই এখানে নেই, তাকে কেন এখানে জড়ানো হচ্ছে।

যদি এতই সমস্যা হয়, নভোথিয়েটারকেই ভেঙ্গে ফেলা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেট্রোরেল ঘণ্টায় ৬০/৮০ হাজার যাত্রী বহন করতে পারবে। অর্থাৎ মিরপুর বা উত্তরা থেকে বাংলাদেশ যেতে আপনার আমার তথা ৬০হাজার যাত্রীর লাগবে ৪০-৪৫ মিনিট। কারন মেট্রোরেল ডিজাইন করা হয় এমনভাবে যে কোন ট্র্যফিক সিগনাল দিয়ে তাকে যেতে হয় না। মেট্রোরেলের গতি সাধারনত ৯০-১০০কিমিতেও নিয়ে যাওয়া যায়।

মেট্রোরেলের বগিগুলোও ডিজাইন করা হয় এমন ভাবে যাতে করে দশ সেকেন্ডে (হাঁ, দশ সেকেন্ডে)প্রতিটি স্টপেজে শতশত লোক / তথা যাত্রী ওঠানামা করতে পারেন। আমি নিজে টোকিও তে ছ' মাস ছিলাম। দেখেছি তাদের উন্নত মেট্রোরেল টোকিও শহরের দৈনিক জীবন ব্যবস্থাকে কি সুন্দর রুপে সচল রেখেছে এবং এর প্রতিফলন সয়ংক্রিয়ভাবে অর্থনীতিতেও চলে আসে। তা জাপানের অর্থনীতিই উদাহরন। ঢাকা শহর দৈনন্দিন ট্র্যফিক জ্যমের জন্য একটি অচল শহর।

মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ঢাকা। এই শহরটিকে বাঁচাতে, দৈনন্দিন জীবনে স্পন্দন ও স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে শুধু এটি নয় মেট্রোরেলের পরিধি আরও বাড়াতে হবে এবং অন্যান্য শহর যেমন চট্টগ্রামও এর আওতায় আনতে হবে। যদিও আমি মনে করি বিমান বাহিনীর আপত্তির ক্ষেত্র নয় এটি। কারন প্রস্তাবিত মেট্রোরেল বিমান বাহিনীর এলাকার মাঝ দিয়ে যাচ্ছে না, পাশ দিয়ে সরকারী এলাকা দিয়ে যাচ্ছে( বিমান বাহিনীর এলাকাও বৃহদর্থে সরকারী) তবুও যেহেতু বিমান বাহিনীর নিকট নথি পাঠানো হয়েছে, ঢাকা বাসির স্বার্থে, রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক দ্রুতায়ন করনকল্পে, আধুনিকায়নের স্বার্থে, জনগনের যোগাযোগ সমস্যা সাধনের জন্য, দৈনন্দিন জীবন ও অর্থনীতিতে গতিময়তা আনয়নের লক্ষে অবিলম্বে তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করা উচিত। এবং আগামী দু' বছরে প্রাথমিক এমআরটি-৬ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা উচিত।

বিমান বাহিনী যদি আপত্তি প্রত্যাহার না ও করে, ফার্মগেট থেকে পুরাতন বিমান বন্দর পর্যন্ত এলাকাটি সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে এমআরটি-৬ প্রকল্পটির কাজ অবিলম্বে শুরু করা উচিত। মনে রাখতে হবে এমআরটি-৬ প্রকল্পটি শুরু করতে যত দেরি তত ক্ষতি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।