আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নামায

আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি। আযান ও ইক্কামাত আযানঃ আরবী আযানের বাংলা অর্থ ১। আল্লাহু আকবার -----৪ বার আল্লাহই মহান ও সর্বশ্রেষ্ঠ ২। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ --২ বার আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। ৩।

আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসুল্লাল্লাহ্- ২বার আমি সাক্ষ্য দিচিছ যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ আঃ) আল্লাহর প্রেরিত রসুল। ৪। আশহাদু আন্না আলীয়ান ওয়ালী উল্লাহ-২ বার আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে হযরত আলী (আঃ) আল্লাহর ওলী। ৫। হাইয়্যা আলাছ ছালাহ্ -২ বার তোমরা নামাযের দিকে ছুটে এসো।

৬। হাইয়্যা আলাল ফালাহ্- ২ বার তোমরা সাফল্যের দিকে ছুটে এসো। ৭। হাইয়্যা আলা খয়রিল আমাল- ২ বার তোমরা সর্বোত্তম কাজের দিকে ছুটে এসো। ৮।

আল্লাহু আকবার-২ বার আল্লাহই মহান ও সর্বশ্রেষ্ঠ। ৯। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্-২ বার এক আল্লাহ্ব ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। ইক্কামাত ঃ আরবী ইক্কামাতের বাংলা অর্থ ১। আল্লাহু আকবার -----২ বার আল্লাহই মহান ও সর্বশ্রেষ্ঠ ২।

আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ --২ বার আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। ৩। আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসুল্লাল্লাহ্- ২ বার আমি সাক্ষ্য দিচিছ যে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ আঃ) আল্লাহর প্রেরিত রসুল। ৪। আশহাদু আন্না আলীয়ান ওয়ালী উল্লাহ-২ বার আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে হযরত আলী (আঃ) আল্লাহর ওলী।

৫। হাইয়্যা আলাছ ছালাহ্ -২ বার তোমরা নামাযের দিকে ছুটে এসো। ৬। হাইয়্যা আলাল ফালাহ্- ২ বার তোমরা সাফল্যের দিকে ছুটে এসো। ৭।

হাইয়্যা আলা খয়রিল আমাল- ২ বার তোমরা সর্বোত্তম কাজের দিকে ছুটে এসো। ৮। ক্বাদ ক্বামাতিছ্ ছালাহ্ - ২ বার নামায প্রতিষ্ঠিত হয়ে (দাঁড়িয়ে) গেছে। ৯। আল্লাহু আকবার-২ বার আল্লাহই মহান ও সর্বশ্রেষ্ঠ।

১০। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্-১ বার এক আল্লাহ্ব ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। উলি্লখিত আযান ও ইক্কামাতের ৪ নং অংশটি মূল আযান ও ইক্কামাতের অংশ নয়, তবে বলা ভাল। কিন্তু কেউ যদি উক্ত অংশকে মূল আযান বা ইক্কামাতের অংশ ভেবে নিয়ে বা ওয়াজীব মনে করে তা আযান ও ইক্কামাতের মধ্যে উচচারণ করে, তাহলে তার ঐ আযান ও ইক্কামাত বাতিল হয়ে যাবে। নামায ওয়াজীব নামায সমূহঃ ওয়াজীব নামায মোট ৬ প্রকার ঃ ১।

ফজরের নামায- ২ রাকাত ওয়াজীব ২। যোহরের নামায- ৪ রাকাত ওয়াজীব ১। আসরের নামায ঃ ৩। আসরের নামায- ৪ রাকাত ওয়াজীব ৪। মাগরিবের নামায- ৩ রাকাত ওয়াজীব ৫।

এশার নামায- ৪ রাকাত ওয়াজীব দৈনিক মোট - ১৭ রাকাত ওয়াজীব ২। নামাযে আয়াত বা প্রাকৃতিক- বিপর্যয়ের নির্দেশনাবলী সংক্রান্ত নামায, যেমন- চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ কালে, ভূমিকম্পকালে ইত্যাদি। ৩। যানাযার বা মৃতের জন্য নামায, ৪। কাবাশরীফের ওয়াজীব তাওয়াফের নামায, ৫।

পিতার ক্কাযা করা নামায যা তার মৃতু্যর পর আদায় করা তার বড় ছেলের উপর ওয়াজীব্ ৬। মানত,ক্বসম খাওয়া বা কারও নামায ভাড়া নেয়ার মাধ্যমে যে সব নামায ওয়াজীব হয়ে থাকে। নামাযের সময়ঃ প্রত্যেক নামাযের সময়কে মোটামুটি ভাবে- ২ ভাবে ভাগ করা যায়ঃ- ১। বিশেষ সময় ও ২। যৌথ বা সাধারণ সময় ।

১। যোহরের নামাযের সময় বিশেষ সময়- মাটিতে খাড়াভাবে পুঁতে রাখা কোন কাঠির ছায়ার দৈর্ঘ্য মধ্যাহ্নের (দুপুর) সময় যখন সবচেয়ে কম থাকে এবং এরপর যে মুহুর্ত থেকে ঐ কাঠির ছায়ার দৈর্ঘ্য পুনরায় বাড়তে শুরু করে,তখনই যোহরের নামাযের সময় শুরু হয়। যোহরের ওয়াক্ত শুরু হবার পর ঠিক চার রাকাত যোহরের ওয়াজীব নামায পড়া যায়,এই পরিমাণ সময়কেই যোহরের নামাযের বিশেষ সময় বলে। অর্থাৎ এ পরিমাণ সময়টি শুধুমাত্র যোহরের ওয়াজীব নামাযের জন্যই সুনির্দিষ্ট এবং এ সময় আসরের নামায পড়া চলবে না। যৌথ সময়ঃ যোহর ও আছরের নামাযের বিশেষ সময়দ্বয়ের মধ্যবর্তী সময়ই যোহর ও আছর উভয় নামাযেরই যৌথ বা সাধারণ সময়।

শেষ সময়ঃ আছরের নামাযের বিশেষ সময় শুরু হবার পূর্বে পর্যন্ত যোহরের নামায পড়ার শেষ সময়। ২। আছরের নামাযের সময়ঃ বিশেষ সময়ঃ সূর্যাস্তের পূর্বে চার রাকাত আছরের ওয়াজীব নামায পড়া যায়,এ পরিমাণ সময়টাই হচ্ছে আছরের নামাযের বিশেষ সময়। অর্থাৎ এ সময় পর্যন্ত কেউ যদি ঐ দিনের যোহরের ওয়াজীব নামায না পড়ে থাকে তাহলে তার যোহরের নামায, আছরের জন্য সুনির্দিষ্ট বিশেষ সময়ে সে পড়তে পারবে না। তখন তাকে ঐ দিনের আছরের নামাযই আদায় করে নিতে হবে এবং পরে ঐ দিনের যোহরের নামাযের ক্বাযা আদায় করে নিতে হবে।

যোহরের নামাযের বিশেষ সময় শেষ হবার পরই আছরের নামাযের সময় শুরু হয়। আছরের নামাযের বিশেষ সময়ই হল আছরের নামাযের শেষ সময়। যোহর ও আছরের নামাযের যৌথ বা সাধারণ সময় ইতিপূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। ৩। মাগরিবের সময় ঃ বিশেষ সময়ঃ সূর্যাস্তের পর পূর্বাকাশে যে লাল আভা দেখা দেয় তা মিলিয়ে যাবার সাথে সাথেই মাগরিবের নামাযের সময় শুরু হয়।

মাগরিবের নামাযের সময় শুরু হবার পরথেকে মাগরিবের তিন রাকাত ওয়াজীব নামায পড়া যায় এ পরিমাণ সময়টাই মাগরিবের নামাযের বিশেষ সময়। মাগরিবের নামাযের বিশেষ সময় শেষ হবার সাথে সাথেই এশার নামাযের সময় শুরু হয়। শেষ সময়ঃ এশার নামাযের বিশেষ সময় শুরু হবার পূর্বেই সময়ই হচ্ছে মাগরিবের নামাযের শেষ সময়। ৪। এশার নামাযের সময়ঃ বিশেষ সময়ঃ মধ্যরাত্রি (অর্থাৎ মাগরিবের ১ম সময় থেকে নিয়ে সুবহেছাদিক বা ফজরের সময় শুরুর পূর্ব পর্যন্ত সময়ের অর্ধেক বা ঠিক মাঝামাঝি সময়টাই হল মধ্যরাত্রি) শুরু হবার পূর্বে চার রাকাত এশার ওয়াজীব নামায আদায় করা যায়, এ পরিমাণ সময়ই হল এশার নামাযের বিশেষ সময়।

শেষ সময়ঃ এশার নামাযের বিশেষ সময়ই হল এশার নামাযের শেষ সময়। যে ব্যক্তি তখনও ঐ দিনের মাগরিবের নামায আদায় করেনি, সে ঐ দিনের এশার বিশেষ সময়ে ঐ মাগরিবের নামায আর পড়তে পারবে না। তখন তাঁকে ঐ দিনের এশার নামাযই আদায় করতে হবে এবং পরে তাকে ঐ মাগরিবের নামায ক্বাযা করে নিতে হবে। মাগরিব ও এশার যৌথ বা সাধারণ সময় ঃ মাগরিব ও এশার বিশেষ সময় দুটির মধ্যবর্তী সময়ই হচ্ছে মাগরিব ও এশা এই উভয় নামাযেরই যৌথ বা সাধারণ সময়। ৫।

ফজরের নামাযের সময়ঃ সুবহে-ছাদিকের সময় থেকে নিয়ে সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত সময়ই হল ফজরের নামাযের সময়। সব নামাযই ১ম সময়ে পড়া উত্তম এবং তা জামাত সহকারে পড়া সর্বোত্তম ও মুস্তাহাব। যে ব্যক্তির মাগরিব ও এশার নামায অথবা এ-দুয়ের যে কোন একটি ক্বাযা হয়ে গেছে, ফজরের ওয়াক্ত শুরু হবার পূর্বেই তা আদায় করে নেয়া তার জন্য ইহ্তিয়াত্-বা সতর্কতামূলক ওয়াজীব। তখন সে ঐ নামায নগদ আদায় বা ক্বাযা কোনটারই নিয়ত করবে না বরং শুধু মাত্র আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিয়তেই ঐ নামায পড়ে নিতে হবে। কিবলাহ্ কিবলাহ্ অর্থাৎ পবিত্র কাবা ঘরের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে নামায পড়া ওয়াজীব।

কেউ যদি এমন কোন স্থানে যায় যে,সেখানে সে কিবলার দিক নির্ধারণ না করতে পারে, তখন যদি তার নামাযের সময় যথেষ্ট থাকে,তাহলে তাকে চারদিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে চার বার নামায আদায় করতে হবে। যদি নামায ক্বাযা হবার সম্ভাবনা থাকে,তাহলে যেদিকে কি্ববলা হবার সম্ভাবনার ব্যাপারে মন বেশী সায় দেয়,ঠিক সেদিকে ফিরে নামায আদায় করলেই চলবে। নামাযী ব্যক্তির পোশাকের শর্তাবলীঃ ১। পোশাক অবশ্যই পাক-পবিত্র হতে হবে। ২।

পোশাক অবশ্যই হালাল বা বৈধ উপায়ে অর্জিত হতে হবে। ৩। পোশাক যেন কোন মড়ার দেহ থেকে তৈরী না হয়। ৪। পোশাক যেন কোন হারাম মাংশধারী প্রাণীর দেহ থেকে তৈরী না হয়।

৫। পুরুষ নামাযীর ক্ষেত্রে পোশাক যেন রেশমের তৈরী বা সোনার সুতার মিশ্রনে বোনা না হয়ে থাকে। ক্স তবে স্ত্রীলোকের জন্য ৫ নং শর্ত আদৌ প্রযোজ্য নয়। ক্স হারাম মাংশধারী প্রাণী যেমন বিড়াল ইত্যাদি প্রাণীর লোম যদি নামাযীর পোশাকে নামাযরত অবস্থায় লেগে থাকে,তাহলে তার নামায শুদ্ধ হবে না,অর্থাৎ বাতিল হবে। ক্স পুরুষের জন্য সোনা ব্যবহার করা নামায ও নামাযের বাইরে সর্বাবস্থায়ই হারাম,তা যে পরিমানেই হোক না কেন? নামাযের স্থানের শর্তাবলী ১।

নামাযের স্থান যেন হালাল অর্থাৎ বৈধ হয় (অবৈধ উপায়ে অর্জিত না হয়)। ২। নামাযের স্থান যেন স্থির হয়,অর্থাৎ গাড়ী,নৌকা ইত্যাদির মত যেন টল্টলায়মান/অস্থির না হয়। ৩। নামাযের স্থানে ছাদের উচ্চতা এমন হওয়া উচিৎ যাতে সেখানে সোজা হয়ে দাঁড়ানো যায়।

৪। নামাযের স্থান যদি নাপাক বা অপবিত্র হয়, তা যেন এমন না হয় যে ঐ নাপাকী নামাযীর দেহ বা পোশাকেও ছড়িয়ে পড়তে বা প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ৫। নামাযী ব্যক্তির হাঁটু রাখার স্থান এবং সিজদা দেয়ার স্থানের মধ্যকার পার্থক্য যেন হাতের চার আংগুলের (বন্ধ অবস্থায়) চেয়ে বেশী না হয়। ইহতিয়াতে-ওয়াজীব হচ্ছে সিজদার স্থান ও পায়ের আংগুল রাখার স্থানের মধ্যকার পার্থক্য যেন হাতের চার আংগুল পরিমানের চেয়ে বেশী না হয়।

নিয়ত নিয়ত শব্দের অর্থ হচ্ছে সংকল্প বা ইচছা করা। নিয়ত করা অর্থ এই নয় যে আরবী,ফারছী উর্দু, বাংলা বা অন্য কোন ভাষায় কোন একটি বাক্য বা কথা মুখে উচ্চারণ করা। এমনকি মনে মনে উচ্চারণ করা বা ঐ কথাগুলো মনে মনে ভেবে নেয়া বা কল্পনা করারও কোন প্রয়োজন নেই। তাহলে নিয়তটা কি? নিয়ত হচ্ছে নির্দিষ্ট কোন কাজ করার ইচ্ছা করা। এটা মনের একটা সিদ্ধান্ত।

এর জন্য কোন কিছু, বিশেষ কোন ভাষায় মুখে বা মনে মনে উচ্চারণ করার আদৌ কোন প্রয়োজন নেই। এখন প্রশ্ন হতে পারে, যেকানে বলা হচ্ছে নিয়ত করা ওয়াজীব, অথচ, কোন ব্যক্তি ঐ কাজ করার সময় ঐ কাজের নিয়ত করল কিনা তার প্রমান কি? এর উত্তরটা সহজ। যেমন- ওযুর জন্য নিয়ত করা ওয়াজীব। এখন এক ব্যক্তি ওযু করছে, কিন্তু সে নিয়ত করেছে কিনা তার প্রমাণ যদি পেতে চাই তাহলে ঐ ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা দরকার, এই যে ভাই, আপনি কি করছেন। যদি সে উত্তর দেয়, "ওযু করছি" তাহলে বোঝা যাবে যে সে ইচ্ছাপূর্বক বা স্বেচ্ছায় অর্থাৎ নিয়ত করতঃ ওযু করছে।

কিন্তু তার উত্তর যদি এমন হয় "তাইতো, এ-আমি কি করিছ? আমার যে একেবারেই খেয়াল নেই? তাহলে এক্ষেত্রে বুঝতে হবে সে ওযু করছে ঠিকই, তবে ওযুর নিয়ত সে করেনি, ওযু করার ইচ্ছা সে করেনি, ভুলে সে ওযু করিছল, স্বেচ্ছায় নয়। এমতাবস্থায় তার ওযু শুদ্ধ হবে না। কারণ ওযুতে নিয়ত করা ওয়াজীব। কিন্তু সে ওযুর নিয়ত করেনি। নিয়তের শর্তাবলীঃ ১।

নিয়ত সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট হতে হবে, অর্থাৎ আমার কাছে এটা সুস্পষ্ট হতে হবে যে আমি কোন ওয়াজীব কাজ করতে যাচ্ছি না মুস্তাহাব কাজ বা অন্য কিছু। ২। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা পোষণ (কুরবাতান্ ইলাল্লাহ) নিয়তের মধ্যে অবশ্যই থাকতে হবে। অর্থাৎ যে কাজ আমি করতে যাচ্ছি, তা যেন শুধু আল্লাহকে ও তাঁর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য পাওয়ার উদ্দেশ্যই যেন মনের মধ্যে নিহিত থাকে। কোন লোক দেখানো বা লজ্জায় বা কারো ভয়ে বা অন্য কোন উদ্দেশ্য হাছিলের জন্য যেন না হয়ে থাকে।

তাহলে তা কখনই আল্লাহ কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং, ব্যাপারটা এখানে, সুস্পষ্ট যে, নিয়ত সম্পূর্ণ একটা মানসিক ব্যাপার। এরসাথে মুখে বা মনে নির্দিষ্ট কোন ভাষায় বা নির্দিষ্ট কোন বাক্য বা শব্দ বা অন্য কিছু উচ্চারণের আদৌ কোন সম্পর্ক নেই। ৩। উক্ত নিয়ত যেন ঐ কাজের শুরু থেকে নিয়ে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত বজায় থাকে।

অর্থাৎ এমন যেন না হয় যে ১ম অবস্থায় কারও নিয়ত ঠিকই ছিল, কিন্তু কাজের মাঝে বা তা শেষ হবার পূর্বেই সে তার ঐ কাজ সম্পর্কে ভুলে গেল বা উদাসীন হয়ে পড়ল, অথবা তার ইচ্ছা বা নিয়ত পাল্টে গেল। তাহলে এক্ষেত্রে তার নিয়ত অশুদ্ধ বা বাতিল বলেই গণ্য হবে। নামাযের ওয়াজীব কাজ সমূহঃ ১। নিয়ত করা, ২। কিয়াম করা বা দাঁড়ানো।

৩। তাকবীরাতুল ইহত্দাম বলা (১ম তাকবীর অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে নামায শুরু করা) ৪। রুকু করা, ৫। সিজদা করা, ৬। কেরাত বা সুরা পড়া, ৭।

যিকির পড়া,তাসবীহ্ পড়া, ৮। তাশাহুদ, ৯। সালাম, ১০। তারতীব বা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। ১১।

মোয়ালাত অর্থাৎ,বিরতীহীন ভাবে একের পরে এক ধারাবাহিক ভাবে কাজগুলো সম্পূর্ণ করা (তবে ধীরে সুস্থ্যে করতে হবে, হুড়োহুড়ি করা চলবে না)। উপরে বর্ণিত নামাযের ওয়াজীবের প্রকারভেদ- ইতিপূর্বে ঊ বর্ণিত নামাযের ওয়াজীবগুলোকে মোট দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ১। রোকন বা স্তম্ভস্বরূপ ওয়াজীব- যে ওয়াজীবগুলো নামাযী ব্যক্তি ইচ্ছাপূর্বক বা ভুলবসতঃ যদি সম্পন্ন না করে, বা সে গুলোর মধ্যে কিচু কমবেশী করে তাহলে তার নামাজ অশুদ্ধ হবে অর্থাৎ বাতিল হয়ে যাবে। এ ধরনের ওয়াজীবগুলোকে রোকন্ বলা হয়।

২। অ-রোকন অর্থাৎ রোকন নয় এমন ওয়াজীবঃ- যে সকল ওয়াজীব, নামাযী ব্যক্তি যদি ইচ্ছাপূর্বক তার মধ্যে কম বা বেশী করে তাহলে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু কেউ যদি ভুলবসত তার মধ্যে কিছু কম বা বেশী করে থাকে। তাহলে তাতে তার নামাজ বাতিল হবে না। নামাজের রোকন বা স্তম্ভস্বরূপ ওয়াজীব সমূহঃ ১।

নিয়ত করা, ২। তাকবীরাতুল ইহরাম (নামাজের ১ম তাকবীর) ৩। কি্বয়াম বা দন্ডায়মান থাকা (তাকবীরাতুল ইহর্াম বলার সময় এবং রুকুতে যাবার পূর্বে দন্ডায়মান থাকা) ৪। রুকু করা, ৫। দুটি সিজদা করা, নামাজের ওয়াজীব গুলো সম্পর্কে আরও কিছুঃ ১- নিয়ত এ- সম্পর্কে ইতিপূর্বে বর্ণনা দেয়া হয়েছে বলে এখানে তা আর পুনরায় বর্ণনা করা হল না।

২- তাকবীরাতুল ইহরাম তাকবীরাতুল ইহরাম শুদ্ধ হবার শর্তাবলীঃ ১। আল্লাহ্ এবং আকবার এ দ'ুটো শব্দ উচ্চারণের মাঝে যেন খুব বেশী সময় ধরে চুপ থাকা না হয়। ২। আল্লাহু-আকবারকে হুবহু ঠিক এভাবেই অর্থাৎ আরবীতে উচ্চারণ করতে হবে এর অনুবাদ উচ্চারণ করা যাবে না। ৩।

ইহতিয়াতে ওয়াজীব হচ্ছে এই তাকবীরকে সম্পূর্ণ একক অর্থাৎ আলাদা ভাবে উচ্চারণ করতে হবে। এর পূর্বে উচ্চারিত কিছুর সাথে মিলিয়ে পড়া চলবে না। ৪। উক্ত তাকবীর উচ্চারণের সময় দেহ যেন সম্পূর্ণ রূপে স্থির থাকে। ৩- কিয়াম বা দাঁড়ানো কিয়াম দু'প্রকারঃ ১।

রোকনঃ (ক) তাকবিরাতুল ইহরামী উচ্চারণ কালে দাঁড়ানো (খ) রুকুর পূর্বে স্থির ভাবে দাঁড়ানো। ২। অরোকনঃ (ক) সুরা ফাতিহা এবং অন্য সুরা পাঠের সময় দাঁড়ানো। (খ) রুকুর পরে উঠে দাঁড়ানো। ৪- রুকু ১।

রুকুতে এমন ভাবে ঝুঁকে পড়তে হবে যাতে হাত দুটো হাঁটু স্পর্শ করতে পারে। তবে অতটুকু ঝোকার পরও যদি হাত হাঁটুর উপর না রাখে তাতে অসুবিধা নেই। ২। যে বসে নামায পড়ছে, তাকে রুকুতে এমন ভাবে ঝুঁকে পড়তে হবে যে তার মুখমন্ডল এবং হাঁটুদ্বয় পরস্পর মুখোমুখী হয়। তবে উত্তম হচ্ছে এমনভাবে ঝোঁকা, যাতে করে মুখমন্ডল ও সিজদার স্থান পরস্পর মুখোমুখী হয়।

৩। রুকুতে যে কোন তাসবীহ পড়াই জায়েজ। তবে তার পরিমাণ যেন কমপক্ষে তিনবার সুবহানাল্লাহ্ অথবা একবার সুবহানা রবি্বয়াল আযিম ওয়াবিহামদিহ্ পড়ার সময়ের চেয়ে কম না হয়। ৪। রুকুর ওয়াজীব যিকির বা তাসবীহ পড়ার পরিমাণ সময়ে দেহ সম্পূর্ণ স্থির থাকা ওয়াজীব।

তবে "ইহতিয়াতে-ওয়াজীব" হচ্ছে এর অতিরিক্ত অর্থাৎ মুস্তাহাব যিকির পড়ার সময়েও দেহকে সম্পূর্ণ স্থির রাখা। ৫। কেউ যদি রুকুর জন্য ঠিকমতে অবনত হবার পূর্বে অথবা সম্পূর্ণ স্থিল হবার পূর্বেই অর্থাৎ দেহের অস্থিরাবস্থাতেই রুকুর যিকির উচ্চারণ করে তাহলে তাঁর নামায বাতিল হয়ে যাবে। সিজদা ১। সিজদার সময় কপাল, দু'হাতের তালু দু'হাঁটু এবং দু'পায়ের বুড়ো আংগুল দু'টোকে মাটির উপর রাখা ওয়াজীব।

২। সিজদার যিকির উচ্চারণের সময় উপরে বর্ণিত দেহের যে অংশগুলো মাটিতে রাখা ওয়াজীব সেগুলোর কোন একটি অংশ যদি ইচ্চাপূর্বক মাটি থেকে উপরে বা শূন্যে উঠায় তাহলে তাঁর নামায বাতিল হয়ে যাবে। তবে যে মুহুর্তে সিজদার যিকির সে উচ্চারণ করছেনা, তখন উপরে বর্ণিত দেহের যে ৭টি অংশ মাটির উপর রাখা ওয়াজীব, সেগুলোর মধ্যে শুধু কপাল ছাড়া বাকী যে কোন অংশ যদি একবার মাটি থেকে উপরে তুলে আবার তা মাটিতে রাখে, তাতে তার নামাযের কোন ক্ষতি হবে না। ৩। সিজদায় যে কোন যিকির বা তাস্বীহ্ পড়া যাবে তবে তার পরিমাণ যেন অবশ্যই তিনবার "সুবহানাল্লাহ্" বা একবার "সুবহানা রবি্বয়াল আলা ওয়া বিহামদিহ" পড়ার সময়ের পরিমাণের চেয়ে কম না হয়্ ৪।

১ম সিজদা শেষ করার পর উঠে সোজা হয়ে সবতে হবে। অতঃপর দেহ সম্পূর্ণরূপে স্থির হবার পর ২য় সিজদায় যেতে হবে। ৫। যে সব বস্তুর উপর সিজদা করা ঠিক হবে তা এবং কপালের মাঝে ৩য় কোন বস্তু যেন রাখার সৃষ্টি না করে। যেমন সিজদার মোহর যদি এত ময়লা হয় যে কপাল ও মোহরের মাঝে ঐ ময়লা বাধার সৃষ্টি করে, তাহলে নামায বাতিল হয়ে যাবে।

তবে শুধুমাত্র মোহরের রং যদি পরিবর্তন হয়, তাতে অসুবিদা নেই। যে সব বস্তুর উপর সিজদা করা যাবেঃ ১। মাটি এবং যেসব জিনিষ মাটিতে উৎপন্ন হয় কিন্তু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় না যেমন, কাঠ, গাছের পাতা ইত্যাদি। ২। মাটিতে উৎপন্ন উদ্ভিদ, যা জীবজন্তুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় যেমন, ঘাস, খড়, ইত্যাদি।

৩। যেসব ফুল খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। ৪। খড়িমাটি। ৫।

চুনাপাথর, ৬। চক, ৭। পোড়া খড়িমাটি, ৮। ইট, ৯। মাটির পাত্র, ১০।

কাদা বা নরম মাটি, যার উপর সিজদা করলে কপাল একটু ডুবে গিয়ে অতঃপর স্থির থাকে তাতেও সিজদা হবে। ১১। কাগজ, তা যদি এমন কিছু দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে, যার উপর সিজদা করা শুদ্ধ হবে। ইতিপূর্বে বা বর্ণিত হয়েছে, যেমন, খড়, বাঁশ, কাঠ, তুলা ইত্যাদি। তাহলে তার উপর সিজদা শুদ্ধ হবে।

যেসব বস্তুর উপর সিজদা শুদ্ধ হবে নাঃ ১। খাদ্যবস্তু, ২। বস্ত্র বা পরিধান করার জিনিষ, ৩। খনিজ পদার্থ (সোনা, রূপা, লোহা, ইত্যাদি) ৪। যেসব উদ্ভিদ থেকে খাবার ঔষধ তৈরী হয়, ৫।

যে সব শাক, লতা, পাতা এবং এলাকায় ব্যবহৃত না হলেও অন্য এলাকায় যদি খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় তাহলে তার উপরও সিজদা দেয়া ঠিক হবে না। ৬। কাঁচা ফল (যদি ও তা এখনও খাবার অযোগ্য) ক্স সিজদা দেয়া যে সব বস্তুর উপর সর্বোত্তম তার সর্বাগ্রে হল শহীদ শিরমনি হযরত ইমাম হোসেন (আঃ) এর শাহাদাতস্থলের (কারবালার) মাটি, অতঃপর সাধারণ মাটি, অতঃপর পাথর, অতঃপর লতা-পাতা। ৬ ও ৭ কি্বরাত ও যিকির ১ম ও ২য় রাকাতে ঃ ১। দৈনন্দিন ওয়াজীব নামাযের ১ম ও ২য় রাকাতে প্রথমে সুরা ফাতিহা এবং তারপর যে কোন একটি সুরা সম্পূর্ণরূপে (আংশিক হলে চলবেনা) পড়তে হবে।

২। কিন্তু, মুস্তাহাব নামাযে শুধু সুরা ফাতিহা পড়াই শর্ত এবং ওয়াজীব। এরপর অন্য কোন সুরা পড়া ওয়াজীব নয়। ৩। পুরুষদের জন্য ফজর, মাগরিব ও এশার নামাযে উচ্চস্বরে কিরাত পড়া ওয়াজীব।

পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই যোহর ও আছরের নামায আস্তে (নিম্নঃস্বরে) পড়া ওয়াজীব। ৪। যেসব স্থানে উচ্চঃস্বরে এবং যে সব স্থানে নিচুস্বরে নামায পড়া ওয়াজীব, কেউ যদি তার বিপরীত কাজ ইচ্ছাপূর্বক করে থাকে (উচ্চঃস্বরের স্থানে নিচুস্বরে বা নীচুস্বরের স্থানে উচ্চঃস্বরে পড়ে) তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। তবে কেউ যদি ভুলবসতঃ বা মাস্লা না জানার কারণে এমনটি করে থাকে তাহলে তার নামায বাতিল হবে না। ৩য় ও ৪র্থ রাকাতে ঃ ১।

৩য় ও ৪র্থ রাকাতে শুধু সুরা ফাতিহা অথবা তিনবার তাসবিহ (সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহী ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার) অথবা একবার উক্ত তাসবিহ পড়লেও চলবে। একরাকাতে সুরা ফাতিহা ও অন্য রাকাতে উক্ত তাসবিহ বা দু'রাকাতেই সুরা ফাতিহা বা দু'রাকাতেই তাসবিহ পড়া যাবে। তবে দু'রাকাতেই উক্ত তাসবিহ পড়াই উত্তম। ২। সময়ের সংকীর্ণতার কারণে উক্ত তাসবীহ্ একবার পড়লেও চলবে।

৩। পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য ৩য় ও ৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতিহা বা উক্ত তাসবীহ্ নিচুস্বরে (ফিসফিস করে) পড়া ওয়াজীব। ৭-তাশাহুদ সকল ওয়াজীব নামাযের ২য় রাকাতে এবং মাগরিবের নামাযের ৩য় রাকাতে এবং যোহর, আছর ও এশার নামাযের ৪র্থ রাকাতে ২য় সিজদা শেষ করে উঠার পর স্থির হয়ে বসতে হবে। অতঃপর দেহ স্থির অবস্থায় তাশাহুদ পড়তে হবে। অর্থাৎ- আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রসুলুহ্।

আল্লাহুম্মা ছলি্ল আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মদ্। ৮- সালাম তাশাহুদ শেষ হবার পর দেহকে সম্পূর্ণ স্থির অবস্থায় রেখে 'আছ্ছালামু আলাইকা আইয়ু্যহান নাবিউ ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্ বলা মুস্তাহাব। এরপর "আছ্ছালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিছ্ ছলিহিন", অথবা, "আছছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারকাতুহ্" বলা ওয়াজীব। ১০- তারতীব বা ধারাবাহিকতা কেউ যদি ইচ্ছাপূর্বক নামাযের ধারাবাহিকতা নষ্ট করে তাহলে তার নামায নষ্ট বা বাতিল হয়ে যাবে। যেমন- রুকু করার পূর্বেই যদি সিজদা করে অথবা, সুরা ফাতিহার পূর্বেই অন্য কোন সুরা যদি পড়ে ফেলে ইত্যাদি।

১১- মুয়ালাত অর্থাৎ নামাযী ব্যক্তিকে একের পর এক নামাযের অংশগুলো আদায় করতে হবে স্বাভাবিকভাবে। যেমন- রুকুর পর সিজদা ইত্যাদি। এবং এসবের মাঝে এত বেশী বিরতি দেয়া চলবে না যে, যা দেখলে মনে হয় সে যেন নামায পড়ছেনা। এমন হলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে (তবে খুব তাড়াহুড়োও যেন না করা হয়) যদি তা ভুলবসতও হয়ে থাকে। নামাযের মুস্তাহাব অংশ ১।

সকল ওয়াজীব ও মুস্তাহাব নামাযেই ২য় রাকাতে রুকুতে যাবার পূর্বেই কুনুত অর্থাৎ হাত তুলে মুনাজাতের ভংগিতে দোয়া করা মুস্তাহাব। ২। সকল নামাযের পরই কিছুক্ষণ বসে তাকি্ববাতে নামায" অর্থাৎ, নামায শেষে বিভিন্ন মুস্তাহাব দোয়া, যিকির ও আমল করা মুস্তাহাব। এরমেধ্য সর্বোত্তম মুস্তাহাব হল "তাসবীহাতে-যাহ্রা" বা হযরত যাহ্রার (আঃসাঃ) তাস্বীহ পাঠ করা (আল্লাহু আকবার ৩৪ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার ও আল্হামদুলি্লাহ্ ৩৩ বার)। ৩।

যখনই হযরত রসুল (সাঃ আৎ) এর নাম বা উপাধি উচ্চারিত হবে, সাথে সাথেই দরুদ পাঠ করতে হবে। নামায ভংগ বা নষ্টকারী কারণ সমূহঃ ১। যদি নামাযের মধ্যে নামাযের কোন একটি শর্ত নষ্ট হয়ে যায়, যেমন নামাযের মধ্যেই যদি নামাযী টের পায় যে নামাযের স্থানটি অবৈধ, তাহলে নামায তৎক্ষনাত বাতিল হয়ে যাবে। ২। নামাযে রত অবস্থায় যদি নামাযী ব্যক্তির দ্বারা ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে বা বাধ্য হবার ফলে ওযু বা গোসল নষ্টকারী কোন কারণ ঘটে, (যেমন- প্রশ্রাব, পায়খানা ইত্যাদি) তাহলে তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে।

৩। যদি কেউ হাত বেঁধে (সুনি্নদের মত) নামায পড়ে। ৪। যদি কেউ সুরা ফাতিহা পাঠ করার পর "আমিন" বলে। ৫।

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুলবসতঃ কিবলার দিকে পিঠ দিয়ে (নামায পড়ে) অথবা কিবলার ডান দিকে বা নাম দিকে ঘুরে দাঁড়ায় অথবা এমনভাবে দাঁড়ায় যে, সে কিবলার দিকে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছে বলে মনে হয় না, তাহলে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। ৬। যদি কেউ ইচ্ছাপূর্বক নামাযের মধ্যে কোন একটি শব্দ (যা নামাযের সাথে আদৌ সংশ্লিষ্ট নয়) উচ্চারণ করে এবং ঐ শব্দ দ্বারা কোন অর্থ প্রকাশের ইচ্ছা করে এবং ঐ শব্দ যদি আসলেই অর্থ সম্পন্ন নাও হয়, আর ঐ শব্দ যদি ১টি অক্ষরও হয়, তথাপি তার নামায বাতিল হয়ে যাবে। এমনকি যদি নামাযরত অবস্থায় ঐ নামাযী ব্যক্তির উচ্চারিত শব্দ দুই বা ততোধিক অক্ষরের হয়ে থাকে এবং তারদ্বারা যদি সে কোন অর্থ প্রকাশের ইচ্ছা না করে থাকে। তথাপি ইহতিয়াতে-ওয়াজীব হচ্ছে।

৭। ইচ্ছাপূর্বক ও শব্দ করে হাসা। তবে ভুলবশতঃ যদি কেউ নামাযে শব্দ করে হেসে ফেলে অথবা মুচকি হাসি দেয় তাহলে তার নামায বাতিল হবে না। ৮। পার্থিব কাজের জন্য ইচ্ছা করে সশব্দে কাঁদা।

৯। যে কাজে নামাযের অবস্থা নষ্ট হয়ে যায় সেই কাজ করলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। যেমন- হাত তালি দেয়, লাফ দেয়া ইত্যাদি তা কম হোক বা বেশী হোক, ইচ্ছে করে হোক বা ভুলবশতঃ হোক- এর ফলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। তবে যে কাজে নামাযের মর্যাদা নষ্ট হয় না যেমন হাত দিয়ে ইশারা করা, এতে কোন অসুবিধা নেই। ১০।

নামাযে পানাহার করা- যদি নামাযের মধ্যে এমনভাবে পানাহার করে যাতে করে বলা না যায় যে, সে নামায পড়ছে। ১১। দু'রাকাত বা তিন রাকত বিশিষ্ট নামাযের রাকাত সংক্রান্ত সন্দেহ হলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। আর চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযের প্রথম দু'রাকাতে সন্দেহ হলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। ১২।

ইচ্ছা করে বা ভুলে গিয়ে নামাযের রুকন কম-বেশী করা অথবা যে কাজ নামাযের রুকন নয় তা ইচ্ছা করে কম- বেশী করা। প্র: নামাযে কাশি দেয়া, ঢেঁকুর তোলা এবং আহ্ করলে অসুবিধা হবে কি? উ অসুবিধা নেই। প্র: উহ্ ও আহ্ ইত্যাদি যা দু'বর্ণবিশিষ্ট শব্দ তা যদি ইচ্ছাপূর্বক নামাযে উচ্চারণ করা হয়, তাহলে এর ফলে নামায বাতিল হবে কি? উ: হ্যাঁ। যে সব কথা বা কাজ কখনও কখনও নামাযে ঘটে থাকে তা ঃ ১। যদি নামাযে কোন কথা বলে : ক) তা যদি যিকিরের উদ্দেশ্যে হয় যেমন যিকিরের উদ্দেশ্যে যদি কেউ ( ) বলে এবং তা বলার সময় জোরে শব্দ করে এবং অন্য কোন ব্যক্তিকে কিছু বোঝাতে চায় তাহলে এত কোন আপত্তি নেই।

খ) অন্য কোন ব্যক্তিকে কিছু বোঝানোর উদ্দেশ্যে যদি কথা বা শব্দ বলা হয় যদিও এর মাঝে যিকিরের উদ্দেশ্য থাকে তারপরও নামায বাতিল হবে। ২। কোরআন পাঠ করা (সিজদাহ বিশিষ্ট চারটি সূরা ছাড়া) এবং প্রার্থনা করায় (এমনকি তা বাংলা বা অন্য ভাষায় হলেও) কোন অসুবিধা নেই। ৩। সালাম : ক) সালাম দেয়া : নামাযের মধ্যে কাউকে সালাম দেয়া যাবে না।

খ) সালামের উত্তর দেয়া : ঠাট্টাচ্ছলে বা ব্যঙ্গ করার জন্য যদি কেউ নামাযীকে নামাযরত অবস্থায় সালাম দেয় তাহলে সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব নয়। যদি নামাযীকে এমনভাবে ভুল সালাম দেয়া হয় যে নামাযীকে সালাম দেয়া হয়েছে এমনটি বলা যায় না, তাহলে নামাযীর ঐ সালামের জবাব দেয় ওয়াজিব নয়। উল্লেখ্য নামাযে নামাযী যদি সালামের জবাব না দেয় তাহলে তার পাপ হবে তবে তার নামায সহীহ থাকবে। ৪। হাসি : ক) ইচ্ছপূর্বক এবং সশব্দ হাসি ঃ নামায বাতিল হবে।

খ) ভুলবশতঃ হাসি : নামায বাতিল হবে না। ৫। ক্রন্দন : ক) পার্থিব কাজের জন্য ইচ্ছাপূর্বক ও সশব্দ কাঁদা নামাযের জন্য অসুবিধাজনক। খ) পার্থিব কাজের জন্য নীরব ক্রন্দন : এতে নামাযের কোন অসুবিদা হবে না। গ) আল্লাহর ভয়ে ও পরকালের জন্য নিঃশব্দ বা সশব্দ ক্রন্দনে কোন অসুবিধা নেই বরং তা সবের্াত্তম আমল বা কাজ।

ওয়াজিব নামায অজরুরী অবস্থায় ভঙ্গ করা হারাম। যে সব ক্ষেত্রে ওয়াজিব নামায ভঙ্গ করা বৈধ : ১। সম্পদ রক্ষা করা এবং আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি এড়ানোর জন্য : নিজের জীবন বা যার জীবন রক্ষা করা ওয়াজিব তার জীবন বা যে সম্পদ সংরক্ষণ করা ওয়াজিব তা রক্ষা করা যদি নামায ভঙ্গ করা ব্যতীত সম্ভব না হয় তাহলে নামায অবশ্যই ভঙ্গ করতে হবে। আর যে সম্পদের কোন গুরুত্ব নেই সেটা রক্ষার জন্য নামায ভঙ্গ করা মাকরুহ। ২।

পাওনাদার নামাযীর নিকট তার পাওনা দাবি করলে : যদি ঋণী ব্যক্তি এমন সময় নামাযে মশগুল হয় যখন নামাযের যথেষ্ট সময় রয়েছে এমতাবস্থায় যদি সে নামযেই পাওনাদারের পাওনা পরিশোধ করতে সক্ষম হয় তাহলে নামায ভঙ্গ না করে নামাযরত অবস্থায়ই পাওনা পরিশোধ করবে আর যদি নামায ভঙ্গ করা ব্যতীত সে পাওনা পরিশোধ করতে সক্ষম না হয় তাহলে তাকে অবশ্যই নামায ভঙ্গ করে পাওনাদারের পাওনা পরিশোধ করতে হবে এবং এরপর সে নামায পড়বে। ৩। নামাযের মধ্যে যদি সে বুঝতে পারে যে মসজিদ অপবিত্র এবং নামাযের সময় যদি সংকীর্ণ থাকে তাহলে সে অবশ্যই নামাযটি যথাযথভাবে শেষ করবে। আর যদি নামাযের ব্যাপক সময় বিদ্যমান থাকে এবং মসজিদ পবিত্র করতে গিয়ে নামায ভঙ্গ না হয় তাহলে নামাযের মধ্যেই তাকে মসজিদ পবিত্র করতে হবে এবং পরে নামাযের অবশিষ্টাংশ আদায় করতে হবে। আর মসজিদ পবিত্র করার কাজ যদি নামাযকে বাতিল করে দেয় তাহলে নামায ভঙ্গ করতে হবে এবং মসজিদ পবিত্র করতে হবে।

তারপর তাকে নামায পড়তে হবে। ৪। রুকু পরিমান অবনত হওয়ার পূর্বেই যদি নামাযীর স্মরণ হয় যে, সে আযান বা ইকামাত বলতে ভুলে গিয়েছে তাহলে নামাযের ওয়াক্ত যদি ব্যাপক হয় এক্ষেত্রে আযান ও ইকামাত বলার জন্য নামায ভঙ্গ করা মুস্তাহাব। (নামায ভঙ্গ করা যার অবশ্য কর্তব্য সে যদি নামায ভঙ্গ না করে তাহলে এ কারণে তার পাপ হবে তবে তার নামায সহীহ থাকবে যদিও এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক মুস্তাহাব হচ্ছে পুনরায় ঐ নামাযটি পড়া। নামাযের সন্দেহ সমূহ নামাযের মধ্যে যে সব সন্দেহ দেখা দেয় তা তিন প্রকার।

যথা: ১। নামায বাতিলকারী সন্দেহসমূহ (৮ প্রকার)। ২। গুরুত্বহীন সন্দেহসমূহ (৬ প্রকার)। ৩।

সহীহ সন্দেহসমূহ (৯ প্রকার)। তাই নামাযে যে সব সন্দেহ দেখা দেয় তা মূলতঃ ২৩ প্রকার। ১। নামায বাতিলকারী সন্দেহসমূহ : ক) ২ রাকাত বিশিষ্ট নামাযের রাকাতের সংখ্যা সংক্রান্ত সন্দেহ। খ) ৩ রাকাত বিশিষ্ট নামাযের রাকাতের সংখ্যা সংক্রান্ত সন্দেহ।

গ) ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাযে যদি কোন নামাযীর সন্দেহ হয় যে, সে এক রাকাত পড়েছে নাকি একাধিক রাকাত পড়েছে। ঘ) ৪ রাকাত বিশিষ্ট নামাযে ২য় রাকাতের ২য় সিজদাহ শেষ হওয়ার পূর্বে যদি নামাযীর সন্দেহ করা হয় যে সে দু'রাকাত পড়েছে নাকি ততোধিক রাকাত পড়েছে। ঙ) ২ ও ৫ রাকাতের মধ্যে বা ২ ও ৫ অপেক্ষা অধিক সংখ্যার মধ্যে সন্দেহ। চ) ৩ ও ৬ রাকাতের মধ্যে বা ৩ ও ৬ অপেক্ষা অধিক সংখ্যার মধ্যে সন্দেহ। ছ) ঐ নামাযের রাকাতে সন্দেহ যে নামাযের ক্ষেত্রে নামাযীর জানা নেই যে, সে কত রাকাত পড়েছে।

জ) ৪ ও ৬ রাকাতের মধ্যে সন্দেহ অথবা ৪ ও ৬ অপেক্ষা অধিক সংখ্যার মধ্যে সন্দেহ, তা ২য় সিজদাহর পূর্বেই হোক বা পরেই হোক, তবে ২য় সিজদাহর পর ৪ ও ৬ অথবা ৪ ও ৬-এর চেয়ে বেশী কোন সংখ্যার মধ্যে যদি সন্দেহ হয় তাহলে সতর্কতামূলক মুস্তাহাব হচ্ছে ৪ রাকাত হয়েছে ধরে নিয়ে নামায শেষ করার পর দু'টি সাহু সিজদাহ্ আদায় করা এবং পুনরায় ঐ নামাযটি আদায় করা। নামায বাতিলকারী সন্দেহ সমূহের ছক : ১। ২ রাকাত বিশিষ্ট নামাযে সন্দেহ রাকাত সংখ্যায় ২। ৩ রাকাত বিশিষ্ট নামাযে সন্দেহ রাকাত সংখ্যায় ৩। ৪ রাকাত বিশিষ্ট " " এক বা একাদিক (রাকাত) ৪।

" " " " " দুই বা ততোধিক রাকাত দুই রাকাতে দ্বিতীয় সিজদাহর পূর্বে) ৫। " " " " " ২ ও ৫ অথবা ২ ও ৫ অপেক্ষা অধিক রাকাতে ৬। " " " " " ৩ ও ৬ অথবা ৩ ও ৬ অপেক্ষা অধিক রাকাতে ৭। " " " " " ৪ ও ৬ অথবা ৪ ও ৬ অপেক্ষা অধিক রাকাতে ৮। যে সব নামাযের ব্যাপারে মুসলি্লর জানা নেই যে কত রাকাত পড়েছে রাকাত সংখ্যায় সন্দেহ উপরোক্ত নামায বাতিলকারী সন্দেহসমূহের যে কোন একটি যদি দেখা দেয় তাহলে তৎক্ষণাৎ নামায ভাংগা যাবেনা, বরং সে যদি একটু চিন্তা করার পর দেখতে পায় যে, তার সন্দেহ বলবৎ রয়েছে তাহলে ঐ নামায ভেংগে ফেলায় কোন আপত্তি নেই।

২। গুরুত্বহীন সন্দেহ সমূহ : ক) অবস্থান অতিক্রম করার পর সন্দেহ : এমন কোন বিষয় সন্দেহ করা যা করার ক্ষেত্র আর বর্তমান নেই। যেমন : রুকুতে সন্দেহ করা যে সূরা ফাতিহা পড়া হয়েছে কি না (যদি কোন নামাযী যে কাজ ঐ কাজের পর করতে হয় তাতে মশগুল না হয় তাহলে যে কাজ করার ব্যাপারে তার সন্দেহ হচ্ছে তা অবশ্যই সম্পন্ন করবে। আর সে যদি যে কাজ ঐ কাজের পর করা উচিত সে কাজটিতে ব্যস্ত হয় তাহলে সে এ ধরনের সন্দেহে আদৌ গুরুত্ব দিবে না। যেমন রুকু বা সিজদাহ করার পর যদি নামাযীর সন্দেহ হয় যে, রুকু বা সিজদাহর ওয়াজিব কাজসমূহ যেমন- যিকির এবং দেহ স্থির রাখা ঠিকমত করেছে কিনা? তাহলে সে এধরনের সন্দেহে মোটেই গুরুত্ব দিবে না।

আর দন্ডায়মান হওয়া শুরু করার অবস্থায় যদি কোন নামাযীর সন্দেহ হয় যে, সে সিজদাহ করেছে কিনা তাহলে তাকে অবশ্যই সিজদাহ আদায় করতে হবে। খ) নামাযের সালাম দেয়ার পর সন্দেহ : নামাযের সালাম দেয়ার পর যদি নামাযীর সন্দেহ হয় যে, তার নামায সঠিক হয়েছে কিনা বা সন্দেহ হয় যে, সে রুকু করেছে কিনা তাহলে তার সন্দেহকে মোটেও গুরুত্ব দেয়া যাবেনা। গ) নামাযের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর সন্দেহ : নামাযের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পর যদি কোন ব্যক্তির সন্দেহ হয় যে, সে নামায পড়েছে কিনা অথবা ধারণা করে যে, নামায সে পড়েছে তা শুদ্ধ ছিল কিনা, তাহলে ঐ নামায আবার পড়ার প্রয়োজন নে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.