আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অযথা সংলাপ

একদিন জন্মের চিৎকারে পৃথিবীতে এসেছিলাম। আবার একদিন কিছু চিৎকারের মাঝ দিয়েই চলে যাব। জীবন অর্থ যদি প্রবাহমানতা হয়, তবে আমাদের এখানে কোন জীবন নেই। আমরা মৃত। কিন্তু জলজ্যান্ত মানুষগুলোকে মৃত বলিই বা কিভাবে! এমনকি আমি নিজেও তো জীবীতই।

নাকি নিজের উপরও এখন আর বিশ্বাস রাখতে পারছি না! আমার বন্ধুরা যখন বলে, গতকাল আমি ক্লাস করেছিলাম। আমি বিশ্বাস করি। কেউ যদি বলে, আমি প্রেম করিনি। আমি বিশ্বাস করি। মানুষকে বিশ্বাস করতে পারলে, নিজেকেও করা উচিত।

কিন্তু সেই বিশ্বাসের মূল্য কোথায়, যেখানে কোন দৃঢ়তা নেই। যেখানে কোন নিশ্চয়তা নেই! নরসিংদী থেকে টঙ্গী হয়ে মহাখালী আসার পথের রাস্তাটুকু পাড়ি দেয়ার সময় মনে হয়, যদি বেঁচে থাকতে না হতো! বাসের উচ্চ লাফগুলো মোটেই সুবিধের নয়। আমার ভাবনাতে অবশ্য তেমন কিছু এসে যায় না। রাস্তা যেই সেই থাকবে। গাড়ি গুলোও আগের মতোই চলবে।

ড্রাইভারকে অতিরিক্ত কথা বলতে দেখে যদি প্রতিবাদ জানাই, তবে তিনি (!) বাঁকা হাসি দিয়ে এমন একটি বাক্য বুঝাবেন যা সবাই শুনতে না পেলেও বুঝে নিতে পারে। মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখে বহুবার আমি ড্রাইভারকে নম্র, শক্ত ভাষায় এর খারাপ দিকটি বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু বৃথাই এই চেষ্টা। আমার নিষ্ফল শব্দগুলো আমার দিকেই ছুটে এসেছে বার বার। বেশ কিছুদিন আগে পত্রিকায় পড়ছিলাম, ড্রাইভারদের লাইসেন্স দেয়ার জন্য নাকি কঠিন পরীক্ষা নেয়াটা অপরাধ হবে।

আমাদেরই কোন এক মন্ত্রী এমন কথা বলেছিলেন। এর কারণ, তিনি মনে করেন, এখানে অধিকাংশ ড্রাইভারই মূর্খ। তাদেরকে কঠিন শর্তে লাইসেন্স দেয়ার কথা বললে, তারা গাড়িই চালাবে না। আমাদের দেশে ড্রাইভারের সংখ্যা কমে যাবে। আহা রে! যুক্তি বহর দেখে লজ্জায় মরে যাই।

এমন যুক্তির কবলে পড়ে আমাদের যদি অযোগ্য ড্রাইভারদের উপর ভরসা করেই গাড়িতে উঠতে হয়, তবে আমরা মৃতই। আমার সঙ্গে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারবেন না। রাস্তা কতটুকু খারাপ, সেকথা বলতে চাই না। কেবল নিজেকে ধিক্কার দিতে চাই। আমরা আমাদের রাজনৈতিক অধিকারকে বিকিয়ে দিয়েছি একদল স্বার্থান্বেষী মানুষের কাছে।

যারা কখনোই দেশ নিয়ে চিন্তা করেনি। উদর পূর্তীর প্রতিযোগিতায় যারা সবার আগে। রাজনৈতিক মঞ্চটা যদি বদলাতে চাই, তবে আমাদের সাধারণ জনগণকেই বিহিত করতে হবে। জনগণের হাতে অনেক ক্ষমতা। সত্যিই যদি একথা সত্যি হয়ে থাকে, তবে একবার অন্তত দেখানো উচিত।

কিন্তু বৃথাই আমার এই চিৎকার। বৃথাই আমার এই আস্ফালন। একটি বৃহৎ আনন্দে হয়ত সেদিনই আমি আপ্লুত হতে পারি, যেদিন দেখবো আমার জনগণ তাদের নিয়তির ভার নিজেদের হাতে নিয়েছে। কিন্তু একথা এখন আমি বলছি কেন? যদি কেউ এগিয়ে আসে! আমার মতো অযথা চিন্তা করে যে সময় নষ্ট করে না। হয়ত বা তারই জন্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।