আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্তিত্বের অন্তরালে: ১ - ৪

আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে। অদ্ভুত এ আলো আধারীর পৃথিবীতে হাটতে হাটতে ক্লান্ত অনিমেষ। ধূসর বালির এ মরুর বুকে মনের অজান্তে তাকে ডেকে বেড়ায় একটা সমুদ্র সৈকত, কিছু প্রবাল আর একটা জল রঙ এর কাপড় পরা অদ্ভুত রকম ফ্যাকাশে চেহারার একটা মেয়ে। পথের সঙ্গী প্রানময়ী সারাদিন বকবক করে তার উষর মরুর জীবনে একটু বিনোদন দেয়। - এভাবে আমাদের আর কত পথ হাটতে হবে? - আর বেশি না।

- মানে আমরা চলে এসেছি? - হুম আমরা সাগরের খুব কছাকাছি এসে গেছি। - তাই? - হুম। - আমার কিন্তু যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না। - কেন? - আমার তো্মার কাছেই থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে প্রানময়ী। - তাই? - হুম।

তোমার মধ্যে যেন কেমন একটা প্রান প্রান ব্যাপার আছে। - আরে বাহ। - হুম। তুমি কথা বললে একটা প্রানের ছোয়া পাই। যেন আমার বুকের ভিতরে ছুয়ে যাচ্ছে একটা নরম হাত।

- তুমি আমার হাতটা একটু ধরবে? - না - কেন? - কেন জানি না। তবে আমার ভিতরে যেন কি একটা বাধা দেয় তোমাকে স্পর্শ করতে। - রাতে না আমার কুলে শুয়ে ঘুমালে? - হুম তাতে কি? আমি কি তোমায় স্পর্শ করেছিলাম? - না - তাইলে? - না এমনিতেই তোমাকে একটু ছুতে ইচ্ছে করছিলো সোনা বাবু তাই বললাম। - দুঃখিত প্রানময়ী। আমি যখনই তোমাকে ছুতে যাই তখনই যেন কেমন একটা বাধা আসে ভিতর থেকে।

একটা টোল পরা গজ দাঁতের হাসি ভেসে উঠে আমার মনের পর্দায়। আমি সে আবছা ছবিটা স্পর্শ করতে চাই কিন্তু পারিনা তা শুধু ঢেউ খেলতে থাকে নদীর জলে। - সে তোমাকে কিছু বলে? - উফ আমি কিছুই বুঝতে পারি না শুধু মাথা যন্ত্রনা করে। তুমি বড্ড বেশি কথা বলো। - আচ্ছা বাদ দাও।

- না কেন বাদ দিব? বলোতো সে কে? - আমি কিভাবে জানি? - না, তুমি জানো। পাশ কাটাচ্ছো কেন? তুমি যদি আমার প্রৃথিবীর জীবন দেখে থাকো তাইলে তো তুমি অবশ্যই জানো মেয়েটি কে। - হ্যা জানি। - তাহলে বলছো না কেন? - জেনে লাভ কি? - সব কিছুতে লাভ খুজে কাজ নাই। আমি জান্তে চাই আমাকে বলো।

- শুনলে তুমি কষ্ট পাবে। - তবুও আমি শুনতে চাই। - শুনতে পারবে যখন তুমি প্রবাল পাবে। - উফ প্রবাল! হ্যা আমি কখন পাব সেটা? - আর বেশি দেরি নেই। - তোমরা সবাই এমন রহস্য করছো কেন আমার সাথে? - কারন তুমি সব কিছু খুব আগে থেকে জানতে চাইছো তাই।

- আমার জানতে ইচ্ছে হয়। - আচ্ছা প্রৃথিবীতে থাকতে যে তুমি একই স্বপ্ন বারবার দেখতে সেটা কি কখনো জানতে চেয়েছিলে কেন তুমি এ স্বপ্ন বার বার দেখ? - কোন স্বপ্ন? - একটা মরুভূমি, একটা সমুদ্র সৈকত, কিছু প্রবাল, একটা জল রঙ এর কাপড় পরা অদ্ভুত রকম ফ্যাকাশে চেহারার একটা মেয়ে যে তোমাকে ডাকছে। এই বলে, “এসো আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি”। - কি জানি আমার মনে নেই। কিন্তু এখন আমার মাথার ভিতর শুধু এই মহেন্দ্রক্ষণটাই খেলা করে।

একটা মরুভূমি, একটা সমুদ্র সৈকত, কিছু প্রবাল আর একটা জল রঙ এর কাপড় পরা অদ্ভুত রকম ফ্যাকাশে চেহারার একটা মেয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে অতৃপ্ত আখি মেলে। - কিন্তু আমার মনে আছে। তুমি পৃথিবীতে তেমন পাত্তাই দাও নি ব্যাপারটা। - আচ্ছা আমাকে কে ডাকত? - কেন আমি। - তারমানে জল রঙের কাপড় পরা মেয়েটা তুমি? - হুম।

কেন তুমি চিনতে পারছো না? - না, আমি তো আবছা অবছা দেখতে পাই সে ছবিটা। কিন্তু এক স্বর্গীয় অনুভূতি কাজ করে ভিতরে। মনে হয় যেন মনের শত সহস্র বছরের কোনো অনুভূতি পূর্ণতা পাচ্ছে সে মহেন্দ্রক্ষণে। - হ্যা, সেটা আমার অনুভূতি তোমার মনে ও তা ভেসে উঠছে। - আচ্ছা, এত মানুষ থাকতে তুমি আমাকে কেন ডাকতে? - আরে মা আমি তো অনেক আগে থেকেই বলেছি যে আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি শত সহস্র বছর ধরে তাইলে আমি তোমাকে কেন ডাকবো না? - আচ্ছা, এত মানুষ থাকতে তুমি কেনো আমার জন্যই অপেক্ষা করছো? তুমি কি সব কথা সত্যি বলছো? - তোমার সাথে মিথ্যা বলে আমার কি লাভ ম্রৃন্ময়? - ম্ৃন্ময়, সে আবার কে? - কেন তুমি।

- আমি আবার মৃন্ময় হলাম কবে? - কেন তুমি এখানে আসার আগে আমি তো তোমাকে ম্রৃন্ময় বলেই ডাকতাম। - ধুর পচা নাম। কেমন যেন ললিপপ ললিপপ মনে হয়। - হা হা। তাইলে কোনটা ভালো লাগে তোমার? - এই যে সোনাবাবু।

- কিছুদিন আগে তো সেটা বলে ডাকার জন্যই তুমি আমার উপর কত রাগ করেছিলে বাপ রে বাপ। - রাগ করেছিলাম বুঝি? - হুম - আচ্ছা তখন ভালো লাগত না। এখন অনেক ভালো লাগে। - এখন ভালো লাগে কেনো? - কেমন যেন একটা আদুরে আদুরে ব্যাপার আছে তাই। - তখন কেন ভালো লাগত না? - আচ্ছা তুমি পুলিশের মত এত জেরা কর কেন? আমি কি তোমার আসামি? - ছিঃ আমি কি তাই বলেছি? (চলবে) আগের অংশ পড়ুন অস্তিত্বের অন্তরালে: ১ - ৩ অস্তিত্বের অন্তরালে: ১ - ৩ (বাকি অংশ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।