আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুমি আমার ছুয়ে যাওয়া অনুভূতি ছিলে

মইধ্যে রাইতে লুকাইয়া লুকাইয়া হাসতাম কিন্তু অহন আর হাসবারও পারি না, কিচ্চু হইলেই ঝারি মারে :( ওই কুটকুট কইরা হাসবি না! এমন অট্ট হাসি দেখে প্রকাশ্যে হাসতে মানা করে দিল মহুয়া। বিপজ্জনক হাসি!! বলেই মহুয়া নিজেই হাসতে শুরু করলো। দুজনের হাত ধরাধরি করে হাটা হতো খুবই কম। হাটতে গেলে মহুয়াকে পেছনে ফেলে এক কদম সব সময় হাটতো অপু। অভ্যাস হয়ে গেছে বললে ভুল হবে না।

অবশ্য এর জের ধরে কখনো ঝগড়াঝাটি হয়নি মহুয়া আর অপুর। মহুয়া এটাকে বেশ উপভোগ করতো। অপুর বোকামে কথাগুলো এমন ভাব নিয়ে শুনতো, মনে হতো মহুয়া খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে কথাগুলোর। ঠোটে কামড় আর মুচকি হাসি দিয়ে অপুর দিকে ফেলফেল করে হেলেধুলে তাকাতো। অপু কখনো দেখেনি মহুয়ার এই চাহনি।

অপু জিজ্ঞেস করলেই বলত কিচ্ছু না। আজও একসাথে। -২ সাদা ফ্রেমের গ্লাসটা বাম হাতে, হাটছে আর ক্ষনিকটা সময় পর পর নিজেই কি বকবক করছে! অনেকক্ষণ কোন উত্তর না পেয়ে বুঝতে পারলো পেছনে কেউ ছিল না। ভুলে গিয়েছিল পেছনে কেউ থাকার কথা ছিল না। অনেক ব্যস্ততা।

তবুও ক্লান্তি। আগের মতো করে ব্যস্ততার ফাকে কেউ রাগ করে না। একটি মুখ চোখের মণিতে ভেসে উঠে অজান্তেই। অচেনা কি যেন একটা জমছে বুকে, মনে হচ্ছে দিনে দিনে আকৃতি ধারন করছে। কোন কারনে ২/৩ দিন দেখা না হলে মহুয়ার মান ভাঙ্গানো অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে পড়তো, এখন সেই মহুয়ার সঙ্গে প্রতিদিন দেখা করতে চাই, কিন্তু আসে না।

ফোন তো করেই না, উত্তরও দেয় না। ও এখন অনেক দূর থেকে জলচোখে তাকিয়ে থাকে। রকিং চেয়ারে ভর দিয়ে জানালার থেকেও দূরে দৃষ্টি অপুর। অলস চাহনি আর ডান হাতে মাউসের লেফটবাটন। একে একে মহুয়ার বাছাই করা গানগুলো শুনছে।

মহুয়া খুব বেশি গান শুনতো। মনে পড়ে যায় রাত জাগিয়ে গান রিকোয়েস্ট করে শোনানোর কথা। খুবই বিরক্ত হতো অপু। কোন গান ভালো লাগছে বললেই হলো, পরের দিন এক গাদা সিডি ডিভিডি নিয়ে হাজির। কিন্তু এখন কেউ গান রিকোয়েস্ট করে না, নিজেই গান প্লে করে।

অন্ধকারসঙ্গ গানের কথাগুলো আগের থেকে বেশি টানে। দলিলহীন নবযাত্রীদের অংশীদার হিসেবে একরাত ঘুমের আবির্ভাবের প্রায় কাছাকাছি। গভীর অন্ধকার, কৃত্রিম আলোর সরবরাহ বন্ধ। শহুরে জীবনের কোলাহলকে জোরপূর্বক ছুটি দিল গভীর রাত্রি। অন্তহীন বৃষ্টির ঝড়ে পড়া সময়ের জন্য স্থগিত।

প্রবেশাধীকার উন্মুক্ত হওয়াতে বাতাসও ঢুকছে এলোপাতারিভাবে। আর সেই দক্ষিণা বাতাসে উড়তে উড়তে ক্লান্ত পর্দাগুলো। এদিকে সময়কে টেনে নিয়ে যাওয়া ঘড়ির পায়ের শব্দ কিছুটা কর্কষ। মাঝে মাঝে জানালার পর্দা সরে গিয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মেঘাচ্ছন্ন আকাশটাকে। আর একটু পরপর বিজলির বিকট উপস্থিতি।

প্রায় ঘুমদেহে কে যেন কোমল হাতে মাথা বুলিয়ে দিচ্ছে। অনেক ঠান্ডা ছিল আঙ্গুলগুলো। চাপা কান্নার শব্দ, তাও অস্পষ্ট। মনে হচ্ছে কেউ কিছু বলতে চায়। অপু (অস্পষ্ট)।

অচমকা ঘুম ভেঙ্গে যায়। চোখ খুলতেই জানালার অদূরে দৃষ্টি, বিকট শব্দে বিজলি চমকায়। মুখাকৃতি চেনা কেউ বিজলির রশ্মি হয়ে মুহুর্তের মধ্যে হারিয়ে যায়। শিন শিন শব্দ নিয়ে নামে অঝরে বৃষ্টি। তীব্র বর্ষণে অনেকটা সময় বারান্দায় দাড়িয়ে অপু।

ইলেকট্রিসির খামখেয়ালিতে সারা রুম তিমিরবন্দি। মৃদু আলোতে ড্রয়ারে বন্দিথাকা বাকশক্তিহীন ডায়েরীর পাতায়- তুমি আমার ছুয়ে যাওয়া অনুভূতি ছিলে!!!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.