অভিভক্ত ভারত থেকে ব্রিটিশ এবং ইংরেজ শাসনের অবসান হল
কাদের মাধ্যমে ।
নিগ্রিত সংখ্যালঘু মুসলিম জাতীর উপর চলল ব্রিটিশ দের খরগ । বহু আলেম ওলামা দের ধরে নিয়ে ব্রিটিশ ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদিরা
কামানের তোপের মুখে ফেলে বাতাসে মিশিয়ে দিত , এবং ধর্মান্তরিত করার জন্য মধ্যযুগিয় কায়দায় নির্যাতন চালাত ।
গান্ধি ডাক দিল অহিংস আন্দোলনের , কারন হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায়
তখন সমগ্র ভারত সাম্রাজ্য উত্তপ্ত । তার আহবানে অনেক নিগৃহীত
মুসলিম অন্তত যুলুমের অত্যাচারের বিচার চাইবার দিক মহতি খুজে
পাইল ।
মাওলানা ভাসানি সেই সব নিরীহ নির্যাতিত দের বাঁচানোর জন্য
গঠন করেন মুসলিম লীগ ফর ন্যাশান বা জাতীয় মুসলিম সমাজ
এতে , কমরেড মুজাফফর , কমরেড আব্দুল হক , মতিলাল , কানাই চাঁদ , মনিসিং , সুভাস চন্দ্র বসু , সিরাজ সিকদার সহ অনেক প্রথম সারির আলোচিত ব্যক্তি বর্গ জুট গঠন করে , ব্রিটিশ
দের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । ফকির আন্দোলন , টঙ্খ আন্দোলন ,
তেভাগা আন্দোলন , জমিদার দের বিরুদ্ধে বর্গা ও খাস জমি অধিগ্রহন আন্দোলন সহ সব মহলের কৃষাণ , শ্রমিক জেলে মজুর
সহ সর্বস্তরের মানুষ এ আন্দোলনে একাত্মতা ও সঙ্ঘতি ঘোষণা
করে ব্রিটিশ দের ভিত নড়িয়ে দেয় ।
নানা সাঁড়াশি আক্রমণে ব্রিটিশ শক্তি ধিরে ধিরে তাদের গুটিয়ে নেয় এবং ভারত অন্তর বর্তি সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে গা ঢাকা দেয় ।
বাংলাদেশের ২ মহারথি শেরেবাংলা একে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সহরাওয়ারদি এ অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য মন্ত্রী
এবং অন্যজন স্পিকার ছিলেন ।
ব্রিটিশ বিদায় নিলেও এদের ধূর্তামি তলে তলে ছলছিল কাস্মির
নিয়ে আবার যুদ্ধ বাধিয়ে দেয় , আবার মহান নেতাদের মাধ্যমে
তার ও আংশিক সমাধান হয় কিন্তু হিন্দু মুসলিম বৈষম্য দূর
হলনা ।
কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী পাকিস্থানের পক্ষ নিয়ে মুসলিম
অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৪ দফা আন্দোলনের ডাক দেয় , এবং সে আন্দোলনে সমস্ত মুসলিম এক্য ও ভারত অন্তর্বর্তী সরকারের
বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে স্বাধীনতার ডাক দেয় । ৪৭ সালে
জন্ম হয় ভারত বিভক্ত স্বাধীন পাকিস্থানের ।
মজলুম নেতা মাওলানা ভাসানি সহ অনেকেই পশ্চিম পাকিস্থানি
দের সাথে জুট বাধতে অনাগ্রহি হয় ।
মুসলিম লিগে ফাটল ধরে , পূর্ব বাংলা কমিনিশট নামে একটি শাখা তাদের নিজস্ব পায়ে দ্বারায় আরেকটি শাখা ভাসানির নেতৃত্বে আওমি মুসলিম লিগ গঠন করে , পশ্চিম পাকিস্তানিদের
আচরন গত দিক রাজনৈতিক , সামাজিক , অর্থনৈতিক সহ নানা
বৈষম্য চলতে থাকে ।
আগরতলা যরযন্ত্র মামলা হয় বাঙালি জাতীয় আওমি নেতাদের
উপর , সেখানে গোলটেবিল বৈঠকে এর বিরুদ্ধে আইযুব বিরুদ্ধি
সমালোচনা করেন , মাওলানা ভাসানি এবং জাতীয় আওমি নেতৃবৃন্দ , আইয়ুব সরকার প্রতিবাদ সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয় ।
সেখ মুজিব তখন উদিয়মান তরুন নেতা , পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিব সহ ৩৬ জন নেতা কর্মিকে গ্রেফতার করে ।
বাঙালি প্রতিবাদ মুখর হয় , প্রায় ১ বছর কারাবরণের পর মাওলানা ভাসানি ও বাম দল গুলুর আন্দোলনের তোপে মুজিব
সহ জাতীয় নেতাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্থান সরকার ।
এর মধ্য ৬ দফা / ১১ দফা আন্দোলনে পাকিস্থান সরকার
এর বিপর্যয় নেমে আসে । ৬৯ এ গনঅভ্যুত্থানে পাকিস্তানের
স্বৈরশাসকের ভিত নড়ে ,
বাধ্য হয় নির্বাচন মুখি হওয়ার ।
আসে ৭০ এর নির্বাচন , বাংলাদেশ জাতীয় / আওমি মুসলিম লিগ [ বিঃ দ্র; আওমি উরদু শব্দ বাংলা অর্থ জাতীয় ] নিরংকুশ
সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে ] কিন্তু ইয়াহিয়া বা পাকিস্তান সরকার
বাঙ্গালির এ বিজয় মেনে নিতে পারেনি , তারা ক্ষমতাকে আঁকড়ে
থাকার ফন্দি করে মুজির / ইয়াহিয়া বৈঠক প্রস্তাব দেয় ঢাকায় ।
৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে মহাসমাবেশের ডাক দেয় , জাতীয় লিগ , সমাবেশের সভাপতি ছিলেন মাওলানা ভাসানি ।
সারাদেশের লক্ষ লক্ষ লোকের সামনে মুজিব স্বাধীনতার জ্বালাময়ী ভাষণ দেন ।
বাঙালি এর মর্ম অনুধাবন করে প্রস্তুতি নিতে থাকে ।
১৭ ই মার্চ ইয়াহিয়া ঢাকায় আসে এবং মুজিবের সাথে বৈঠকে বসে ।
চলতে থাকে বৈঠক দিনের পর দিন রাতের পর রাত কিন্তু আমাদের দাবি ওরা মানতে নারাজ ।
গোপনে ইয়াহিয়া বাংলাদেশ কে করায়ত্ত করার জন্য সামরিক
সরঞ্জাম সহ ঢাকা ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হয় ।
মাওলানা ভাসানি অসুস্থ হয়ে পড়ে তাকে চিকিৎসার জন্য কলকাতা পাঠানো হয় ।
মুজিব গ্রেফতার হওয়ার আগেই স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র অধিনস্ত
লোকের নিকট রেখে যান ।
মেজর জিয়া ছিলেন সামরিক কমান্ডার , চত্রগ্রাম ইউনিট ।
সেখানে ঘোষণা পত্র পৌঁছলে কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে প্রথমে আব্দুল জলিল এবং পরে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন ।
পাকিস্তানিরা প্রথমেই রাজার বাগ পুলিশ লাইন এটাক করে এবং
২৫ শে মার্চ রাতের আধারে ঘুমন্ত জাতীর উপর চালায় ইতিহাসের নির্মম ন্যাক্কার জনক হত্যাকাণ্ড ।
স্বাধীনতা ঘোষিত হলে সারা বাংলার , ছাত্র , শ্রমিক , কৃষক , আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সহ সর্বস্তরের জনতা এক হয়ে মুক্তি যুদ্ধে
ঝাঁপিয়ে পড়ে ।
ভারতের নেতাজি সুবাস চন্দ্রের দল ও বাম মূর্ছা অনেক মুক্তি বাহিনিকে ট্রেনিং এর ব্যাবস্থা করে , এর মধ্য কাদের সিদ্দিকের বাহিনী ভাল ভুমিকা পালন করে । জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে
সারা বাংলা কে ১১ সেক্টরে ভাগ করে গেরিলা কায়দায় পাকিস্তানিদের সুসজ্জিত আধুনিক বাহিনীর সাথে চলে তুমুল লড়াই । এবার নিয়াজি ও পাকিস্তানিরা গোপন আতাত করে
কথিত রাজাকার , আলবদর , আলসামসদের সাথে ।
চালায় লুট , অগ্নিসংযোগ , ধর্ষণ ।
দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ভারত ১ম বাংলাদেশ কে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেয় । পাকিস্তানিরা বুঝে গেছে লক্ষ লক্ষ সুসজ্জিত বাহিনীর পরাজয় আসন্ন ।
রাজাকার , আলসামস , এর সহায়তায় পালিয়ে যাওয়ার আগে
দেশের জাতীয় নেতা সহ বুদ্ধিজীবী দের ধরে ধরে নির্মম ভাবে
হত্তা করে । কারন বুদ্ধিজীবীরা বেচে থাকলে তারা বিশ্বের সাথে
ভাল সুসম্পর্ক স্থাপন করে অতি অল্প দিনেই আবার বাঙালি জাতী মাথা তুলে দাঁড়াবে ।
দেশ শত্রু মুক্ত হয় বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ সামরিক ইউনিটের নিকট জেনারেল নিয়াজি ৫৩ হাজার সৈন্য সহ আত্মসমর্পণ করে ।
১৬ ই ডিসেম্বর কে জাতীয় সরকার বিজয় দিবস হিসাবে ঘোষণা
করা হয় ।
ঘরে ফেরে যুদ্ধ ফেরত মানুষ / হিসাব মিলায়ে দেখে প্রত্যক পরিবারের অধিকাংশই কেউ ফেরেনি ।
৩০ লক্ষ বাঙ্গালির রক্তে ২ লক্ষ নারির ইজ্জতের বিনিময়ে যে
স্বাধীনতা তা আমরা আর ভুলের মাশুলে , নিজেদের মধ্য বিভেদ
সৃষ্টির মাধ্যমে হারাতে চাইনা ।
মুজিব আরও ২ মাস পর কারামুক্তি পায় , শুরু হয় দেশ গড়ার সংগ্রাম ।
আমরাও অতিত ভুলে , দাগ ভুলে এস দেশ গড়ি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।