আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শবেবরাতের রাতে ছিনতায়ের কবলে সামুর দুই কুখ্যাত বলগার

০০ ব্যাংক থেকে বের হয়ে ব্লগার কুলবয় কে ফোন দিলাম তুই কোথায় । উত্তরে কুলবয় বলল ওইখানে দাড়া আমি আসতেছি । যথাসময়ে কুলবয় চলে আসল দুই ফ্রেন্ড মিলে হোটেলে ঢুকলাম ৩টা বাজে তখন , পেটপুজা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফোন আসলো কুল বয়ের মোবাইলে । ঘটনা ততক্ষনে জিলাপীর পেচ , শুনলাম কুলবয়ের এজেন্টের ট্রাক বেনাপোল বডাল থেকে পুলিশ ধরছে , কাজ হবে ট্রাক কে ছাড়ানো , মূলত ট্রাকটা ব্যবহার করা হয় ফিড ট্রান্সফার এর কাজে কিন্ত ট্রাকের মালিকের জিবটা একটু লম্বা তাই ১২০০০টাকার বিনিময়ে ট্রাক চুক্তি হয় ট্রাক ঢাকায় বেনাপোল থেকে পন্য নিয়ে যাবে ঢাকাতে । কিছু করার নাই ট্রাকের মালিক কুলবয় এর বড় এজেন্ট সুতরাং চাকরির সুবাদে যেতে হবে তাকে বেনাপোল , আমাকে বলল যাবি তোর যদি হতে সময় থাকে চল একটা উপকার করে আসি ।

যশোর থেকে রওনা দিলাম বিকাল ৪টার দিকে ২টা মটর সাইকেল এ করে , আমি আর কুলবয় একটা বাইকে আর এজেন্ট আর একটাতে । বেনাপোল যাওয়ার আগে ঝিকরগাছাতে কুলবয় আর এক এজেন্টের কাছে গেলাম কি করা যায় । ঝিকরগাছার এজেন্ট খুব ভালো মানুষ , উনি বার বার না করলেন মটর সাইকেল নিয়ে যেয়েন না , কে শোনে কার কথা , ১৪কিলোমিটার পিছনে ফিরে মটর সাইকেল রেখে আসা সম্ভব নয় এখন । রওনা দিলাম আবার আমি ২টা সিগারেট কিনে ফু দিতে দিতে যাচ্ছি ঠিক গতখালী নামে একটা জায়গা আছে সেখানে আসতে ফোন করা শুরু করল ব্লাগার বোকা সোকা কুলবয় , আমি আর কি করব বাকি সিগারেটা জালিয়ে ফেললাম , টান দিচ্ছি আর ফু .. আমার তখন আমার কাজিন এর কথা মনে পড়ে গেল , ওরা নরাইল থেকে আসতেছিল মটরসাইকেল এ রাস্তায় ডাকাত বর্ষা নিক্ষেপ করছিল , আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি রাত ৮টার আগে বেনাপোল থেকে বের হতে পারবনা এমনকি ১০টা বেশী বেজে যেতে পারে । যাই হোক বেনাপোল পৌছালাম ৬.৩০ এর দিকে সোজা গেলাম বর্ডার দেখতে কুলবয় বর্ডার আগে দেখেনি ওই সময় কুলবয় ড্রাইভ করতেছিল হা হা আমাকে বলল দোস্ত বুইঝ কিন্ত ইন্ডিরা ভিতর যেন না ঢুকি ।

আমি এর আগে একবার বেনাপোল বর্ডারে এসেছিলাম , আশেপাশে শুনলাম থানাটা কোথায় পরে থানায় ঢুকলাম কথা বললাম কেন ট্রাক টা আটক করল কি ছিল ওতে , ড্রাইভার কে দেখলাম ২৪ বছর থেকে ২৫ এর বেশী হবে না । পুলিশ ফাঁড়ির একজন এর সাথে কথা হলো বলল ট্রাক কাসটমসে নিয়ে গেসে , কেস হবে আগে , উনি বলল কার মাল ছিল ট্রাকে , কোন দালাল ঠিক করসে ট্রাক কাসটমস্ সব জানে , তাহলে নিরিহ এই ড্রাইভার আর ট্রাকের দোষ কি আমার প্রশ্ন? এজেন্টের ফোন নম্বর নিয়ে বলল রাতে ফোন দিয়ে জানাবে কোন দারোগার হাতে যাবে কেস হাবি জাবি , আমি সহজ ভাষায় বললাম টাকা যদি দরকার হয় নিয়ে ট্রাক ড্রাইভার আর ট্রাকটা ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে বলেন । ট্রাকটা লোড নিয়ে নাকি রওনা দেয়নি আর সমস্থ পন্য লোড হয়সে নাকি থানার সামনে , যাই হোক রাত হয়ে গেছে ৭.৩০ মিনিট রওনা দিলাম এজেন্টের সাথে কাসটমসে , কাসটমসে গিয়ে মাথা খারাপ পুরাই খারাপ , ৩কোটি টাকার ইন্ডিয়ান থ্রিপিস ট্রাকে । কাসটমসের এক বাসার সামনে আনলোড করতেছে কাছে গিয়ে থ্রিপিস গুলো দেখলাম সুন্দর সুন্দর সব , এস আই কে পাইলাম নাম উল্লেখ করলাম না , জিজ্ঞেস করলাম কার জিনিস বলল ভাই বাংলাদেশের সোনার ছেলেদের জিনিস কি বলব আপনাদের এমন সব সোনার ছেলে নাম শুনলে আপনারা চমকায় যাবেন এস আই কে বললাম ট্রাকটা এইলোকটার এইটাকে কি করে ছাড়বেন ফোন নম্বর নিল এজেন্টের , রাত তখন ৮টা , আমি দেরি না করে বললাম রওনা না দিলে ঝামেলা হয়ে যাবে , এজেন্ট পাগলা হয়ে চালাচ্ছে কোথায় যে গেল , আমি আর কুলবয় ৬০-৭০কিমি গতিতে চালানো শুরু করলাম আর গতি বাডানো গেল না কারণ খুব বেশী ট্রাক তখন রাস্তায় , কিছু দুর যাওয়ার পর নাভারনের আগে কয়েকটা মটর সাইকেল ক্রস করল , যখন ক্রস করল আমাদের আর ওদের মধ্যে দুরত্ব মাত্র ৩হাত রাস্তা ফাঁকা , নাভারনের কাছে এসে দেখলাম এজেন্ট গতি একটু কমিয়ে যাচ্ছে বললাম গতি বাড়ান , গতি বাড়িয়ে চললাম , ঝিকরগাছার ব্রিজের উপর উঠলাম তখন রাত ৯টা মতন বৃষ্টি পড়তেছে , সামনে ট্রাক আর যাত্রীবাহী বাস থাকায় গতি কমানো হলো আর আমরা সামনে ৩০ গজের মধ্যে থামব , বাজার সামনে , পিছনের দিক থেকে চিৎকার করল আমি সাথে সাথে চলন্ত মটরসাইকেল থেকে পা নামিয়ে দিলাম বুঝতে বাকি নেই এজেন্ট এর গলা কুলবয় মটরসাইকেল ঘুরিয়ে নিতে নিতে আমি রাস্তার মাঝ বরাবর হাতে শুরুকরলাম এজেন্টের দিকে , সাথে আরো ৪ট মটরসাইকেল প্রত্যেকটাতে ২জন করে বসা , ১টা মটরসাইকেল এজেন্টের সাথে আর বাকি গুলো আমার নামা আর মটরসাইকেল ঘুরানোর কারনে ভাগসে , দেখলাম চলন্ত বাইকের চাবি কেড়ে নেওয়ার কারনে বাইক বন্ধ হয়ে গেছে । ছিন্তাইকারী তখন চাবি খুজার নাটক করতেছে , কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়সে ছিন্তাইকারী বলে ওরা নাকি ইনফরমেশন পাইসে যে এই লোক ফেনসিডাইল নিয়ে যাচ্ছে ।

আমি বললাম তো এই ভাবে কেন মাটর সাইকেল থামালেন চলন্ত মটরের চাবি তুলে নিয়ে কি বুঝাতে চাইলেন , আমি মোটেই রাগান্তিত না হয়ে নরমাল ব্যবহার করতেছি যদিও মনে হচ্ছিল মাইর লাগায় তাও পারলাম না , কারন ওদের বাকীর ব্রিজের ওপাশে চলে গেছে , ফোন দিল কুলবয় ঝিকরগাছার এজেন্ট এর কাছে তাড়াতাড়ি আসেন , উনি ২মিনিটের মধ্যে আসল , এমন সিরিয়াস যে ওরা চাবি খুজতেসে কোন অপরাধ ওদের নেই মানে ছিনতাইকারীরা ,আমার ৪জন ওই অ›ধকারে ওদের বাকীগুলো যদি ব্যক করে আসত তবে খবর ছিল , কুলবয়ের বাইকের চাবি দিয়ে ওই বাইকে তাড়াতড়ি সরিয়ে পাশের বাজারে নিয়ে যাওয়া হল পরে ১জনকে দিয়ে চাবি পাঠানো হলো এর মধ্যে ছিনতাইকারী ছেলে ২টা ওদের মটর নিয়ে পালায়ন করে , আমরা ইয়াকি মেরে বলাম বৃষ্টির মধ্যে ভেজার কি দরকার দাড়ান পরে যান , ওরা খালি হাতে ছিল না , ২টা মটর ঝিকরগাছাতে রেখে আর সাথে ৪০ হাজার টাকা রেখে রাত ১০টার দিকে যাত্রীবাহী বাসে উঠে যশোর আসলাম পরে মনিহার থেকে এজেন্টকে তুলে দিলাম ট্রাকে , যশোর নরাইল সরকের যশোর থেকে ১০কিমি দুরে তার বাসা । রাত তখন ১০.৪৫ মনিহার জমজমাট টুপিপরা আনেক মুসল্লি , ছোট বাচ্চারা ভ্যানে করে ঘুরতেছে , আম কিনলাম আর কলা কিনলাম পরে সোজা ১৫টাকা দিয়ে একটা অটোতে করে বাসায় আসলাম । পরের দিন জানতে পারলাম ওই জায়গাতে ২দিন আগে ১টা মটর সাইকেল ছিনতাই হয়েছে । ভাইডিরা মন্তব্য করলে করেন উত্তর দিবার পামু না ঘুম পাইতেছে .... ঘুমাইতে গেলাম .... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.