আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাবা প্রারম্ভিক রণ কৌশল বা chess opening strategy

বাধঁ জোড়ার আওয়াজ > With Great Power, Comes Great Responsibility দাবার খেলা নিয়ে আর নতুন কিছু বলার নাই । দাবা কি বা কিভাবে খেলে তা সামু চেস ক্লাবের ফোরামে নতুনদের জন্য বিস্তারিত দেওয়া আছে । এখন আমরা আলোচনা করব , দাবা খেলার সাধারন রণকৌশ বা chess strategy নিয়ে । যা শুধু মাত্র নতুন বা ইন্টার. বা ওয়ারিয়র টাইপের খেলোয়াড়দের জন্য প্রযোজ্য । প্রো খেলোয়াড়রা এই পোষ্ট এড়িয়ে গেলেও চলবে ।

১. দাবার প্রারম্ভিক কৌশল হচ্ছে দাবা ছক বা যুদ্ধের ময়দানের কেন্দ্র দখল করা । d4 d5 e4 e5 ঘরগুলি হচ্ছে দাবা ছকের কেন্দ্র । কারণ এই কেন্দ্র দখল করতে পারলে জয়ের আশা শতকরা হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে । এই কেন্দ্র থেকে খেলার মূলকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় । নীচের ছবির দিকে লক্ষ্য করুন ঘরগুলি উদাহরণ স্বরূপ ঘোড়ার কেন্দ্র দখলকৃত অবস্থান দেখানো হয়েছে ।

যেখান থেকে সে ৮টি ঘরকে নিশানা করে দখল করে আছে । এই জন্য কেন্দ্র দখল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু যদি ঘোড়াটি কর্ণারে থাকত তাহলে সে নীচের ছবির মত দুইটা ঘরেই নিশানা বা দখল করে রাখতে পারে । তাহলে কেন্দ্র কেন এত জরুরী বুঝতে পারলাম । ২.এখন প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে কেন্দ্র দখল করা হয় ? সহজ উত্তর, তা অবশ্যই সৈন্য দিয়ে ।

এটা হল সাধারণ ও সাবলীল সূচনা । বেশীর ভাগ খেলোয়াড়ই এই পদ্ধতি অনুসরণ করেন । কিন্তু সৈন্য আগালেই চলবে না, সৈন্যকে একটি ব্যাকআপ এ রাখতে হবে বা সাপোর্ট দিতে হবে । তাই ঘোড়া, হাতি বা মন্ত্রী এসব দিয়েই সাপোর্ট দেওয়া যেতে পারে । যাতে প্রতিপক্ষ বিনা বাধায় কেন্দ্র দখল করতে না পারে ।

২.ক আপনার প্রথম চাল কি হতে পারে সাধারণ রণ কৌশল নিয়মে । তা নীচের ছবি দুইটাতে দেখানো আছে । ২.খ আর যখন আমি ব্যাক আপের কথা বলেছিলাম তার চিত্র নিচে রয়েছে । সৈন্যদের সাপোর্ট সাধারণত ঘোড়া হয় । এতে তারা প্রতিরক্ষার পাশাপাশি আক্রমনাত্নক ভাবে সৈন্যের সামনের দুইটি ঘরকেও নিশানা করতে পারছে ।

৩. একটি ভাল দাবা প্রারম্ভ এর জন্য প্রাথমিক কয়েক চালে বা অপেনিং এ একই গুটি একাধিক না চালা । প্রয়োজনবোধে চালা যেতে পারে । প্রথম কয়েক চালে শুধু নতুন গুটিই মেধা দিয়ে চালতে হবে । ৪. আরও ভাল হবে দাবা খেলার প্রারম্ভেই চোখ কান খোলা রেখে ক্যাসলিং করে দূর্গ রচনা করা । ৫. সবচেয়ে ভাল হয়ে দাবা খেলার শুরুতে বেশী সৈন্য চাল না দেওয়া ।

১ কি ২ বা বেশী হলে ৩ টি সৈন্য নিয়েই আক্রমণ বা প্রতিরোধ শুরু করা ভাল । কারণ শুরুতে শুধু সৈণ্য অগ্রসল রাজার প্রতিরোধকে দূবর্ল করে দেয় । তাই প্রয়োজন ছাড়া সৈন্য আগানোর কোন প্রয়োজন নাই । কারণ খেলার এন্ডিং বা সমাপ্তিতে সৈন্য উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখে । ৬. আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আক্রমণকারী কি করতে চাচ্ছে ? বা ধোকা দিতে চাচ্ছে ? তাই সাধারণ আক্রমণকে সরাসরি প্রতিরোধ বা পাল্টা আক্রমণ করে জবাব দেওয়া উচিত ।

নীচের চিত্রে দুইটাতে প্রতিরোধ ও পাল্টা আক্রমণ দেখতে পারব । তবে প্রয়োজনে অন্য রকমও চাল দেওয়া যেতে পারে । ৭. আর দাবা খেলার আরেকটা টিপস হচ্ছে অপেনিং এ বা প্রারম্ভে মন্ত্রী বা কুইনকে তাড়াতাড়ি বাহিরে বাহির না করে । এতে বিপদ হবে কুইনের । কারণ এটি সবচেয়ে ক্ষমতা বান গুটি ।

এটার চলে ফেরার তখন বাধা হতে পারে অন্য গুটির জন্য । তাই মধ্য বর্তী খেলায় একে বাহির করা উচিত । তখন সে ফ্রি ভাবে নড়াচড়া করতে পারবে । নচেত প্রথমেই প্রতিপক্ষের ফাদে পরতে পারে । আর একে হারানো মানে প্রতিপক্ষের মনোবল বৃদ্ধি করা আর নিজের সংকোচন করা ।

এ নিয়ে আমার একট বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে । নীচের লিংকে দেখতে পারবেন , কিভাবে আমি রাজা ছেড়ে মন্ত্রীকে দৌড়ের উপর রেখেছি । Click This Link দেখুন । এখানে দেখবেন ৩ নম্বর চালেই মন্ত্রী বের করে আনে । আর ধীরে ধীর আমার প্রবল আক্রমণে ধরাশায়ী হয় ।

যদিও খেলাটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয় ! আর এখানে ঘোড়ার কেরামতিও চোখে পড়ার মতন । ৮. অনেকে হাতি বাহির করার জন্য দাবা খেলার প্রারম্ভে হাতির সামনের সৈন্য চালেন কিন্তু তা থেকে বিরত থাকা উচিত । কারণ সবচেয়ে ভাল হয় ঘোড়া বাহির করা । কারণ ঘোড়া হল দাবা খেলার জোকার । ৯. আর নৌকার আগে দুইটি হাতি কে বাহির করা উচিত ।

এরা যৌথ ভাবে দারূণ যুদ্ধ করতে পারে । এককভাবে তেমন শক্তিশালী নয় ঘোড়ার মত । ১০. আর লক্ষ্য রাখা উচিত যদি ক্যাসলিং করে দূর্গ রচনা করা থাকে তাহলে দূর্গের রাজার সামনের ঘরগুলো যেখানে সৈন্য থাকে বা রাজার পাশের ঘরগুলো যেখানে নৌকা অবস্থান করে বা ফাকা থাকে সে গুলো যেন প্রতিপক্ষের গুটির টার্গেট বা নিশানায় না থাকে । তাহলে বুঝতে হবে প্রতিপক্ষে সূ্ক্ষ বা স্থুল আক্রমনের চেষ্টা করছে রাজার দিকে । তাই আগে ভাগেই ঐ প্রতিপক্ষের আক্রমনকারী গুটি খেয়ে ফেলতে হবে অথবা আক্রমণ করতে হবে যাতে সে সরে যায় ।

এধরনের নিশানার কাজ সাধারণ হাতি ভাল করে , ঘোড়াও করে । তাই সব সময় এদের অবস্থান নিয়ে সর্তক থাকতে হবে । ১১. অনেকে আছে খেলার প্রারম্ভেই হাতি দিয়ে ঘোড়া খেয়ে ফেলেন । তা এড়াতে হবে । এটা উচিত প্রতিপক্ষের ক্যসলিং এর পর ।

কারন ঘোড়া অনেক সাপোর্ট দিতে সক্ষম । তাই প্রতিপক্ষ যখন দূর্গে ঘোড়ার সাপোর্ট রাখবে তখনই সেখানে আক্রমণ করে ঘোড়া খাওয়া যেতে পারে । তবে এটা ক্ষেত্রে বিশেষের উপর নির্ভর করে । এতে সুবিধা হবে কি হবে না । ১২. আর খেলার সময় খেয়াল রাখতে হবে এমন কোন পাল্টি পাল্টি খাওয়া খাওয়ি বা আক্রমণ করা চলবে না যা প্রতিপক্ষের জন্য সুবিধা হয় আরেকটা গুটি বাহির করার ।

অনেকে ধোকার দেবার জন্য ঝামেলা তৈরী করে যাতে প্রতিপক্ষ মূল আক্রমণকারীর মনের চিন্তা বুঝতে ব্যর্থ হয় । ফাও গলধ:করণ বা গুটির মারামারির সময় চিন্তা করা উচিত, যে কেন প্রতিপক্ষ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু করছে । ১২. দাবার শুরুতেই উড়াধুরা আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে । অনেকে শুরু থেকেই উড়াধুরা আক্রমণ করে বসেন । মনে করেন এতে প্রতিপক্ষ পিছু হটবে বা মানষিকভাবে ভেঙ্গে পরবে ইত্যাদি ।

কিন্তু এটা ভুল । এতে প্রতিপক্ষ শক্তিশালী প্রতিরোধ তৈরী করে । কিন্তু মাঝে মাঝে ব্যতিক্রমও দেখা যায় । অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা খেলার শুরুতে উড়াধুরা আক্রমনে ভয় পান না বা ঘাব্রে যান না । উপরের নিয়মগুলোর ব্যতিক্রমও হয়, তবে ক্ষেত্র বিশেষে ।

তা প্রো খেলোয়াড়দের জন্য প্রযোজ্য । দাবা খেলার Click This Link প্রচলিত ভুল জানতে এবং ক্যাসলিং নিয়ে জানতে ঘুরে আসুন । আর অপেনিং সম্বন্ধে হালকা জ্ঞান নিতে ঘুরে আসুন Click This Link আরও জানতে গুগলে সার্চ করুন । ধন্যবাদান্তে : ইন্টারনেট ও গুগল । ব্লগার একাকী রাজার সফর সাহেব, এম্যাচার সাহবে, সজীব আকিব সাহেব ও আরও অনেকে ।

এদের থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এই দীর্ঘ পোষ্টি করতে পেরেছি । আমি নিজও ভাল খেলোয়াড় নই এবং অনেক নাদান খেলোয়াড় , সব কৌশল জানিও না, তাই লেখায় ভুল থাকলে, দয়া মন্তব্য করবেন । সংশোধন করা হবে । Click This Link সামু চেস টিম চেস.কম এ , চাইলে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট এ জযেন করতে পারবেন এখান থেকে । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     বুকমার্ক হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।