আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবন থেকে নেয়া ফান পোস্টঃ মোটা হওয়ার যে নিয়ম গুলোর সাথে পরিচিত হলাম

যে মুখ নিয়ত পালায়......। । ব্যাপক ঝামেলায় আছি অনেক দিন ধরে। যার সাথেই দেখা হয় সেই বলে, শুকাইয়া তক্তা হইয়া যাইতেছ! আগে বলত কাঠ হয়ে যাচ্ছি। আর এখন তক্তা পর্যায়ে চলে গেছি।

অতএব ঘটনা ভয়াবহ। মারাত্বক রকমের ভয়াবহ। আমি কোনদিন ই হাতি ঘোড়া শ্রেনীয় ছিলাম না। কিন্তু যখন কেউ বলে শুকাইয়া তক্তা হয়ে যাচ্ছ তখন এমনভাবে বলে যেন মনে হয় এই মাত্র কিছুদিন আগে আমি বিরাট হস্তি শ্রেনীয় কিছু ছিলাম। এখন বিচিত্র কারনে শুকিয়ে কাঠ হতে হতে তক্তা পর্যায়ে চলে গেছি।

কোন কথা বার বার শুনলে বিরক্তি আসে। আমারো তাই এই কথা শুনে বিরক্তি আসল। চিন্তা করে দেখলাম একবার মোটা হতেই হবে। মোটা হয়ে সবাইকে টাশকি লাগাই দিব। চিন্তা করার পরেই মাথায় আরেক চিন্তা আসল মোটা হওয়া যায় কীভাবে! সাধারন ভাবে আমি যেটা বুঝি খাওয়া দাওয়া বাড়াইতে হবে।

কিন্তু মুখে তো রুচি নাই। খাওয়া দাওয়া বাড়াইলেও মোটা হইতে অনেক টাইমের ব্যাপার। এসব অনেক কিছু চিন্তা করে এক বন্ধুর সাহায্য নিলাম। সে আমার চেয়ে তিন চার গুন বড় সাইজে। তারে বললাম, দোস্ত আমি তর মত হইতে চাই।

কি করতে হবে? সে তৎক্ষণাত জবাব দিল, বার্গার খা। ডেইলি একটা করে। আমার যে এই বডি এগুলো শুধু বার্গার খাইয়া। তার কথায় মোটা হওয়ার সহজ রাস্তা পাইয়া ঐদিন ই তারে নিয়া বার্গার খাইলাম। তারপর থেকে কাজ কর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়াইয় বার্গার খাওয়ার কথা ভূলে যাই।

আর আমার মোটা হওয়া ও হয় না। কিছুদিন পর আবার তারে পাইলাম। আবার মোটা হওয়ার টিপস চাইলাম। এবার সে অন্য টিপস দিল। সোজা বাংলায় বলল, কোক খা।

আমার যে এই বডি দেখতেছস তা খালি কোক খাইয়া! আমি তারে বললাম, কয় দিন আগে না বললি বার্গার? তার সুন্দর জবাব, কোক বার্গার দুইটা একসাথে। প্রচুর ফ্যাট। খাইলে মোটা নিশ্চিত। তার পাশে আরেক বন্ধু ছিল। সে ও যোগ দিল।

মোটা হওয়ার জন্য কোক উত্তম। তারা দুইজন ই যেহেতু নর্থ ঈষ্ট মেডিকেলের স্টুডেন্ট তাই কথাগুলো বিনম্র চিত্তে মানলাম। তবে আমার নিয়ম করে কোক খাওয়াও হয় নি,বার্গার খাওয়া ও হয় নি। মোটা হওয়াও হয় নি। কিন্তু মোটা হবার বাসনা টা মরে যায় নি।

ইটচাপা সাদা ঘাসের মত হয়েও বেঁচে ছিল। কয়দিন আগে আরেক বন্ধুরে দেখলাম খুব ভাব নিয়া হাটতেছে। তার একটা গুন হল সে যে কোন কাজই প্রথমে দুইনম্বর পদ্ধতিতে করতে চেষ্টা করে। যত সহজ কাজই হোক সে প্রথমে দুইনম্বর পদ্ধতিতে করতে চাইবে, তা যত কঠিনই হোক। (আমি এখন পর্যন্ত তারে সফল হইতে দেখি নাই)।

যাই হোক, ভাব নিয়া হাটতেছে কারণ টা জিজ্ঞেস করতেই জানা গেল সে, জিম করতেছে রেগুলার। গুড। তার কিছু পরিবর্তন ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারে জিজ্ঞেস করলাম, আমি তো মোটা হওয়া যায় ক্যামনে তা নিয়া রিসার্চ করতেছি। তুই পারলে বুদ্ধি দে? সে তখন বিজ্ঞের মত ভাব নিল।

তারপর বলল, আমার বডি দেখতেছস?এইটা মাত্র বারো দিনে করছি। আমার পাশের একজন অবাক হয়! মাত্র বারোদিনে !! বন্ধু এবার মহাবিজ্ঞের মত ভাব নিয়ে বলল, ইয়েস। অনলি টুয়েলভ ডেজ। ওয়ারডেক্সন ৪টা,এরিষ্টোবেট বি ৬টা,এমাইনো-১৮ ডেইলি ১টা করে খাই। আমি এগুলোর নাম শুনি নাই আগে।

তাই বিস্মিত হয়ে বললাম,এগুলো কি?এদের কাজ কি? বিজ্ঞ বন্ধু মুচকি হেসে আমার নির্বোদ্ধিতার প্রতি সহানুভুতি প্রকাশ করে বলল, ওয়ারডেক্সন ডেঞ্জারাস জিনিস। একমাস খাইলে টিবি হইয়া যায়। কিন্তু আমার কাছে সেইটা ব্যাপার না। আমি খামু ১৫ দিন। ওয়াডেক্সন মুখে পানি ধইরা রাখে।

মুখ ফুলাইয়া রাখে। আমার মুখ দিয়া এখন ডেইলি দুই তিন লিটার পানি ঘাম হইয়া বের হইয়া যায়। বিস্মিত হয়ে বলি তাই নাকী! সে আবার বলে, ওয়ারডেক্সন খাইয় ভাত খাইতে বসলে আলু যেমন স্বাদ লাগবে,শুটকিও তেমনি লাগবে। স্বাদের কোন পার্থক্য নাই। সব এক।

খাইতে বসে শুধু খাইতেই থাকবা। আমি তো একদিন এমন খাওয়া দিসিলাম যে আধঘন্টা চেয়ার থেকে উঠতেই পারি নাই। আমি বলি টিবি হইলে ভয় নাই? সে বলে, টিবি মানে যক্ষা বিষয় না। যক্ষার ওষূধ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। তবে এখন ডেইলি দুইবার জিম করতেছি।

সকালে ১১টা থেকে ২ঃ৩০ আর রাতে ৮টা থেকে দশটা। মাশাল্লাহ বলে তার স্বাস্থ্যের উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করলাম। সে কিন্তু বার বার ওয়ারডেক্সন আর এমাইনো ১৮ খাওয়ার জন্য চাপ দিল। সব খানে নাকী আবার আসল ওষুধ টা পাওয়া যায় না। খালি ভেজাল।

তার পরিচিত এক ফার্মেসী থেকে কিনার জন্য উপদেশ দিল। মোটা হওয়া অভিনব এই পদ্ধতিতে পুলকিত হয়ে তিনটা ওষুধের নাম মনের মধ্যে গেথেঁ নিলাম। আমি খাই আর না খাই জ্ঞান তো হল।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.