আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একাত্তরের বিচার: একাত্তরে আমি

I have nothing to say about me..... ১৯৮৭ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীতে আমার জন্ম, বিকালে না সকালে, রাতে না দিনে আজো কোন দিন আমার মা-বাবাকে প্রশ্ন করা হয় নি। তবে এ টুকু বুঝতে বাকি নেই আমি যেহেতু আমার মা-বাবার কোল জুড়ে আসা প্রথম সন্তান তাই তাদের আবেগ আমাকে নিয়ে একটু বেশীই। আর মায়ের কথাতো বাদই দিলাম, আমাকে দশ মাস দশ দিন পেটে রেখে, তীব্র প্রশববেদনার পর তার কোল জুড়ে আমিই এসেছি প্রথম, আমিই তার কোল জুড়ে আসা প্রথম সন্তান, আমার কারনেই তিনি প্রথম বারের মত প্রসববেদনা সইয়েছেন। আর যেহেতু আমার মা হলো সেকেলে, বাবার অবর্তমানে আমি তার এক মাত্র বন্ধু ছিলাম, তার সুখ-দুঃখ ,আনন্দ-বেদনা ও হাসি কান্না শুনার ও বুঝার এক অবুঝ সাথী ছিলাম। জানি আজো আমি আমার মা বাবার জন্য কিছুই করতে পারিনি, তবু ও তারা আজও আমাকে নিস্বার্থ ভালোবেসে যাচ্ছে।

না না , আমি আমার জন্ম বৃত্তান্ত জানানোর জন্য লিখতে বসিনি। সত্যিকারের অর্থে আমি বলতে চাই, আমি একাত্তর দেখিনি। একাত্তরে আমার জন্ম ও হয়নি। আমি যতটুকু জানি আমার মা-বাবা ও তখন বিয়ের পিড়িঁতে বসেনি। আর যেহেতু আমি আল্লাকে বিশ্বাস করি, মানে যেহেতু আমি আস্তিক তাই বলতে পারি এতটুকু,, তখন ছিলাম আমি "আলমে আরোয়াতে", আর অপেক্ষার প্রহর গুনছিলাম পৃথিবীতে আসার জন্য।

ভাগ্যিস তখন আমার জন্ম হয়নি, আর যদি জন্ম হতো আমার বয়স যতোই হোক না কেনো, আমাকে হয়তো বা হতে হতো বিচারের সম্মুখিন, আর তাই হয়তো তখন-- "জন্মই যেনো আজন্ম পাপ" হতো আমার জন্য, তার কারন হলো নিম্ন রুপbr /> ১. আমাকে আজ বিনা বিচারে জেলে আটক থাকতে হতো। ২. আমাকে সংবিধান প্রদত্ত সকল মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হতো। ৩. বিচারের আগে আমি অভিযুক্ত হয়ে যেতাম, হয়তো অড়ালে অবডালে আমার সাজার রায়ও লেখা হয়ে যেতো বিচারের আগেই। ৪. আমার জীবন হয়ে পড়তো চিড়িয়াখানার এক জন্তুর চেয়েও খারাপ। ৫. আর একাত্তরে আমার জন্ম হলে এত দিনে হয়তো আমার বউ থাকতো, ছেলে মেয়ে থাকতো, আর তারা হতো পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত প্রাণী, কারন আমি তাদের বাবা বলে তারাও সমান অপরাধী ।

হায়!! হায়!! হায়!! আমি কি বলতে কি বলে ফেললাম। আমি আসলে বলতে চাচ্ছিলাম একাত্তর আমাদের কে এনে দিয়েছে স্বাধীনতা, একাত্তর আমাদের দিয়েছে পরাধীনতা থেকে মুক্তি, কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের কাছে স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য এসে ধরা দেয়নি। এর জন্য দিতে হয়েছে অনেক প্রান, স্বীকার করতে হয়েছে আনেক ত্যাগ, তার পরই এসেছে স্বাধীনতা। তার পরই এসেছে মুক্তি। একাত্তরের স্বাধীনতার সময়কার মানুষদের আমরা কয়েক ভাগে মূলত ভাগ করতে পারিbr /> ক. যারা পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে আস্ত্র ধরে ছিলো।

খ. যারা পাকিস্তানী হানাদারদের সহায়তা করে ছিলো আর করে ছিলো অনেক জুলুম-নির্যাতন। গ.যারা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পক্ষে ছিলো কিন্তু কোনো প্রকার যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে নি। ঘ. যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলো কিন্তু কোন পক্ষকে সাহায্য সহযোগীতা করে নি। ঙ. যারা মাঠির টানে দেশ ছেড়ে পালায় নি, জীবনের ভয়ে পাকিস্তানী হানাদরদের সহায়তা করেছিলো সামনে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধাদের সহায়তা করেছিলো নির্স্বাথ্ব ভাবে। চ. আর এক দল যারা বিভিন্ন দেশে শরনার্থী হিসাবে আশ্রয় নিয়ে ছিলো, আর যুদ্ধ শেষে দেশে ফিরে এসে ছিলো।

স্বাধীনতার আজ ৪০টি বছর আমরা আজ হাটিঁ-হাটিঁ পা-পা করে অতিক্রম করে ফেলালাম। কিন্তু আজো মুক্তিযুদ্ধা, রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামসদের হিসাব মিলাতে পারলাম না। সময় ও সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে পাল্টাই মুক্তিযুদ্ধার পরিমান, সার্টিফিকেট গুলোও কেনো জানি আসল- নকল হয়ে যাই, আর বছর ঘুরার সাথে সাথে যেনো বাড়ছে মু্ক্তিযুদ্ধাদের পরিমান, আচ্ছা নতুন মুক্তিযুদ্ধা কি জন্ম নিচ্ছে দেশে আজো????? মানুষ সামনের দিকে হাটেঁ, আর আমরা ও হাটঁছি সামনের দিকে, কিন্তু আমাদের চোখ যেনো পেছোনের দিকে তাক করা, অনেকেই হয়তো বা বলছেন অতীতের প্রতি আমাদের দায়িত্ব থাকা উচিত। আর তাই হয়তো বা আজ শুরু হয়েছে বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। অবশেষে আমরা বিচার দেখতে পাছ্ছি..... আচ্ছা আমার প্রশ্ন হচ্ছে তাদের নিয়ে যারা আজ তাদের বিচার করছেন....... ১. তারা কি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করে ছিলেন? ২. তারা কি সেই সময় দেশে ছিলেন? ৩. তাদের আত্মীয় স্বজনরা কি সবাই মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন? ৪.তারা যদি যুদ্ধ করে থাকেন, তাহলে কোন সেক্টরে? ৫. তখন তাদের বয়স কতো ছিলো? আর তারা যদি সেই সময় দেশে না থেকে থাকেন বা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে না থাকেন তাহলে কিভাবে তারা বুঝবে তাদের অবস্থা........ ‌১.যারা পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে আস্ত্র ধরে ছিলো।

২.যারা পাকিস্তানী হানাদারদের সহায়তা করে ছিলো আর করে ছিলো অনেক জুলুম-নির্যাতন। ৩.যারা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পক্ষে ছিলো কিন্তু কোনো প্রকার যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে নি। ৪.যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলো কিন্তু কোন পক্ষকে সহায্য সহযোগীতা করে নি। ৫. যারা মাঠির টানে দেশ ছেড়ে পালায় নি, জীবনের ভয়ে পাকিস্তানী হানাদরদের সহায়তা করেছিলো সামনে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধাদের সহায়তা করেছিলো নির্স্বাথ্ব ভাবে। তাই সেক্টর কমান্ডার সি.আর.দত্তের ভাষায় বলতে হয়- স্বাধীনতা অত সহজে অর্জন হয়নি, আর রাজাকাররা না হলে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন কষ্টকর হয়ে যেতো কারন তারা আমাদের বিভিন্ন ভাবে সাহয্য কারেছিলো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।