আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই। দিনের আলো নিভে এল সূয্যি ডোবে ডোবে । আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে চাঁদের লোভে লোভে। মেঘের উপর মেঘ করেছে, রঙের উপর রঙ। মন্দিরেতে কাঁসার ঘন্টা বাজল ঢং ঢং।

ও পারেতে বিষ্টি এল, ঝাপসা গাছপালা এ পারেতে মেঘের মাথায় একশ মানিক জ্বালা। বাদলা হাওয়ায় মনে পড়ে ছেলেবেলার গান- বিষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর, নদেয় এল বান। । আকাশ জুরে মেঘের খেলা, কোথায় বা সীমানা- দেশে দেশে খেলে বেড়ায় কেউ করে না মানা। কত নতুন ফুলের বনে বিষ্টি দিয়ে যায়, পলে পলে নতুন খেলা কোথায় ভেবে পায়।

মেঘের খেলা দেখে কত খেলা পড়ে মনে, কত দিনের লুকোচুরি কত ঘরের কণে! তারি সঙ্গে মনে পড়ে ছেলেবেলার গান- বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এল বান। । মনে পড়ে ঘরটি আলো, মায়ের হাসিমুখ- মনে পড়ে মেঘের ডাকে গুরুগুরু বুক। বিছানাটির একটি পাশে ঘুমিয়ে আছে খোকা, মায়ের ‘পরে দৌরাত্মি সে না যায় লেখাজোকা। ঘরেতে দুরন্ত ছেলে করে দাপাদাপি- বাইরেতে মেঘ ডেকে উঠে, সৃষ্টি উঠে কাঁপি।

মনে পড়ে মায়ের মুখে শুনেছিলাম গান- বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এল বান। । মনে পড়ে সুয়োরানী দুয়োরানীর কথা, মনে পড়ে অভিমানী কংকাবতীর ব্যাথা। মনে পড়ে ঘরের কোণে মিটিমিটি আলো, চারিদিকে দেয়াল জুড়ে ছায়া কালো কালো। বাইরে কেবল জলের শব্দ ঝু-প ঝু...প ঝুপ- দস্যিছেলে গল্প শোনে, একেবারে চুপ।

তারি সাথে মনে পড়ে মেঘলা দিনের গান- বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এল বান। । কবে বিষ্টি পড়েছিল, বান এল সে কোথা- শিব ঠাকুরের বিয়ে হলো কবেকার সে কথা! সেদিনও কি এমনিতরো মেঘের ঘটাখানা! থেকে থেকে বাজ- বিজুলি দিচ্ছিল কি হানা! তিন কন্যে বিয়ে করে কী হল তার শেষে! না জানি কোন নদীর ধারে, না জানি কোন দেশে, কোন ছেলেরে ঘুম পাড়াতে কে গাহিল গান- বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদেয় এল বান। । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.