আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাদিয়া..!!

জং ধরা যান্ত্রিক জীবন..সময়ের যাতাকলে মরে গেছে মন..। :( আমি আমার জীবনে 'সাদিয়া' নামে আজ পর্যন্ত কোন অসুন্দরী মেয়েকে দেখিনি। সব সাদিয়া-ই সুন্দরী। কেউ আবার একটু বেশীই সুন্দরী, সুন্দরের সব সীমা এরা ছাড়িয়ে গেছে। তো আমাদের ইউনিতে বিবিএ তে পড়তো এক সাদিয়া।

ভয়াবহ রকমের সুন্দরী। একটা কথা প্রচলিত আছে, সুন্দরী মেয়েদের ক্ষেত্রে নাকি শুধু সুন্দরটাই সম্বল, অন্যান্য আর কোন গুন তাদের মধ্য খুব একটা থাকে না। থাকলে সেটা এতটা গৌণ থাকে যে না থাকারই সমান। কিন্তু সাদিয়া বেলায় সেটা ছিলো ভিন্ন। সে পড়াশুনায় ভালো (অন্তঃত তার রেজাল্ট সে কথাই বলে..যদিও এটা নিয়ে অনেক কান কথা শুনা যায়) ।

সে গান গাইতে পারে। ভাল ছবি আঁকতে পারে। আর তার বুদ্বিও মাশাল্লা অনেক ভালো ছিলো। তার বুদ্বি ভালো এটা জানলাম কি করে? তার অনেক গুলো বয় ফ্রেন্ড দেখে। সাধারণত অনেক সুন্দরীকে দেখা যায় পোশাক পাল্টানোর মত কিছুদিন পর পর বয় ফ্রেন্ড পাল্টায়।

সাদিয়া সেরকম ছিলো না। তার অনেকগুলো বয় ফ্রেন্ড ছিলো এবং সহজে বয় ফ্রেন্ড পাল্টাত না। সে সবগুলোকে নিয়েই চলত। তবে এক সাথে না। সকালে হয়তো একজন।

দুপরে, বিকেলে কিংবা বিকেলের পরে আরেকজন। তার বয় ফ্রেন্ড ম্যানেজমেন্টে এই টাইম শেয়ারিং দেখেই আমরা নিশ্চিত ছিলাম..সাদিয়ার আসলেই অনেক বুদ্বি। সাদিয়ার বয় ফ্রেন্ড সবাই ছিল বেশ বড় লোক। সবার নিজস্ব গাড়ী ছিলো। অবশ্য এতে আমাদের সুবিধাই হয়েছিল।

তার বয়ফেন্ডগুলোর নাম না জানলেও গাড়ীর নামে তাদের নাম দিয়ে দিতাম। যেমন..যে ছেলে টয়োটা করোলা ব্যবহার করত তাকে বলতাম করোলা। একই ভাবে ক্যামরি, নিশান সানি, পাজেরোও ছিলো। কারো দুষ্ট মনে হয়তো প্রশ্ন জাগতে পারে সুন্দরী সাদিয়া কে তার বয় ফ্রেন্ডরা কি নামে ডাকতো? নিশ্চয় সবাই এক নামে ডাকতো না। সুইটা হার্ট, ডার্লিং, হানি, বি, জান, জানু- এইগুলো কি ব্যবহার করতো? না কি অন্য কিছু? দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে..কি নামে ডাকতো সেটা আমরা জানতাম না..আর সাদিয়াও কখনো ঘটা করে সেটা কাউকে জানাইনি।

তবে মাঝে মাঝে দেখতাম ৫' ১১" লম্বা এক জনকে.. সাদিয়া যখন ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে বের হয়ে আসতো সে তখন "ও মাই লাভ! ও মাই লাভ!!" বলে চিৎকার করে এগিয়ে যেতো। আমরা শুধু দুর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে এসব দেখতাম আর দীর্ঘশ্বাস ফেলতাম। সত্যি কথা বলতে কি..সাদিয়ার সাথে অন ক্যাম্পাস অথবা আউট অব ক্যাম্পাসে এই সব নিশান, পাজেরোদের দেখে আমরা প্রায়ই হিংসার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হতাম। মাঝে মাঝে আবার আফসোসও হতো, এই জন্য যে.. না হলাম সাদিয়া, না টয়োটা, নিশান কিংবা পাজেরো। নিদেন পক্ষে টাটা কিংবা মারুতি হলেও একটা সুযোগ নিতে পারতাম।

সব যখন ঠিকঠাক চলছিলো তখন হঠাৎ একদিন ঘঠে এক অঘঠন। ঘঠনাটি ঘঠে ক্যাম্পাসের গেটে সাদিয়ার সকালের প্রেমিক নিশান আর দুপুরে প্রেমিক টয়োটার মধ্যে। নিশান চাইছিলো সাদিয়া আরো কিছুক্ষণ তার সাথে থাকুক। আর টয়োটা এক মিনিটও অপেক্ষা করতে রাজী না। সুতারং যা হবার তাই।

প্রথমে তর্ক বিতর্ক। অতঃপর গালাগালি। গালাগালি শুনে বিনে পয়সায় এরকম রিয়েলিটি শো দেখার জন্য আমার মত আরো অনেকেই গ্যালারিতে আসন নেয়। না..তারা আমাদের নিরাশ করেনি। কিছুক্ষনের মধ্যেই গালাগালির সাথে শুরু হয় হাতাহাতি।

লাথা লাথি। আর দু'জনের মুখেই রণ হুংকার..আয় শালার পো..দেখি সাদিয়া কার- তর না আমার? আর গ্যালারি থেকে তখন কারো কারো তীর্যক মন্তব্য..'ছিনতাইকারীর দশ দিন হলেও পাবলিকের একদিন। এবার তুমি মজাটা বুঝো সাদিয়া। হি হি। ' [ ছবি: নেটে থেকে সংগৃহীত বৈদেশী মডেল এবং অভিনেত্রী।

]  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.