আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তেলেসমাতি কারবার !

ছোট্ট একটা কাঠির গায়ে আগুন জ্বলছে। সার্কাস শিল্পী মো. নাছের এমনভাবে কাঠিটা চেটেপুটে খেতে লাগলেন, ঠিক যেন আগুনের আইসক্রিম! দর্শকের চোখ ততক্ষণে কপালে উঠেছে! এরপরই তিনি যা দেখালেন, দর্শকদের মনে হলো, এবার বুঝি চোখ দুটোর আর কপালেও ঠাঁই হবে না! ছোট ছোট আগুনের গোল্লা মুখে পুরে দিতে লাগলেন! সন্দেহপ্রবণ দর্শকদের মুখ হাঁ করে দেখালেন, মুখের ভেতর আগুন জ্বলছে! তারপর সেই আগুনের গোল্লা কপ করে গিলে ফেলে এমনভাবে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে লাগলেন, যেন আগুনের চেয়ে মজার খাদ্য আর কিছুই হতে পারে না! এমনি চোখধাঁধানো সব খেলা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত আট দিনব্যাপী সার্কাসের অনুষ্ঠানে। শিল্পকলা একাডেমীর মাঠে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রথম চার দিন খেলা দেখায় ‘দি লায়ন সার্কাস’ এবং শেষ চার দিন ‘দি রওশন সার্কাস’। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত খেলা অনুষ্ঠিত হলেও দিনব্যাপীই লেগে ছিল উৎসাহী জনতার ভিড়। খেলার শুরু হয়েছিল ‘কলস ড্যান্স’-এর মধ্য দিয়ে।

সার্কাস-শিল্পী মাথায় পানি ভর্তি কলসি নিয়ে মঞ্চজুড়ে নেচে বেড়ালেন। যেসব দর্শক ‘এ আর এমন কী’ ধরনের দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিলেন, তাদের জবাব দিতেই যেন কলসের ওপর আরও একটা কলস এবং তারও ওপর একটা ছোট বাচ্চাকে বসিয়ে নেচে দেখালেন শিল্পী। গোলাম মাওলা ও আনোয়ার নামের দুজন সার্কাস শিল্পী ছোট্ট একটা চেয়ারে বসা নিয়ে দুজনের ঝগড়াঝাঁটির মধ্য দিয়ে যে হাস্যরস তৈরি করলেন, দর্শকের মুহুর্মুহু হাততালিই বলে দিচ্ছিল, খেলাটা তাদের পছন্দ হয়েছে। তারপর শুরু হলো ‘ওয়াটার ড্রিংক ও মৎস্য ভক্ষণ’-এর খেলা। একজন সার্কাস শিল্পী এক বালতি পানি এনে সেখান থেকে গ্লাসের পর গ্লাস পানি তুলে খেতে লাগলেন।

এক উৎসাহী দর্শককে দেখলাম গুনতে শুরু করেছেন ১, ২, ৩......১৮, ১৯......গুনতে গুনতে দর্শক ক্লান্ত হলেন, পানি খাওয়া আর ফুরায় না! শিল্পী পানি খাওয়া শেষে মুখ দিয়ে ফোয়ারার মতো পানি ছিটাতে লাগলেন। তারপর হলো জ্যান্ত মাছ গিলে ফেলার খেলা! সার্কাস শিল্পী শুধু গিলে ফেলেই ক্ষান্ত হলেন না, মাছগুলোকে যথাস্থানে ফিরিয়েও দিলেন! খেলার এক পর্যায়ে মঞ্চের ওপর ছয়টা চেয়ার বসল, সেই সঙ্গে উপস্থাপিকার ঘোষণা, ‘এখন আসছে জেমী, মন্টি, কাজলী, ডলি, লম্বু ও পল্টু। ’ দর্শকেরা ভাবলেন, নিশ্চই বিশেষ কোনো শিল্পীদের আগমন ঘটছে। দর্শকদের অবাক করে দিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করল ছয়টি ধবধবে সাদা বিলেতি কুকুর। নানা কসরত দেখিয়ে দর্শকের মন মাতালো কুকুরগুলো।

এমনিভাবে চলল মাউথ স্কিল, হ্যান্ড স্কিল, রিং ড্যান্স, স্কেটিংসহ আরও নানা খেলা। ফেরার সময় দর্শকের চোখে-মুখে তৃপ্তি। শুধু যে মন ভরেছে তা না, দীর্ঘদিন পরিচিত জনের কাছে গল্প জুড়ে দেওয়ার মতো একটা বিষয়ও পাওয়া গেছে!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.