আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাকিস্তানি সেনার নিষ্ঠুরতায় নির্বাক বিশ্ব বিবেক! ভিডিও লিঙ্ক...

পাকিস্তানি সেনার নিষ্ঠুরতায় নির্বাক বিশ্ব বিবেক!পাকিস্তানি সেনার নিষ্ঠুরতায় নির্বাক বিশ্ব বিবেক! ‘আমাকে মারবেন না! আমি তো কোনো দোষ করিনি। দোষ করলে আইনের হাতে তুলে দিন। গুলি করবেন না, প্লিজ!’ প্রথমে দুই হাত জোড় করে। তাতেও কাজ হচ্ছে না বুঝতে পেরে রাইফেলধারীদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। কিন্তু তাতেও তাদের পাষাণ মন গলার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা না দেখে সামনে লাফ দিয়ে রাইফেলের গুলি বের হবার ফুটো হাত দিয়ে চেপে রাখার চেষ্টা করে! জীবনের প্রতি মানুষের মায়া থাকে।

সেই মায়ার কারণে পৃথিবীর আলো বাতাসে বেঁচে থাকার কোনো চেষ্টারই ঘাটতি রাখেনি সে। কিন্তু রাইফেলের ট্রিগার চাপার জন্য হাত নিসপিস করতে থাকা সেনার যেন তর সইছিল না। ছেলেটি বেঁচে থাকার জন্য যতোটা বেপরোয়া ছিল, সেনাটি তাকে মেরে ফেলার জন্য তার চেয়ে যেন বেশি বেপরোয়া ছিল। তার ভাবখানা ছিল এমন যেন নিরস্ত্র মানুষ মারার মতো আনন্দ আর কিছুতেই নেই! সে চেপে দিল রাইফেলের ট্রিগার। সবার চোখের সামনেই উবু হয়ে পড়ে গেল তরুণ ছেলেটি।

ফিনকি দিয়ে রক্তের সাথে সাথে ধীরে ধীরে বের হয়ে গেল প্রাণবায়ু। মাত্র কিছুক্ষণ আগের টগবগে তরুণের ধীরে ধীরে মৃতদেহে পরিণত হবার দৃশ্য সে তার সহকর্মীদৈর সাথে দেখল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। দাঁত বের করে হাসতে হাসতে! পাকিস্তানের করাচীতে প্রকাশ্য রাস্তায় আধাসামরিক বাহিনীর চরম নিষ্ঠুরতার কাহিনী এটি। বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনা এখন গোটা বিশ্বের আলোড়িত খবর। পাকিস্তানি গণমাধ্যমও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের ‘মানুষ মারার উৎসব’ -এর এই ভিডিও ক্ষণে ক্ষণে প্রচার করছে।

ঘৃণায় ছি ছি করছে গোটা পাকিস্তানি জনগণ। এই ভিডিও এবং ঘটনার স্থিরচিত্র বিশ্বের প্রায় সব টিভি চ্যানেল ও পত্রপত্রিকা অন্যতম প্রধান খবর হিসেবে প্রচার করছে। সবার মুখে এক প্রশ্ন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাইফেল হাতে পেলেই এমন পৈশাচিক মানসিকতা সম্পন্ন হতে হবে? হতভাগ্য তরুণের নাম সরফরাজ শাহ। সে স্থানীয় পার্কে ছিনতাই করার পায়তারা করছিল এমন অভিযোগে এক ভদ্রলোক তার চুলের মুঠি ধরে আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সামনে নিয়ে ছেড়ে দেয়। ১৮ বছরের এই তরুণ হাজার কাকুতি মিনতি করে তাদের বোঝানো চেষ্টা করে সে নির্দোষ।

কিন্তু কে শোনে কার কথা। গুলির শব্দে হারিয়ে যায় তার মিনতি। তার পরিবারের সদস্যরা স্বজন হারানোর বেদনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তার মা অস্ফুট স্বরে কেবল এক শব্দে অভিশাপ দিতে পেরেছেন সন্তানের খুনিদের। তারপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

সরফরাজের ভাই বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য হবার প্রশ্নই আসে না। আর যদি সত্য হয়, তবুও এভাবে মেরে ফেলার অধিকার কোনো সভ্য দেশের পুলিশ কিংবা সেনাদের থাকতে পারে না। তার জানাজায় অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ। এদিকে করাচী পুলিশ অভিযুক্ত সেনাদের রক্ষায় এগিয়ে এসে সরফরাজকে ছিনতাইকারী প্রমাণে উঠে পড়ে লেগেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রধান বলছেন, তার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে।

ছিনতাই করার কাজে ব্যবহৃত পিস্তল আটক করা হয়েছে। ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু গোটা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি হবার কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি বলেছেন, অভিযুক্তদের রেহাই দেয়া হবে না। তার নির্দেশে ভিডিও দেখে সেই সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে ঘটনার সময় সরফরাজকে ঘিরে রাখা আরো ৫ সেনা সদস্য।

পাকিস্তানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বলেছেন, নিহতের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে। ওই সেনা সদস্যের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের দায় গোটা বাহিনী বহন করবে না। আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আইজাজ চৌধুরীও বলেছেন, অভিযুক্তদের রক্ষার কোনো চেষ্টা করা হবে না। অপরাধ প্রমাণ হলে তার প্রাপ্য সাজা পাবে। এ প্রসঙ্গে হতভাগ্য তরুণের মা বলেছেন, যা ঘটেছে তা ভিডিওতে গোটা বিশ্ব দেখেছে।

অপরাধ প্রমাণ হবার আর কি বাকি আছে! (ঢাকা নিউজ24ডটকম) ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.