আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার জীবনের অসংজ্ঞায়িত ঘটনা: ২য় পর্ব।

Its... my faith, my voic.........। আমার জীবনের অসংজ্ঞায়িত ঘটনা নিয়ে আবার আসলাম আপনাদের সামনে। এটি হলো ২য় পর্ব। ইতিপূর্বে আপনাদের আমি আমার জীবনের একটি অসংজ্ঞায়িত ঘটনার কথা বলেছিলাম, কেমন লেগেছেল জানিনা । এবার আমি আরেকটা অসংজ্ঞায়িত ঘটনা আপনাদের বলব।

আমি আগেই বলেছিলাম যে অসংজ্ঞায়িত ঘটনা যে মাত্রই ভূত-প্রেত বিষয়ক হবে এমন কোন কথা নেই। অনেক ঘটনাই আছে যেগুলো অসংজ্ঞায়িত বটে তবে তাতে ভৌতিক কিছুর ছিটেফোঁটাও নেই। যাই হোক, আমি আর কথা না বাড়িয়ে ঘটনার বর্ণনায় আসি। আমি তখন আমার গ্রামের বাড়িতে অবস্থানরত। ঢাকা থেকে খুব কম গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয়, তাই গ্রামের বাড়ির সময়টার বিন্দুমাত্র অপচয় যেন না হয় সেদিকে আমার বিশেষ দৃষ্টি থাকে।

আত্মীয়-স্বজনদের সাঠে হৈহুল্লোর করেই দিন কাটাতে আমি সদা তৎপর। সারাদিন বিভিন্ন কর্মকান্ড চলার পাশাপাশি রাতেও আমাদের কর্মকান্ড চলতো সমানে। তো একদিন রাত ১১.৩০ এর দিকে আমি এবং আমার নয়ন মামা হাটতে বেড়িয়েছে। গ্রামের বাড়িতে রাত দশটা মানেই হল নরকের নীরবতা, সেখানে রাত সারে এগরোটা হলে তো কথাই নেই। কোথাই একটা জনমানুষের চিহ্ন নেই, চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, সাথে আবার যোগ হয়েছে শীতের রাতের কুয়াসা।

বড়জোড় হাত দুইয়েক সামনের রাস্তা দেখা যাচ্ছে। এমন ঘোর ধরানো গা ছলছমে পরিবেশে হাটতে ভালই লাগছিল। এমন সময় আমার মাথায় একটা বুদ্ধি চাপলো। মামা আর আমি সমবয়সী, কিন্তু কোন এক আত্মীয়তার মারপ্যাচে তিনি আমার মামা হয়েছেন। যাই হোক, আমি মামাকে বললাম,"মামা, চলেন দৌড় লাগাই, দেখি কে জেতে?" যেমন বলা তেমন করা, সাথে সাথেই আমরা দৌড় শুরু করলাম।

মামা প্রথম দিকে এগিয়ে থাকলেও ৫০০ গজের পর আমি মামাকে পেছনে ফেলে দৌড় জিতলাম। মামা হাপাতে হাপতে বললেন," ঠিক আছে এইবার ফাইনাল দৌড়, সোজা বাসার দিকে। যে পৌছেবে আগে সেই বিজয়ী। " আমি বললাম,"চ্যালেন্জ একসেপটেড। " তারপর আবার ওয়ান টু থ্রি এবং বাসার ফিরতি পথে দৌড়।

দু'জনে প্রাণপণে দৌড়াচ্ছি। দিন-দুনিয়ের কোন হুস নেই, এমন সময় আমি ঘন কুয়াশার মাঝ দিয়ে দেখতে পেলাম একজন রিক্সাওয়ালা প্যাসেন্জার নিয়ে যাচ্ছে। রিকসা থাকুক তার মত, আমি আর মামা আমাদের দৌড় অব্যাহত রাখলাম। কিন্তু রিক্সার পাস দিয়ে দৌড়ে যেতে যেতেই ঘটলো বিপত্তি। আমরা দেখলাম রিক্সাওয়ালা প্রথমে আমাদের দিকে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকালো, তার পর বিচিত্র ভাষায় চিৎকার করে রিক্সা থেকে লাফিয়ে নেমে কাঁপতে-কাঁপতে রাস্তার পাশের শিমুল গাছের গোড়ায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করলো।

আর রিক্সার প্যাসেনজার একজন প্রবীণ মানুষ, তিনি বিক্সায় বসে বিস্মিত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। আমার আর মামার কাছে ব্যাপারটা তেমন ভাল ঠেকলো না, তাই আমরা না থেমে আমাদের গতি বাড়িয়ে বাসার দিকে পালিয়ে হাপ ছেড়ে বাঁচলাম। পড়দিন সকালে শুনি হইহই কান্ড রইরই ব্যাপার, শিমুল গাছের কাছে গত রাতে নাকি কে বা কারা জ্বিন দেখেছে, সেই জ্বিন নাকি বিশাল লম্বা, মুখে চাপ দাড়ি, ঘোড়ায় চড়ে নাকি বিদ্যুৎবেগে ছুটে গেছে। পড়ে শুনলাম সেই রিক্সাওয়ালা এবং প্রবীণ প্যাসেন্জার ছাড়াও আরো অনেক প্রত্যক্ষদর্শী আছেন যাদের কাছে আমি সেই জীনের চেহারার বর্ণনা শুনলাম, যা আমার সাথে অনেকটাই মিলে যায়। যাহোক এটাই হলো আমার সেই অসংজ্ঞায়িত ঘটনা।

এটাকে "আমার অসংজ্ঞায়িত ঘটনা" না বলে "রিক্সাওয়ালার অসংজ্ঞায়িত ঘটনা" বললে মনেহয় সঠিক নামকরণ করা হয়। ((( আমার আগের লেখা অসংজ্ঞায়িত ঘটনা: ১ম পর্ব পছন্দ হলে পড়ে নেবেন)))  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.