আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাল্টে যাচ্ছে বিদ্যুত ব্যাবস্থা -- পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশ

প্রতিমাসেই যোগ হচ্ছে নতুন বিদ্যুত ৫ মাসে ৯শ' মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ছে। বছরের প্রথমের তুলনায় এখন ৯০০ থেকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন বেশি হচ্ছে। দেশে বিগত কয়েক বছরের বিদ্যুত উৎপাদন চিত্র থেকে জানা যায়, ধারাবাহিকভাবে অতীতে কোন দিন এভাবে বিদু্যত উৎপাদন বৃদ্ধি পায়নি। সরকারের পরিকল্পনা যথাসময়ে বাসত্মবায়ন হলে এভাবে প্রত্যেক মাসেই বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। জানুয়ারি থেকে মে পাঁচ মাসের বিদ্যুত উৎপাদন চিত্র বিশেস্নষণ করে দেখা যায়, বছরের শুরুর দিন পহেলা জানুয়ারি বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছিল ৩ হাজার ৭৪৯ দশমিক ৫ মেগাওয়াট।

আর মে মাসে এসে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৬৮৯ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিদু্যত উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফেব্রম্নয়ারিতে জানুয়ারির তুলনায় গড়ে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদু্যতের উৎপাদন বেশি হয়েছে। জানুয়ারিতে বিদু্যতের গড় উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ৬৩৬ দশমিক ৫১ মেগাওয়াট। ফেব্রম্নয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯১১ দশমিক ৩৪ মেগাওয়াট।

মার্চে মোটামুটি ফেব্রম্নয়ারির তুলনায় গড় উৎপাদন ১০০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পায়। মার্চে গড় উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৯৩ দশমিক ৯৩ মেগাওয়াট। মার্চের তুলনায় এপ্রিলের উৎপাদন বৃদ্ধি ছিল লৰ্য করার মতো। এ মাসে গড়ে বিদু্যতের উৎপাদন ৩৬০ মেগাওয়াট বেড়েছে। এপ্রিলে বিদ্যুত উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৪৫৩ দশমিক ৯৩ মেগাওয়াট।

মে মাসে এসে উৎপাদন আরও প্রায় ১০০ মেগাওয়াট বেড়েছে। বিদু্যত বিভাগ সূত্র বলছে, এখন ১ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট বিদু্যত কেন্দ্র সংস্কার করার জন্য বন্ধ রয়েছে আর গ্যাস এবং জলের সমস্যার কারণে আরও ২৬১ মেগাওয়াট বিদু্যত কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। সংস্কারের উদ্যোগ গতিশীল হলে আরও অনত্মত ৫০০ মেগাওয়াট বিদু্যত উৎপাদন বেশি হতো। গত কয়েক বছরের বিদু্যত উৎপাদন চিত্রে দেখা যায়, গত বছর ২০১০ এর জানুয়ারিতে গড় বিদু্যত উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৯ মেগাওয়াট আর ডিসেম্বরে বিদু্যত উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ৫৫৮ মেগাওয়াট। গত বছর গ্রীষ্মে বিদু্যত কেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করে উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।

এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যনত্ম গ্যাস রেশনিং এবং সার কারখানা বন্ধ করার মতো উদ্যোগ নিয়েও উৎপাদন গড়ে ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট এর চেয়ে বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। এর আগের বছর ২০০৯ এ বিদ্যুত উৎপাদনের একই অবস্থা লৰ্য করা গেছে। ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হয়েছে। তবে ওই বছর শুধু সেপ্টেম্বর মাসে উৎপাদন হয়েছে গড়ে ৪ হাজার ৭৯ মেগাওয়াট। ২০০৮ সালের অবস্থাও একই বছরের শুরম্ন থেকে শেষ পর্যনত্ম গড়ে প্রতিমাসে ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন হয়নি।

পিডিবি সূত্র জানায়, আগে বিশেষ পরিস্থিতিতে (গ্রীষ্ম, রমজান) বিদু্যত উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে নানা পদৰেপ গ্রহণ করতে হতো। এখন বেশ কিছু নতুন বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসায় পরিস্থিতির বদল হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদু্যত উৎপাদনের ক্ষমতা অর্জন করেছে দেশ। নতুন বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে এলে বছরের শেষ নাগাদ এ ক্ষমতা আরও ১ হাজার মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশে এখন বাণিজ্যিক উৎপাদনের অপেৰায় রয়েছে ৬টি বিদু্যত কেন্দ্র।

সবগুলো বিদু্যত কেন্দ্রই পরীক্ষা মূলকভাবে উৎপাদন করছে। কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে এলে আরও ৩৬২ মেগাওয়াট বিদু্যত উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সাধারণত বিদ্যুত কেন্দ্র পরীৰামূলক উৎপাদন শুরম্নর ৭ থেকে ১৫ দিন পরে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরম্ন করে। সে হিসেবে চলতি মাসের শেষে অথবা জুনের প্রথমে উৎপাদন আরও ৩৫০ মেগাওয়াটের মতো বৃদ্ধি পাবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছর আরও ১৭টি বিদু্যত কেন্দ্রর উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে।

এসব কেন্দ্র উৎপাদনে এলে ১ হাজার ১২০ মেগাওয়াট উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। নির্ধারিত সময়ের একটু হেরফের হলেও সবগুলো কেন্দ্রকে এ বছরের মধ্যে উৎপাদনে আসার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে। যেসব কেন্দ্রর উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে সেগুলো হচ্ছে, ** মেঘনাঘাট-১০০ মেগাওয়াট ** আশুগঞ্জ-৫৩ মেগাওয়াট ** জুলদা (কর্ণফুলী)-১০০ মেগাওয়াট ** আমনুরা-৫০ মেগাওয়াট ** আশুগঞ্জ-৫০ মেগাওয়াট ** কেরানীগঞ্জ-১০০ মেগাওয়াট ** সিদ্ধিরগঞ্জ-১০০ মেগাওয়াট ** কাটাখালি-৫০ মেগাওয়াট ** নওয়াপাড়া-১০৫ মেগাওয়াট ** মেঘনাঘাট-১০০ মেগাওয়াট ** ফরিদপুর পিকিং-৫০ মেগাওয়াট ** গোপালগঞ্জ পিকিং-১০০ মেগাওয়াট ** দোহাজারি পিকিং-১০০ মেগাওয়াট ** হাটহাজারী পিকিং-১০০ মেগাওয়াট ** দাউদকান্দি পিকিং-৫০ মেগাওয়াট ** বাঘাবাড়ী পিকিং-৫০ মেগাওয়াট ** বেড়া পিকিং-৭০ মেগাওয়াট এবং ** গাজীপুর-৫০ মেগাওয়াট এবার বেসরকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্রর পাশাপাশি ৭টি সরকারী বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারী খাত এবং সরকারী খাতের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি হবে। এছাড়া সান্ধ্যকালীন বিদ্যুৎ চাহিদা মোকাবেলায় সরকার যে ৮৪০ মেগাওয়াট বিদু্যত উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছিল তার মধ্যে ৭টি বিদু্যত কেন্দ্র এ বছর উৎপাদনে আসছে।

এতে করে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (সন্ধ্যায়) বিদু্যত উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং লোডশেডিং কমে আসবে  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.