আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হলিউডের পারিশ্রমিক দৌড়

চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।

ইত্তেফাকের লিংক: Click This Link হলিউডের ছবির ভক্ত, অথচ রিজ উইদারস্পুন নামটা শোনেননি—এমন মানুষ পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। যদি কেউ বলেন তাকে চেনেন না, তবে কিছুটা লজ্জায়ই পড়তে হবে, কারণ জুলিয়া রবার্টস-এর পর তিনিই একমাত্র নায়িকা, যিনি সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নিয়ে রেকর্ড করেছেন। জুলিয়া রবার্টস তার ‘মোনালিসা স্মাইল’ ছবিটির জন্য পেয়েছিলেন ২৪ মিলিয়ন ডলার। আর এখন রিজ উইদারস্পুন তার ‘আওয়ার ফ্যামিলি ট্রাবল’ ছবিটির জন্য পেতে যাচ্ছেন ২৯ মিলিয়ন ডলার।

ছবিটির কাজ এখনও শেষ হয়নি, চলতি বছরের শেষদিকে ছবিটি মুক্তি পাবে বলে জানা গেছে। খবরটা শোনার পরে সবার মনে প্রথমে যে প্রশ্নটি জাগবে, সেটি হলো—কী এমন মুভি যে এত পারিশ্রমিক পেতে যাচ্ছেন রিজ উইদারস্পুন? এই প্রশ্নের উত্তরে ছবির কাহিনি কিছুটা উল্লেখ করা যেতে পারে, বাকিটা নির্ভর করবে ছবিটি দেখার পরে দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার উপর। ছবির কাহিনিটি এমন, প্রথম মা হচ্ছে এমন এক নারী সারাক্ষণ ঘরেই থাকছে। সে ঘরে এমন সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটে চলে, যার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না। তার কেবলই মনে হতে থাকে, কোনো এক অশুভ আত্মা তার সন্তানের ক্ষতি করতে উঠেপড়ে লেগেছে।

ধীরে ধীরে সে জানতে পারে ‘ঘণ্টা ডাইনি’র উপকথা। সে উপকথায় বিশ্বাস জন্মে যায় তার। হলিউডের ছবিগুলোর ধারা অনুযায়ী ছবির এই কাহিনিসংক্ষেপের ওপর আস্থা রাখাটা মনে হয় বোকামি হবে। কারণ, ছবির কাজ এগোতে এগোতে এত ধরনের পরিবর্তন হয়ে যায় যে, শেষ পর্যন্ত যা দাঁড়ায় তার সাথে প্রথম খসড়া কাহিনি বা চিত্রনাট্যের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে ছবির নামটাই পাল্টে যেতে পারে।

‘আওয়ার ফ্যামিলি ট্রাবল’ নামটা নাকি ভয়াল ছবির জন্য ঠিক যুতসই হচ্ছে না। ইউনিভার্সাল স্টুডিওতে চিত্রনাট্যকার ডন উইন্সটন রিজকে বিশেষভাবে মাথায় রেখে চূড়ান্ত চিত্রনাট্য কাটাছেঁড়া করার কাজ করছেন। এর আগে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্রিশ্চিয়ান রিসি আর হেইডেন ক্রিশ্চিয়ানসনের সাথে করা ‘পেনিলোপ’ প্রদর্শিত হয়েছে কান ফিল্ম ফেস্টিভালে। ফ্যান্টাসি ধরনের এ ছবিতে তার ভূমিকা অবশ্য প্রধান নয়, সহঅভিনেত্রীর। অক্টোবর পর্যন্ত ছবিটি বিশ্বজুড়ে ব্যবসা করেছে প্রায় ২০.৮ মিলিয়ন ডলার।

আর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এসেছিল ‘ফোর ক্রিসমাসেস’। রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের এ ছবিতে প্রধান চরিত্র কেট-এর ভূমিকায় রিজ অসাধারণ অভিনয় করেছেন বলে আলোচনা হয়েছিল। এ ছাড়া ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া অ্যানিমেশন ফিল্ম ‘মনস্টার ভার্সেস এলিয়েন্স’ ছবিতে একটি চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন রিজ। মাত্র ৩৫ বছর বয়সী রিজ রীতিমতো অস্কার জেতা অভিনেত্রী। ’০৬ সালে ‘ওয়াক দ্য লাইন’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর অস্কার ক্রেস্টটা তার হাতেই উঠেছিল।

ওই একই চরিত্রের জন্য তিনি পেয়েছেন গোল্ডেন গ্লোব, বিএফটিএ, স্ক্রিন অ্যাক্টর গিল্ড ট্রফি ইত্যাদি। অল্পবয়সী প্রতিভাবান এই অভিনেত্রীর জন্ম ২২ মার্চ ১৯৭৬, লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্সে। লুইজিয়ানার নিউ অর্লিন্সের তত্কালীন সাউদার্ন ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে রিজ উইদারস্পুনের জন্ম হয়। সেসময় তার পরিবার নিউ অর্লিন্সে থাকত, কারণ, তার বাবা সে সময় টুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের ছাত্র ছিলেন। তার দাদির উত্সাহে ছোটবেলা থেকেই পড়েছেন প্রচুর বই।

ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। চলচ্চিত্রে এসে সাফল্যের হাত ধরে ফেলেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ছবি থেকেই। পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে ‘দ্য ম্যান অন দ্য মুন’-এর একটি ছোট চরিত্রের জন্য অডিশন দিতে গিয়েছিলেন ১৫ বছরের রিজ। কিন্তু পরিচালক তাকে দেখে এতই পছন্দ করে ফেলেন যে, সরাসরি নিয়ে নেন প্রধান চরিত্রে। সে ছবিতে অভিনয় করে রিজ জিতে নেন শ্রেষ্ঠ তরুণ অভিনেত্রীর পুরস্কার।

তারপর থেকে একের পর এক অভিনয় করেছেন বিচিত্র সব চরিত্রে। ‘আমেরিকান সাইকো’, ‘লিগ্যালি ব্লন্ড’ আর তার সিক্যুয়েল ‘লিগ্যালি ব্লন্ড টু’-এর মতো সফল সব ছবি শেষ করে ২০০৫ সালে পেয়েছিলেন ‘ওয়াক দ্য লাইন’-এর প্রস্তাব। কিংবদন্তী গায়ক জনি ক্যাশ-এর জীবন নিয়ে তৈরি ছবিতে তার ভূমিকা ছিল ক্যাশ-এর তরুণ বয়সের প্রেমিকা জুন কার্টার-এর। জুন নিজেও একজন শিল্পী। ছবিতে অভিনয়ের জন্য রিজকে ছ’মাস ধরে গান শিখতে হয়েছিল।

জনি ক্যাশ ব্যক্তিগতভাবে রিজকে ওই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অনুমোদন দিয়ে গিয়েছিলেন। অবশ্য রিজ-এর সাথে তার কখনো দেখা হয়নি। তার মৃত্যুকালে রিজ ব্যস্ত ছিলেন ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’ ছবির শুটিং নিয়ে। জনি ক্যাশ-এর অন্যতম জনপ্রিয় একটি গানের শিরোনামই হচ্ছে ‘আই ওয়াক দ্য লাইন’। ক্যাশ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জ্যাকুইন ফিনিক্স।

সে ছবিতে অভিনয়ের জন্য রিজ নিয়েছিলেন ১৫ মিলিয়ন ডলার। তার পর থেকেই রিজ উঠে পড়েন খ্যাতির চূড়োয়। তার ব্যক্তিগত জীবনের কথা বলতে গেলে বলা যায়, তিনি খুবই সাধারণ একজন। বিয়ে হয়েছিল আমেরিকান অভিনেতা রায়ান ফিলিপের সাথে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। অনেক তিক্ততার পর ২০০৬ সালের অক্টোবরে বিচ্ছেদের চূড়ান্ত ঘোষণা দেন দুজনে।

ঘোষণার ঠিক এক বছর পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। মাঝের সময়টা দু’সন্তান—আভা আর ডিকনকে কাছে রাখতে তারা দুজন আইনি লড়াই নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ২০০৭ সালের পুরোটা জুড়েই শোনা যাচ্ছিল রিজ আর তার ‘রেনডিশন’ ছবির নায়ক জেইক গিলেনহাল-এর মধ্যকার রোমান্সের সম্ভাবনার কথা। কিন্তু দুজনে বরাবরই উড়িয়ে দিয়েছিলেন সে সব ‘কানকথা’ বলে। কিন্তু ফিলিপ-এর সাথে বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হবার পরে রিজ-জেইককে দেখা গিয়েছে আরও অনেক অন্তরঙ্গভাবে।

বর্তমানে জুলিয়া ও রিজের পারিশ্রমিকই সবার উপরে। ২য় স্থানে ধরা যেতে পারে নিকোল কিডম্যানকে। তিনি প্রতি ছবিতে নেন ১৬ থেকে ১৭ মিলিয়ন ডলার। এর পর সিরিয়ালে আছেন, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ও ক্যামেরুন ডিয়াজের মতো তারকারা।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.