আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৎস্য বিষয়ক ফেলাসি

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

মূলত বাজার শিল্পকে চারভাগে ভাগ করা যায়। মাছের বাজার, মাংসের বাজার, সবজীর বাজার এবং মুদীর বাজার। এর মধ্যে মাছ ও মাংস বাই-উইকলি, সবজী উইকলি আর মুদী মানথলী। আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন কাজটি হচ্ছে মাছ কেনা। প্রায় আশৈশব মাছ কিনতে গিয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মাছের নাম গুলিয়ে ফেলি একমাত্র চিংড়ি মাছ ছাড়া।

তবে ইদানিং চিংড়ি মাছের নানান রকমের চেহারা দেখে বিভ্রান্ত। তদুপরি মাছের দাম মনে রাখাও এক সুকঠিন প্রয়াস। মাসে দুইবার মাছ কেনার হাঙ্গামা করতে হয় বলে প্রতিবারই আমার নতুন করে মাছের নাম ও চেহারার সাথে মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় এবং পূর্বের দাম মনে করতে গিয়ে গলদঘর্ম হতে হয়। সাধারণত ছোট মাছের ডিমান্ড বাজারে সবচেয়ে বেশী। এক্ষেত্রে মাছ পছন্দের বিষয়ে নারী ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে অনুমান করি।

সাধারণত পুরুষেরা বড় মাছ এবং নারীরা ছোট মাছ খেতে পছন্দ করে। বড় মাছ কেনা যতটা সহজ, ছোট মাছ কেনা ততোধিক কঠিন। ছোট মাছের ভিতরে সহজ কেনা কাচকি মাছ, কিন্তু পাশে যদি মলা, ঢেলা এবং নানাপদের মাছের মিশেল গুরা মাছ থাকে তার মধ্যে থেকে কাচকি মাছ খুঁজে বের করা মুশকিল হয়ে পড়ে। ফলে মাছওয়ালার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে অথবা পাশের ক্রেতার কথোপকথনের থেকে মাছ চেনে নিতে হয়। তবে ইদানিং আমি কাচকি মাছ চিনতে পারি, যদিও এর ভিন্ন সাইজ দেখলে আবার গুলিয়ে ফেলি।

এছাড়া বাতাসী, বাশপতি মাছ চেনাও মুশকিল। তেলাপিয়া, কৈ, টেংরা, গুইশা, বাইলা, দরগি মাছ মাঝারি সাইজের এবং এর চেহারা সুরত সহজেই একটা থেকে আলাদা করে ফেলা যায় বলে সহজেই মনে থাকে। এসব মাছ চিনতে আমার তেমন কোনো অসুবিধা হয় না। তুলনামূলকভাবে বড় মাছ কেনা অনেক সহজ। রুই, বোয়াল, ইলিশ, কাতাল, পাংগাস কেনার জন্য মাছওয়ালার উপরে ট্রাস্ট করা ছাড়া আমার কোনো উপায় থাকে না।

ফলে একজন মাছওয়ালাকে আমি প্রায় অন্ধের মত বিশ্বাস করি। মাছ চেনা তাও যেভাবে না হয় হলো, কিন্তু দরদামের চিত্র আরো জটিল, বাড়ছে না কমছে অথবা ঠকছি কিনা এসব বোঝা রীতিমত গবেষণার বিষয়। যেমন বোয়াল মাছ অনেক কমেছে বলে যে দাম চাইলো সেটাও আমার কাছে অনেক বেশী মনে হলেও কিছু করার নেই। কারণ শেষ হয়তো কিনেছি দুইমাস আগে। সে সময়ের দাম মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক।

বড় মাছ দরদাম করতে গিয়ে সাধারণত ক্রেতারা কোন জায়গার মাছ, ফ্রিজিং নাকি বরফ দেয়া, মাছ টিপেটুপে দেখা ইত্যাদি করে থাকে। আমি বেশ গভীর মনযোগ সহকারে এসব দেখেও মাছের নাড়ি নক্ষত্র বুঝতে পারি না। মাছের বাজারের শিল্পকর্মটি সুচারুভাবে সম্পন্নের পরে আমার সংকট শুরু হয় মাছ খাওয়ার সময় নামটি আবার মনে রাখা। যে মাছ কিনেছি সেটা রান্নার পরে আরেক ভিন্ন চিত্র। সকল ছোট মাছ রান্নার বিভিন্ন প্রণালী এবং একই মাছও আবার নানাভাবে রান্নার দৃশ্য দেখা যায়।

ফলে মাছ খেতে গিয়ে আবার সে মাছের নাম জিজ্ঞেস করা মাছের জন্য মানহানিকর হবে ভেবে চেপে যাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.