আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুড়ের রসে বাঙ্গি’র স্বাদ

আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি।

সিলেটিদের কাছে অতি সমাদৃত একটি ফল হচ্ছে বাঙ্গি। বাঙ্গির ঘ্রান এতোই মধুর যে মধুময় বাঙ্গির গন্ধে বিভোর হয়ে উঠে আশপাশের এলাকা। তবে ঘ্রাানের তুলনায় বাঙ্গির স্বাদ অনেকটাই কম। তাই গুড়ের রসে কিংবা চিনির সিরা মিশিয়ে বাঙ্গির স্বাদ উপভোগ করতে হয়।

তবে গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে গুড়ের রসে বাঙ্গি খাওয়ার মজাই আলাদা। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে সিলেটে এ ফলের কদর খুব বেশি। তাই এসময় শহরে ও গ্রামে বাঙ্গি কেনাবেচায় হিড়িক পড়ে যায়। বাঙ্গির দানা এতো মিহি যে মুখে দিলে বুঝাই যায় না। বাঙ্গি যখন পাঁকে তখন একসাথে সবগুলো পাঁকতে শুরু করে।

এটা আধাপাঁকা অবস্থায় জমি থেকে তুলে নিতে হয় কেননা পাঁকা অবস্থায় বাঙ্গি ফেঁটে যায়। তবে ফাঁটা বাঙ্গির খাওয়ার স্বাদ ও মজাই আলাদা। বিভিন্ন অঞ্চলে বাঙ্গির চাষাবাদ করা হলেও বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলায় এ ফলের আবাদ কিছুটা বেশি। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ায় বাঙ্গি চাষে আশানুরুপ ফলন পাওয়া যায়। তবে সিলেটে অধিকাংশ বাঙ্গি আসে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকে।

এদিকে মাধবপুর উপজেলার মনতলা ইউনিয়নের কমলপুর, কৃষ্ণপুর, দেবীপুর, দূর্গানগর, শ্যামনগর, হরিণতলা, কানতাপুর ইত্যাদি বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা বাঙ্গি চাষ করে লাভবান হয়ে উঠেছেন। মাঠ থেকে বাঙ্গি তুলে এনে চাষিরা মাধবপুরের ত্রৈমূহনা (তেমুইন্না) বাজারে চাঁক জমায়। সেখানে চাষিরা তা পাইকারের কাছে খুব সস্তা দামে বিক্রি করেন। পরে পাইকাররা তা টুকরি ভর্তি করে বিভিন্ন মূল্যে বিক্রি করে থাকেন। প্রতি টুকরিতে থাকে ১০০ টি বাঙ্গি।

পাইকারের কাছ থেকে আবার তা সাধারণ বিক্রেতারা প্রতি টুকরি হিসেবে কিনে আনে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় এবং প্রতিটি বাঙ্গি বিক্রি করে ২০ থেকে ৫০ টাকায়। শ্রীমঙ্গলে বাঙ্গি বিক্রেতা মরমচাঁন বিবি, সাবিহা বেগম, জাহাঙ্গীর, নুরুল হক, জাকির, কাওছার প্রমুখের সাখে আলাপ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাঙ্গি ব্যাবসায়িরা এ সময় প্রতিদিন খুব ভোরে মাধবপুর বাজারের ত্রৈমূহনায় (তেমুন্নায়) জড়ো হয় পাইকারদের কাছ থেকে বাঙ্গি কেনার জন্য। যে যত দ্রুত সম্ভব বাঙ্গি ক্রয় করে নিয়ে যায় যার যার গস্তব্যে। ট্রেনে কিংবা বাসে চলাচল করে এ সকল ব্যসায়িরা টুকরী ভর্তি বাঙ্গি নিয়ে ছুটে চলে সিলেটের বিভিন্ন প্রান্তে।

অধিকাংশ েেত্র পুরুষদের পাশাপশি নারীদেরও বাঙ্গি ব্যবসার সাথে জড়িত থাকতে দেখা যায়। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে এরা প্রত্যেকে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা রোজগার করে বাড়ি ফিরেন। বলতে গেলে বছরের এই সময় বাঙ্গি চাষ করে কিংবা বাঙ্গির ব্যবসা করে বেশ লাভবান হয়ে উঠেছে মনতলার বাসিন্দারা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।