আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঠমোল্লাদের কবলে বাংলাদেশ



রাজার প্রশ্নের জবাবে মোল্লা নাসিরুদ্দিন হোজ্জা বললেন, মহারাজ! আপনার রাজ্যে কবিরাজের সংখ্যা বেশী। উত্তর মনঃপূত না হওয়ায় রাজা চরমভাবে ক্ষেপে গেলেন হোজ্জার উপর। অসুস্থতার ভান করে দু'দিন পর রাজদরবারে এসে রাজাকে মোল্লা বললেন, হুজুর আমার গোস্তাখি মাফ করবেন, জ্বর-সর্দি গত দু'দিন আপনার ছোহব্বত থেকে আমাকে বঞ্চিত রেখেছে। কত দাওয়া খাচ্ছি কোন কাজ হচ্ছে না। রাজা তাকিয়ার হেলান ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসে বললেন, আরে মোল্লা জ্বর-সর্দি কোন বিমারই না, তুলসি পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেয়ে দেখো একদিনেই আরাম বোধ করবে ইনশাল্লাহ।

নাসিরুদ্দিন হোজ্জা বাঁকা হাসি হেসে বললেন, মহারাজ! শেষতক আপনিও কবিরাজের পেশায় নাম লেখালেন! দরবারে আসার পথে প্রায় সকল পথিকই আমাকে একটি করে দাওয়া দিয়েছে এমন কি আপনার দরবারের পাইক-পেয়াদা-মালি সবাই। হুজুর! সে জন্যেই সেদিন বলেছিলাম আপনার রাজ্যে কবিরাজ বেশী। জনাব হোজ্জা যদি আজ বেঁচে থাকতেন আর আমাদের সোনার বাংলাদেশের রাজার মেয়ে বর্তমান উজিরে আ'লা যদি প্রশ্ন করতেন, তার দেশে কোন পেশার লোক বেশী তাহলে মোল্লা দু'নয়ন বন্ধ করে বলতেন, মুহতারামা আপনার দেশে কাঠমোল্লা বেশী। হয়তো বিজ্ঞ হোজ্জা বিনয়ের সাথে বলতেন, উজিরে আ'লা আপনি হলেন সদরে কাঠমোল্লা! এই কাঠমোল্লাদের কেউ রাম, কেউ বাম আবার কেউ রাম-বাম মিস্কড্। এরা কেউ মাদ্রাসায় পড়েনি বরং মাদ্রাসা পড়ুয়া দেখলে এদের গা জ্বালা করে।

আজানের মধুর ধ্বনি এদের সহ্য হয় না কিন্তু আজ এসব কাঠমোল্লারাই ফতোয়া দিচ্ছে নারী নীতিমালায় নাকি কোরান-সুন্নাহ বিরোধী একটি শব্দ পর্যন্ত নেই! অথচ এদেশের হক্কানী আলেম-ওলামাগণ বলছেন, নারীনীতিতে কোরান-সুন্নাহ বিরোধী ধারা আছে যা সংশোধন করা একান্ত জরুরী নইলে ঈমানের দাবী বাতুলতা মাত্র। পনের-ষোল বছর মাদ্রাসায় পড়ে যারা কোরান-সুন্নাহ বুঝেছেন, কোরান-সুন্নার উপর আমল করছেন তারা নাকি কোরান-সুন্নার নামে মিথ্যাচার করছেন আর যারা জীবনে কোরান বুঝেন নি, সুন্নাহ কী জিনিস চোখে দেখেন নি তারা আজ কোরান-সুন্নার রক্ষক সেজেছেন! বুঝেন ঠেলা! বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে এই কাঠমোল্লারা আলেম-ওলামাগণকে গালিগালাজ করছেন এবং নারী নীতিমালার পক্ষে দরাজ গলায় ফতোয়া দিচ্ছেন। হাবভাব দেখে মনে হয় এরা একেকজন কোরান-সুন্নাহ বিশেষজ্ঞ। অথচ এই বিশেষজ্ঞরা সারাজীবন ইসলাম, ইসলামী কৃষ্টি-কালচার দুনিয়া থেকে মুছে ফেলতে কোশেশ করেছেন এবং এখনো পর্দার আড়ালে কোশেশ করে যাচ্ছেন। ভন্ডামী আর কাকে বলে? এই ভন্ড কাঠমোল্লাদের ধৃষ্টতা এখন চরম পর্যায়ে।

দেশের ধর্মপ্রাণ সরল মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে এরা নানান কৌশল অবলম্বন করছে। জনগণকে ধোকা দেয়ার জন্যে কিছু লেবাসধারী ভুয়া হুজুর মাল-পানি দিয়ে খরিদ করে নিয়েছে। এই লেবাসধারী গুটিকয়েক হুজুর ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার মতো ইহুদি-নাসারা এবং রাম বেনিফিসিয়ারীদের পিছনে দাড়িয়ে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করছে। দুনিয়ার সামান্য মাল-পানির জন্য কোরানের বিরুদ্ধে তারা আজ শয়তানী শক্তির লেজুড় বৃত্তি করছে। এই ঘৃণ্য লেবাসধারী জ্ঞানপাপী হুজুরদের অন্তরাত্মা কি আল্লাহর ভয়ে একবারও কেঁপে উঠে না? ক্ষমতাসীন কাঠমোল্লারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করে নারীনীতির পক্ষে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।

তারা কি ভাবছেন ক্ষমতার জোরে কোরান-সুন্নার বিরোধী আইন বা নীতি প্রনয়ণ করে পার পেয়ে যাবেন? নীমে ডক্টর খতরে জান / নীমে মোল্লা খতরে ঈমান। এ কথাটিকে আমরা বাংলা ভাষায় বলি অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্কর। কোরান-সুন্নার যৎসাম্য জ্ঞানের অধিকারী এই নীমে মোল্লা বা কাঠমোল্লারা কোরান-সুন্নার অপব্যাখ্যা করছেন। সরকারের বিভিন্ন পদে থেকে কাঠমোল্লারা ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। হক্কানী আলেম-ওলামাগণকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছেন।

অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে শ্রদ্ধাভাজন ওলামা-মাশায়েখগণকে নাজেহাল করছেন। তবে অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে ওলামা-মাশায়েখগণকে কোরান-সুন্না রক্ষার আন্দোলন থেকে বিরত রাখা যাবে না। কারণ ভয়-ভীতি দেখিয়ে, চোখ রাঙ্গিয়ে কোরান-সুন্নার সিপাহীদেরকে দমিয়ে রাখা যায় না। বিশ্ব ইতিহাস এমন সাক্ষ্য দেয় না। হুমকি-ধমকি লগি-বৈঠা আর গুম-হত্যা ভয় করে না আলেম-ওলামা তৌহিদী জনতা।

প্রাণের বিনিময়ে করবে রক্ষা আল্লার শরীয়া হবে শহীদ রবে জিন্দা এ ধরায় মরিয়া।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।