আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃত্যু : মানব মনের স্বাভাবিক প্রশ্ন ! এর উত্তর কোথায় ?

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.
এ দুনিয়ার জীবনটাই কি একমাত্র জীবন , না এরপরও কোন জীবন আছে ? মানব মনের এ এক স্বাভাবিক প্রশ্ন এবং সকল যুগেই এ প্রশ্নে দ্বিমত হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে দুই বিপরীতমুখী সমাজ ব্যবস্হা গড়ে উঠেছে । মানুষ ভূমিষ্ঠ হবার পর কিছূকাল দুনিয়ায় অবস্হান করতঃ বিদায় গ্রহণ করে । এ অবস্হানকাল কারো কয়েক মুহূর্ত মাত্র । কারো বা কয়েক দিন , কয়েক মাস , কয়েক বছর । আবার কেউ শতাধিক বছরও বেঁচে থাকে ।

কেউ আবার অতি বার্ধক্যে শিশুর চেয়েও অসহায় অবস্হায় জীবনযাপন করে । বেচে থাকাকালীন মানুষের জীবনে কত আশা-আকাংখা , কত রঙিন স্বপ্ন । কারো জীবন ভরে উঠে অফুরন্ত সুখ স্বাচ্ছন্দে আর কারো জীবনে নেমে আসে একটানা দুঃখ-দৈন্য , অপরের অবহেলা-অত্যাচার ও নির্যাতন । অবশেষে একদিন সবাইকে চলে যেতে হয় এ দুনিয়া ছেড়ে । রাজা-প্রজা, ধনী-গরীব , সাদা-কালো সবাইকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয় ।

মনে করুন, এক ব্যাক্তি শতাধিক মানব সন্তানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে । তার অত্যাচারে শত শত পরিবার ধ্বংস হয়েছে । টাকা দিয়ে ও ক্ষমতার জোরে আইনের হাত থেকে বেচে হেসে খেলে জীবন পার করে দিল । তার তো এ অন্যায়ের কোন বিচার হলো না ? সে তো জীবনে সুখ ভোগ করে গেল । আর যারা অসহায়ভাবে মৃত্যু বরণ করল তারা তো জীবনে কিছুই পেল না ।

উপরোক্ত ব্যাক্তিদের জীবনের জের যদি মৃত্যুর পরেও টানা হয় এবং কোন সর্বশক্তিমান সত্তা যদি তাদের উভয় শ্রেণীকে যথাযোগ্য দন্ডে দন্ডিত ও পুরস্কৃত করেন - যাদের যেমনটি প্রাপ্য - তাহলে কি সত্যিকার ন্যায় বিচার হয় না ? বিবেক কে প্রশ্ন করুন এছাড়া আর কি উপায় আছে ? পরকালে অবিশ্বাসীদের বিশ্বাস বা ধারণা হলো মৃত্যুর পরে আর কিছুই নেই, তাই কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবেনা । দুনিয়ার জীবনে তারা যদি চরম লাম্পট্য ও যৌন অনাচার করে , তার যদি দস্যু ও লুন্ঠনকারীও হয় তবু তাদের ভয়ের কোন কারণ নেই । স্রষ্টা ও পরকাল বিশ্বাস করলেই প্রবৃত্তির মুখে লাগাম দিতে হবে । কারণ পরকারে শাস্তির ভয় আছে । একমাত্র সত্যিকারের খোদাভীতি-ই ও সঠিক জ্ঞান প্রবৃত্তির লাগাম দিতে পারে ।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেন, "তোমাদের সবাইকে তার দিকে ফিরে যেতে হবে । এ আল্লাহতায়ালার পাকাপোক্ত ওয়াদা । সৃষ্টির সূচনা অবশ্যই তিনি করেন এবং দ্বিতীয় বার সৃষ্টিও তিনি করবেন । দ্বিতীয়বার সৃষ্টির কারণ এই যে, যারা ঈমান আনার পর সৎকাজ করেছে তাদেরকে তিনি ন্যায় পরায়ণতার সাথে প্রতিদান দিবেন । আর যারা অবিশ্বাসী পথ অবলম্বন করেছে তারা উত্তপ্ত পানি পান করবে এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে ।

সত্যকে অস্বীকার কের তারা যা কিছু করেছে তার জন্যই তাদের এ শাস্তি । " (সূরা ইউনুছঃ ৪) "প্রতেককেই মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং কিয়ামতের দিনে তোমাদেরকে পরিপূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে । অতএব সেদিন যাদেরকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করে বেহেশ্তে স্হান দেয়া হবে তারাই হবে সাফল্যমন্ডিত । - (সূরা আল -ইমরানঃ ১৮৫) " প্রত্যেককে মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং এই দুনিয়াতে তোমাদেরকে সুখ দুঃখ দিয়ে আমরা (আমি) পরীক্ষা করব এবং এ পরীক্ষার ফলাফল লাভের জন্য তোমাদেরকে আমাদের (আমার) নিকট ফিরে আসতে হবে । " (সূরা আল - আম্বিয়া) "তোমরা কি কখনো চিন্তা করে দেখেছ যে স্ত্রী সঙ্গমে তোমরা স্ত্রী যোনীতে যে বীর্য প্রক্ষিপ্ত করছ, তা থেকে সন্তানের উৎপত্তি কি তোমরা করছ , না আমি ? আমি তোমাদের মৃত্যু বন্টন করে দিয়েছি ।

তোমাদের আকৃতি পরিবর্তন করে তোমাদের জ্ঞান বর্হিভূত অন্য আকৃতিতে পয়দা করতেও আমি অপারগ নই । তোমাদের প্রথম বারের সৃষ্টি সম্পর্কেও তোমরা পরিজ্ঞাত । তবে কেন শিক্ষা গ্রহণ করছ না ?" (সূরা ওয়াকিয়াঃ ৫৮-৬২)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.