আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃত্যুর ১৯০ বছর পর দাফন

মেঘ বলেছে যাব যাব

শুধু ফাঁসিতেই খুনের শাস্তি শেষ হয়নি তার। মৃত্যুর পর ১৯০ বছর পর্যন্ত ঝুলে থাকতে হয়েছে। মেডিকেল ছাত্রদের ব্যবচ্ছেদবিদ্যা প্রয়োগের কথা না হয় বাদই দিলাম। তার চামড়া দিয়ে একটি খুনের মামলার বই পর্যন্ত বাঁধাই করা হয়েছে। বইটি এখনো ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড অফিসের প্রদর্শনীতে রয়েছে।

ফাঁসির ১৯০ বছর পর আজ তার দাফন হতে যাচ্ছে। এ হতভাগা খুনির নাম জন হরউড। হতভাগা এজন্য খুনের অপরাধে ফাঁসির পর সঠিকভাবে দাফন তার প্রাপ্য ছিল। প্রাপ্যটুকু পায়নি বলেই হতভাগা। ১৮২১ সালে সাবেক প্রেমিকাকে খুনের দায়ে জন হরউডের ফাঁসি হয়।

ফাঁসির পর তার মৃতদেহ দাফন না করে ব্রিস্টল রয়্যাল ইনফরমারিতে দেয়া হয় ছাত্রদের ব্যবচ্ছেদ বিদ্যার পাঠ গ্রহণের জন্য। কাটাকুটির পর তার কঙ্কাল ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে একটি আলমিরায় তার স্থান হয়। শুরু হয় ছাত্র-ছাত্রীদের অস্থিবিদ্যার পাঠগ্রহণ। দিন যেতে থাকে।

কেউ তার পরিচয় নিয়ে ভাবেনি। দীর্ঘ ১৯০ বছর পর মেরি হ্যালিওয়েল নামের ৬৭ বছর বয়সী এক মহিলা জন হরউডের পরিচয় বের করেন। তিনি তার পরিবারের ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে জানতে পারেন ওই কঙ্কালটি যার সে তার আত্মীয় হয়। তার পূর্বপুরুষ। এটা জানতে পেরে মেরি হ্যালিওয়েল ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে খুনি জন হরউডের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করে।

১৯০ পর আজ তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। ম্যারি হ্যালিওয়েল জন হরউডের ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে উদঘাটন করলেন ফাঁসির পর এক ডাক্তার জনের লাশ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করতে দেননি। ওই ডাক্তার জন হরউডের প্রেমিকা এলিজার চিকিৎসা করেছিল। ডাক্তার রিচার্ড স্মিথ এলিজাকে বাঁচাতে না পেরেই তার শোধ তুললেন এভাবে। তিনি পরে কমপক্ষে ৮০ জন লোকের সামনে জন হরউডের দেহের ব্যবচ্ছেদ করেন।

পরে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আলমিরায় ঝুলিয়ে রাখেন। ডা. স্মিথের এমন বর্বরোচিত কাজের জন্য ম্যারি হ্যালিওয়েল তার কঠোর সমালোচনা করেন। একজন মৃত মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধাই করার মতো ঘটনা বর্বরোচিতই বটে। হরউডের প্রেমিকা এলিজার খুন হওয়ার কারণও উদঘাটন করেন ম্যারি হ্যালিওয়েল । জানা যায়, এলিজা জন হরউডকে ছ্যাঁকা দিয়েছিল।

এরপরই জন হরউড প্রতিজ্ঞা করে যে, সে যদি এলিজাকে অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে দেখে তাহলে তার হাঁড় কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলবে। ১৮২১ সালের ২৬ জানুয়ারি জন হরউড তার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করার সুযোগ পায়। এলিজাকে তার নতুন প্রেমিকের সঙ্গে হাঁটতে দেখে ফেলে সে। সাথে সাথে এলিজার মাথায় পাথর ছুড়ে মারে। পরে এলিজা মারা যায়।

এরপর এ খুনের দায়ে জন হরউডকে ওই বছরের ১১ এপ্রিল মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত এবং এর দুইদিন পরই তার ফাঁসি হয়। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের পরিচালক উইলিয়াম অস্টিন জানায় যে, জন হরউডকে তার পিতার পাশে কবর দেয়া হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.