আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিটিসেলের ভেলকিবাজী অফার এবং আমার অভিজ্ঞতা



এতদিন সিটিসেল কোম্পানীকে আমি আর সব মোবাইল অপারেটর থেকে একটু ভিন্নভাবে দেখতাম। তাদের বিভিন্ন অফারে গ্রাহকের কিছু না কিছু উপকার হয় তাই জানা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত সিটিসেলের "অদল বদল" অফারের নামে ভন্ডামীতে আমি অবাক হলাম। অন্য কেউ হয়রানী হবার আগে আমার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা উচিত বলে মনে করলাম। আমি সিটিসেলের অদল বদল অফারটি প্রথম দেখি বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠ পত্রিকায়।

অফারটিতে বলা হয়েছে আপনার যে কোন জীর্ণ শীর্ণ পুরাতন সিটিসেল সেট বদল করে নির্দিষ্ট মডেলের নতুন সিটিসেল হ্যান্ডসেট বিশেষ ডিসকাউন্টে নেয়া যাবে। আমি স্থির করলাম আমার যেহেতু দুটো পুরাতন সিটিসেল সেট রয়েছে সেগুলো পাল্টিয়ে নেবো। চিন্তানুযায়ী নিকটস্থ উপজেলা সদরের সিটিসেল কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করলাম। তারা আমাকে চার্জার, রীম সহ পুরাতন সেট জমা দিতে বলল। আমি তাদের কথামত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমার একটি সিটিসেল হ্যান্ডসেট নিয়ে জমা দিয়ে এলাম।

গত রবিবার গেলাম কাস্টমার কেয়ারে। তারা আমাকে জানালো এখনো নতুন সেট তাদের হাতে এসে পৌছেনি, পৌছানো মাত্রই আমাকে জানানো হবে। গতকাল অর্থাত সোমবার বিকেলে আমাকে উপজেলা কাস্টমার কেয়ার থেকে জানানো হলো অদল বদল অফারের কোন সেট লোকালি দেয়া হবে না, শুধুমাত্র জেলা সদর থেকে অদল বদল করা যাবে। যেহেতু আমার বাড়ি উপজেলা এবং জেলার মাঝামাঝি তাই আজ সকালে গাড়িতে চড়ে চলে এলাম জেলা সদর কাস্টমার কেয়ারে। এখানকার কাস্টমার সার্ভিস অফিসার আরিফুজ্জামানকে বললাম দুটো সেটের কথা।

সে আমার কাছে পুরাতন সেট চাইতে আমি জানালাম একটি পুরাতন সেট উপজেলা কাস্টমার কেয়ারে জমা রয়েছে এবং আরেকটি এখন আমার সাথে আছে। আমার সাথে যে সেটটি আছে সেই সেটের ডিসপ্লেতে একটু সমস্যা, এই অজুহাতে সে পাল্টিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানালো। আমি তাকে বললাম, আপনাদের সেট সংক্রান্ত ক্রাইটেরিয়া আমি পড়েছি, সেখানে শর্ত হলো- যে সেটের ব্যাটারী ও চার্জার আছে, কল আসে এবং যায় অর্থাত সচল এমন সব মডেলের সেটই গ্রহণযোগ্য এমনকি উপজেলা কাস্টমার অফিসার সেটটি পরীক্ষা নীরিক্ষার পর সুপারভাইজারের সাথে কথা বলে জমা নিয়েছিলেন। সেখানে ডিসপ্লে সংক্রান্ত কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া নেই। কিন্তু আরিফ সাহেব তারপর আমাকে বললেন কোন সমস্যাই গ্রহণযোগ্য নয়।

তাহলে সে কথাটি কেন আপনাদের ওয়েব সাইটে লেখা হলো না, এমন প্রশ্নের জবাবটি সে এরিয়ে গেলেন। আর দ্বিতীয় যে সেটটি উপজেলা কাস্টমার কেয়ারে জমা আছে সে সেটটি হাতে না পেলে সে কিছুতেই নতুন সেট দিবে না। উপজেলা কাস্টমার কেয়ার থেকে তাকে ফোন করে আমার ভাল সেটটি যে তাদের কাছে রক্ষিত আছে এবং কালকেই সেটা জেলা অফিসে পাঠিয়ে দেবে এ কথা জানানো হলো। তারপরেও সে আমাকে নতুন সেট দিতে অস্বীকার করলো। সে আরো জানালো তার কাছে অদল বদল করা যাবে, তবে আমি নতুন যে মডেলটি নিতে আগ্রহী অর্থাত "জেডটিই-এস১৮৯" এ সেটটি তার কাছে নেই, গতকাল বিকেলে স্টক শেষ হয়ে গেছে।

এখন তাদের পছন্দমত হাউয়াই কোম্পানীর একটি সেট আমাকে নিতে বলে। কিন্তু আমি সেই নিম্নমানের সেটটি নিব না। গতকাল সেট পরিবর্তন করে নিয়েছে এমন এক বন্ধুর সাথে কথা বলে জানলাম গতকাল সকালে তাকেও আরিফ সাহেব একই কথা বলেছে যে, ওই মডেলের সেটটি গত পরশুদিন বিকেলে শেষ হয়ে গেছে। তখন বুঝলাম, সবই এদের কারসাজি। আসলে ওই মডেলে সেট শেষ হয়নি, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই ভাল সেটগুলো লুকিয়ে রাখছে।

হয়তো পরে এগুলো ভাল দামে বিক্রি করে বেশি লাভের উদ্দেশ্যে এমন করছে। অন্যান্য জেলাতেও এমন হচ্ছে কিনা জানি না। তবে গ্রাম থেকে এইসব দৌড়াদৌড়িতে আমার অলরেডি ২০০ টাকা খরচ হয়ে গেছে। অথচ যে ডিসকাউন্টের জন্য দৌড়ালাম তা কাজের কাজ কিছুই হলো না। এখন আমার প্রশ্ন, এমন অফার সিটিসেল কেন করে যাতে মানুষের হয়রানীটাই বেশি হয়? যদি সত্যিই স্টক শেষ হয়ে থাকে তবে কেন সেটগুলো এভেইলেভেল না রেখেই অফার করা হয়? কারণ সিটিসেল কর্তৃপক্ষ খুব ভাল করেই জানে কোন মডেলের সেটের প্রতি কাস্টমারের আগ্রহ বেশি।

কমদামী একটি মডেলের সেট একটি জেলায় কমপক্ষে বিশ-ত্রিশটিও কি দেয়া যায় না? অফারগুলো উপজেলা পর্যায়ে কেন পৌছে না? অফারের সেটগুলো যদি এজেন্টরা বা অন্য কেউ নিজেদের নাম দিয়ে রেখে দেয় তাহলে কাস্টমার অফিসারের সংশ্লিষ্টতা থাকে এবং এজন্য তাদের শাস্তি দেয়া হয় কি? (যে দুএকজন পাঠক মারাত্মক ধৈর্য ধরে লেখাটি পড়লেন তাদের জন্য কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। )


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.