আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিটিসেলের সিডএমএ (অতি সংক্ষেপে)

.......অতঃপর মৃত্যুর প্রতীক্ষা

সিডিএমএ (কোড ডিভিশন মাল্টিপল একসেস) আমাদের সিটিসেল 2য় প্রজন্মের সিডিএমএ ওয়ান ব্যবহার করছে । মার্কিন মিলিটারী এর প্রথম আবিষ্কারক । এর মূল কপিরাইট ও ব্যাবসা মার্কিন কোয়ালকম কোম্পানির । এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ফ্রিকুয়েন্সি নিয়ে এর কোন মাথা ব্যাথা নাই । একটি টাওয়ারের (বি টি এস ) অধীনে একই ফ্রিকুয়েন্সিতে সকল গ্রাহক কথা বলতে পারে ।

একি তাহলে একজনের কথা অপরজন শুনে ফেলেনা?? সমপ্রতি ইসরায়েল লেবাননের রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি ব্যবহার করে আরবিতে খবর শুনাচ্ছে হতভাগা লেবাননিদের । প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য ফ্রিকুয়েন্সি ভাগ করে দেয়া একটা স্বাভাবিক ঘটনা। গ্রামীন আর একটেলের মত জিএসএম অপারেটরা এ কাজটাই করে একটু অন্যভাবে, ফ্রিকুয়েন্সি হপিং ও টাইম স্লট জেনারেট করে । টাইম স্লট আর ফ্রিকুয়েন্সি চ্যানেল শেষ হয়ে গেলে নেটওয়াক বিজির কবলে পড়ে গ্রাহকরা। পরে বলবো এ ব্যাপারে।

কিন্তু সিডিএমএ তে এভাগটা করা লাগেনা। একটা নদী কল্পনা করি যাতে ভিন্ন ভিন্ন রঙের ও আকৃতি নৌকা চলছে। একই পানির বা ফ্রিকুয়েন্সির উপর শত শত নৌকা গেলেও আকৃতি ও রঙের পার্থক্য হেতু আপনারটা ঠিকই চিনতে পারবেন তীরে ভিড়লে । এই আকৃতি বা রঙটাই গ্রাহকের পরিচয়বাহী কোড, এভাবেই কোড ডিভিশন করে মাল্টিপল গ্রাহককে একই চ্যানেলে একসেস দেয়া হয়। এনালগ কথাকে ডিজিটাল করে বেশ কয়েকটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়ে বিভিন্ন হাই ডাটা রেটের চিপস দিয়ে মাসকিং বা মুড়িয়ে দেয়া হয়।

টাওয়ার থেকে গ্রাহকের কাছে কথা আসার সময় (ফরওয়ার্ড চ্যানেল বলে) তিন ধরনের কোড দিয়ে মূল ডিজিটাল ভয়েজ ডাটাকে গুণ করা হয়। 42 বিটের লং কোড, 15 বিটের শর্ট কোড, 64 বিটের ওয়ালস কোড দিয়ে পর্যায়ক্রমে গুণ করে মূল ডাটাকে এক প্রকার গোপন করে ফেলা হয়। 42 বিটের লং কোড ( যেটা প্রাপকের ইএস এন বা সেটের ইলেক্ট্রনিক সিরিয়াল নাম্বার ধারণ করে) , 15 বিটের শর্ট কোড ( যা প্রেরক টাওয়ারের পরিচিতি কোড বহন করে ), 64 বিটের ওয়ালস কোড ( তথ্য বহনকারী চ্যানেলের পরিচয় বহন করে )। এসব কিছুর শেষে ডাটার গতি দাড়ায় 1.2288 মেগা চিপস পার সেকেন্ড। কিন্তু এন্টেনা দিয়ে ট্রান্সফারের জন্য ট্রান্সমিশন ব্যান্ডে সিগনালকে নিয়ে গিয়ে মডু্যলেশন করা লাগবেই ।

ডিজিটাল মডু্যলেশন হিসেবে এখানে কিউ পি এস কে (কোয়াড্রেচার ফেইজ শিফট কিইং ) করা হয় ফরওয়ার্ড চ্যানেলে পাঠানোর জন্য। এজন্য মূল ডাটার জোড় ও বিজোড় অবস্থানের বিটগুলোকে আলাদা করে একটাকে সাইন সিগনাল ও অপরটাকে কোসাইন সিগনাল ( যার ফ্রিকুয়েন্সি হলো কেরিয়ার বা বহনকারী ফ্রিকুয়েন্সি) দিয়ে গুণ করে যোগ করা হয় । অবশেষে এন্টেনা দিয়ে পাঠানো হয়। রিভার্স চ্যানেলে ( সেট থেকে টাওয়ারে) শুধু ওয়ালস কোড ব্যবহার করা হয়না। আর মডু্যলেশন স্কিম হিসেবে ও (অথের্াগোনাল) কিউ পিএস কে ব্যাবহার করা হয়।

সংক্ষেপে সবকিছু সহজ মনে হলেও এর রিসিভার আর ট্রান্সমিটার জিএসএম এর তুলনায় ভয়াবহ ধরনের জটিল। টাওয়ারের অধীনে কোন কল আসলে তা সব সিডিএম এ সেটের মধ্যে ঢুকে পড়ে। যদি তথ্যের সাথে পাঠানো ইএসএন খাপ খায় তবেই সেটা সক্রিয় হয়ে ওঠে, অন্যথায় নয়। জি এস এম এর সিম কার্ড শুধূ টিকেট হিসেবে কাজ করে যাতে টিকেট নম্বর ছাড়া তেমন কিছুই থাকেনা। যার টিকেট আছে এবং যার কল আসে তাকেই প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

সিডিএমএ তে সিম দিয়ে কল রিকোয়েস্ট আটকে দেয়া হয়না, বরং তা ভিতরে ঢুকে চেক করে দেখে এটা তার গন্তব্যস্থল কিনা । উৎপাদকদের গোড়ামির কারণেই সিডিএমএ সেট গুলো সিম বেইসড করা যায়নি। জিএসএম এর রোমিং এর সুবিধা একে জনপ্রিয় করেছে, কারণটা হলো জিএসএম অপারেটর দের বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি , সে তুলনায় সিডিএমএর অপারেটর কম। এমন দেশে যাবেন যাদের সিডিএমএ ওপারেটরই নাই। সেেেত্র রোমিং এর জন্য জিএসএম বেছে নিতে হবে বাধ্যতামূলকভাবেই।

প্রযুক্তিতে অসম্ভব বলে কিছু নাই। কোয়ালকম আর সিডিএম এ ইন্সট্রুমেন্ট উৎপাদকরা চাইলেই হবে। মার্কিনরা তাদের বাজার সম্পর্কে সচেতন, তাই সারা পৃথিবী 50 হার্জে চললের নিজেরা চলে ও সব উৎপাদন করে 60 হার্জের মেশিন। নিজেরাই বানায়, অন্যদের থেকে এক পয়সা আমদানি করেনা বা করার সুযোগ দেয়না । সিডিএমএ নিয়ে গোড়ামি তাদের কারণেই।

একই নদী বা ফ্রিকোয়েন্সিতে সবাই ভাসে বা কথা বলে তাই অসংখ্য মাঝি আর কপোত কপোতিকে ভাসানো বা ফার্ট করতে দেয়া সম্ভব ? সীমাবদ্ধতা আছে কতগুলো জায়গায় -সেটা না হয় আরেকদিন লিখলাম।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.