আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রজন্ম চত্বর নিয়ে যেইসব তরুণদের নিরবতা! তাদের কে বলছি, নিজেক জাগ্রত কর ! বিচার কর মূল্যবোধ দিয়ে, তোমার আসলে কি করা উচিৎ! জয় বাংলা! জয় জনতা! জয় তারুণ্য!

আজ আমরা তরুন প্রজন্মের (!) বড় একটা অংশ প্রজন্ম চত্বরের এই গন আন্দোলনের ব্যাপারে নিশ্চুপ হয়ে বসে আছি। আমরা তরুণরা এই চুপ থাকার বেশ কয়েকটা কারনের মাঝে ধর্ম টা অনেক বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে! অনেকেই ভাবছেন, এই প্রজন্ম চত্তরের আন্দোলন যা করছে তা আমাদের ধর্মের উপর প্রভাব ফেলছে। এবং যাদের বিরুদ্ধে বা যাদের ফাঁসির দাবীতে এই আন্দোলন তাড়া সবাই খুব ধার্মিক(!) তাই হয়তোবা আপনাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তারা যেই অপরাধে অপরাধী, সেই অপরাধ তারা ৭১ এ আসলেই করেছিলো কিনা! তারা আসলেই কত টা ধার্মিক তা আজ আমরা খুব ভালো করেই জানি! হাজার হাজার, প্রমাণ চোখের সামনে থাকা সত্ত্বেও, যারা আজও এই সন্দেহের জাল ছিরে এখনও বের হতে পারেন নি, সেই সব ধর্মের মুখোশ পরা পশুদের অন্ধের মত আজও বিশ্বাস করছেন, তাদের কে ফেরেস্তা মনে করছেন, সেই সব তরুণদের কে আমার নতুন করে কিছুই বলার নেই শুধু একটা কথা ছাড়া! ‘’তোরা আসলেই জাত ছাগু!’’ তোরা রাজাকারদের যোগ্য উত্তরসূরি! আবার অনেক মানুষ আছেন যারা এই রাজাকারদের অতীত কর্ম নিয়া কোন সংশয় প্রকাশ করেন না। রাজাকারদের এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করেন, কিন্তু তারপরেও এদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না! এর কারন হচ্ছে এই মানুষ গুলো ধর্মীয় রাজনীতি সমর্থন করে। এবং তারা চায় দেশটা ইসলামিক শাসন বেবস্থায় পরিচালিত হোক!এবং তাদের ধারনা প্রজন্ম চত্বর চাচ্ছেনা দেশে ধর্মীয় রাজনীতি তথা ইসলামিক শাসন বেবস্থা চালু হোক! আর এইসব সাধারন মানের তরুণদের ধারনা আমাদের দেশে ধর্মীয় তথা ইসলামের কোন বড় নেতা (!) থাকলে এই যুদ্ধাপরাধীরাই আছে! আর যদি এদের সত্যি সত্যি ফাঁসি হয়ে যায় তাহলে দেশে আর ইসলাম বলে কিছু থাকবে না! তার মানে কি দাঁড়ালো? তার মানে আপনারা যেটা কে ধর্মীয় রাজনীতি বলছেন সেটা আসলে ইসলাম নিয়ে রাজনীতি! বা আপনারা ইসলামিক শাসন বেবস্থা চাচ্ছেন যার কারনে আপনারা যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাচ্ছেন না! কিন্তু যারা সাধারন এবং ইসলাম কে ভালোবাসেন।

এবং যাদের ধারনা ইসলামী শাসন বেবস্থা দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনবে, তাদের কে বলছি, যদি সত্যিই দেশে ইসলামী শাসন বেবস্থা চালু হয়, তাহলে দেশ তার গনতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িকতা হারাবে! এবং আপনারা ইতি মধ্যেই দেখেছেন, যাদের কে দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্ন দেখতেছেন, তারা কতটা ইসলামিক! এবং তারা ধর্ম টাকে কত টা শ্রদ্ধা করে! তারা ক্ষমতায় যাবার জন্য মসজিদে বোমাবাজি করতে দ্বিধা করে না, মসজিদে আগুন ধড়িয়ে জুতা নিক্ষেপ করে বিশৃঙ্খলা করতে এতটুকু দ্বিধা করে না!শুধু তাই নয়,তারা নির্মম ভাবে অন্য ধর্ম অনুসারীদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, বাড়ি ঘর পুরাচ্ছে, মন্দির ভাঙছে,! এইসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কি ইসলাম সমর্থন করে, নাকি এইসব ইসলামী কোন আইনে জায়েজ আছে? তাই সাধারন মানুষ যারা ইসলামকে শ্রদ্ধা করেন, নিজ ধর্ম সহ অন্য ধর্মের প্রতি যার বিন্দু মাত্র শ্রদ্ধা আছে, যেইসব তরুন রা স্বপ্ন দেখেন, একটা সুস্থ সুন্দর সমাজ বেবস্থার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের, যেখানে সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে একসাথে শান্তিতে বসবাস করবে, তাদেরকে বলছি, আপনারা প্রজন্ম চত্বরের পাশে এসে দাঁড়ান। যারা এই দেশের জন্মলগ্ন থেকে শত্রু ছিল, একাত্তুরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লাখো বাঙ্গালী ভাইয়ের হত্যার জন্য যারা দায়ী, হাজারো মা- বোনের সম্ভ্রম যারা কেরে নিয়েছে, যারা আমার এই পতাকা কে স্বীকার করে না, যারা আমার এই দেশ কে আজও বাংলা বলে স্বীকৃতি দিতে চায় না, যারা আজও আপনার, আমার তিরিশ লক্ষ্য ভাই, আর হাজারো মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পাওয়া এই বাংলাদেশ কে পাকিস্তান বানানোর পায়তারা করে, যারা ধর্ম নিয়ে ধর্ম কে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করে নিজ কুকর্মের শাস্তি থেকে রেহাই পেতে চাইছে, যারা দেশ টাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যারা দেশে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ শুরু করেছে, হিন্দু ভাইদের উপর হামলা করছে, অকাতরে মানুষ হত্যা, পুলিশ ভাইদের উপর আক্রমন করছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান! মনে রাখবেন, ধর্ম যার যার, দেশ আমাদের সবার, শুধু দেশ ইসলামিক হলেই হবেনা, আমাদের সবার মূল্যবোধ এবং দৃষ্টি ভঙ্গিই পারে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে। আর তাই প্রজন্ম চত্বর জেগে উঠেছে আমাদের প্রানের দাবীতে! তাই সমস্ত দ্বিধা দন্ধ কাটিয়ে উঠে দেশের স্বার্থে দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যেতে আসুন আমরা সকলেই প্রজন্ম চত্বরের পাশে এসে একি সুরে গলা মিলাই, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। আসুন আমরা জামাত শিবির কে নিষিদ্ধ করতে সারা দেশে প্রজন্ম চত্বরের গনজাগরনের সাথে হাত মিলিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলি। এদেরকে প্রতিহত করি, জামাতশিবিরের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি! প্রত্যেকটা যুদ্ধাপরাধীর যেন ফাঁসি হয় তার জন্য আন্দোলন গড়ে তুলি।

মনে রাখবেন এইটা আমাদের প্রথম পরীক্ষা! যদি এই পরীক্ষায় আমরা পাশ করি, তাহলে পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়া আমাদের জন্য আরও সহজ হবে! এই প্রজন্ম চত্বর এই গনজাগরন মঞ্চ শুধুই গুটি কয়েক যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি নিশ্চিত করেই নিসচুপ হয়ে যাবে না! এই প্রজন্ম চত্বর দেশের সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য কাজ করতে প্রস্তুত । শুধু দরকার আমাদের সকলের সহযোগিতা! কারন এই প্রজন্ম চত্বর আমাদের দ্বারাই সৃষ্টি! জয় বাংলা! জয় জনতা! জয় তারুণ্য! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.