আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাস্তিকদের কয়েকটি মন্তব্যের জবাব।

পড়ো, তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাটবদ্ধ রক্ত হতে। পড়ো, আর তোমার প্রতিপালক মহিমান্বিত, যিনি কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। (আল-কুরআন, সূরা-আলাক, আয়াত ১-৫)

আলহামদুলিল্লাহ.............. আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি নাস্তিকদের কয়েকটি মন্তব্যের জবাব তুলে ধরলাম সংক্ষিপ্তকারে।

আশা করি আল্লাহ সবার মঙ্গল করবেন। ---------------------------------------------------------------------------------- নাস্তিকরা প্রমান করতে চাই যে কোরআনের নাকি অনুবাদগত বিচ্যুতিঃ ও ব্যাখ্যাগত বিচ্যুতিঃ করা হয়েছে। তাদের আসলে আরবী ব্যাকরণ সম্পর্কে জ্ঞান নেই। এর প্রেক্ষাপটে আমি তাদের সামনে তুলে ধরতে চায় যে, ১. আরবী সব ব্যাকরণ এসেছে কোরআন থেকে। কোরআন হল সর্বোচ্চ আরবী বই।

যে বইটাতে সবচেয়ে উচুমানের সাহিত্য আছে। আরবী ভাষার সব ব্যাকরণ এসেছে কোরআন থেকে। কোরআন হল ব্যাকরণের মূল গ্রন্থ। আর কোরআন যেহেতু ব্যাকরণের মূল গ্রন্থ এবং সব ব্যাকরণই এসেছে কোরআন থেকে, কোরআনে কোনো ভূল থাকতে পারে না। ২. আরবে বিভিন্ন আলাদা আলাদা গোত্রে ব্যাকরণ মাঝে মধ্যে বদলে যায়।

কিছু কিছু আরবীয় গোত্রে যে শব্দটা স্ত্রী বাচক অন্য আরেক গোত্রে সেটাই পুরুষ বাচক। একই শব্দ কিন্তু গোত্র বেদে ব্যাকরণ বদল হতে থাকে। এমনকি শব্দের লিঙ্গও বদলে যায়। তাহলে আপনি কি কোরআনকে সব গুলো ব্যাকরণ দিয়ে পরিক্ষা করবেন। "না" আর এছাড়াও কোরআনের ভাষা এত উচু মানের যে এর কাছাকাছি কোন সাহিত্য নেই।

কোরআনের ব্যাকরণ এতই ঊচুমানের যে কোরআনের ভাষা মাঝে মধ্যে প্রচলিত আরবীর বিরূদ্ধে যায়। একটি উদাহরনঃ- কোরআনে বলা আছে লূত (আলাইহিস-সালামের)-এর গোত্রের লোকজন তারা সকল নবীকে ত্যাগ করেছে। বলা আছে সব নবীকে তারা অস্বিকার করেছে। আমরা ইতিহাস থেকে জানি মাত্র একজন নবীকে তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাহলে কি এখানেও ব্যাকরনের ভূল আছে? কোরআনের বলা উচিৎ ছিল একজন নবীর কথা! (বহুবচন না) আর আমিও একমত, কারণ আমার আর আপনার মত ব্যক্তির কাছে মনে হবে এটা ব্যাকরণের ভূল।

কিন্তু যদি আপনারা আরবদের লেখা বইগুলো পড়ে থাকেন। তাহলে, বুঝবেন কোরআনের আসল সুন্দর্য কি। সুন্দর্যটা হলো কোরআনে কেন একজন নবীর কথা না বলে নবীদের কথা বলা হয়েছে। আপনারা জানেন কেন? কারণ, আমরা জানি যে সব নবীদের হেদায়াত বানী মূলত একটাই যে ঈশ্বর একজনই, তাওহীদের বানী, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার বানী। লূত (আলাইহিস-সালামের)-এর লোকজন এবং নূহ (আলাইহিস-সালামের)-এর লোকজন তারা তাদের নবীকে ত্যাগ করেছিল।

আর পরোক্ষ্য ভাবে নিজেদের নবীকে ত্যাগ করে তারা সব নবীকেই ত্যাগ করেছিল। কোরআনের আসল সুন্দর্যটা বুঝেন, ভাষার অলংকার বুঝেন, আলহামদুলিল্লাহ। অবিশ্বাসীদের মনে হতে পারে এটা ব্যাকরণে ভূল। কিন্তু এটা ভূল নই। তাইবলে কুরআনের ব্যাখ্যা ভূল মোটেও না।

---------------------------------------------------------------------------------- সর্বশক্তিমান স্রষ্টা পবিত্র কোরআনে সূরা কাহফ, আয়াত-১০৯. বলেনঃ- (হে নবী) বল, আমার রবের কথা লেখার জন্য সমুদ্র যদি কালি হয়ে যায় তবে সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে আমার রবের কথার ব্যাখ্যা লেখা শেষ হওয়ার আগেই। যদিও এর সাহায্যার্থে অনুরূপ আরো সমুদ্র নিয়ে আসি'। তিনি আরো বলেন পবিত্র কোরআনের, সূরা-লোকমানে, আয়াত- ২৭. আর যমীনে যত গাছ আছে তা যদি কলম হয়, আর সমুদ্র (হয় কালি), তার সাথে কালিতে পরিণত হয় আরো সাত সমুদ্র, তবুও আল্লাহর বাণীসমূহের ব্যাখ্যা লেখা শেষ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে মুসলিমরা কোরআনের যত ব্যাখ্যা লিখেছে, লিখতেছে, বা লিখবে তবুও তা শেষ হবে না।

আরবী একেকটা হরফ একেকটা শব্দের বেপক অর্থ বহন করে যা আমরা আজো সম্পূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে পারিনি। এখানেই শেষ নই, নিচে কয়েকটি ব্যাখ্যা দিলাম। ---------------------------------------------------------------------------------- নাস্তিকরা বোঝাতে চাইযে ভ্রুণতত্ত্ব নিয়ে কোরআনে ভূল করছে। কোরান ২৩:১৩,১৪: তারপর আমরা তাকে বানাই শুক্রকীট এক নিরাপদ অবস্থান স্থলে। তারপর শুক্রকীটকে বানাই একটি রক্তপিণ্ড, তারপর রক্তপিণ্ডকে বানাই একতাল মাংসের তাল, তারপরে মাংসের তালে আমরা সৃষ্টি করি হাড়গোড়, তারপর হাড়গোড়কে ঢেকে দেই মাংসপেশী দিয়ে, তারপরে আমরা তাকে সৃষ্টি করি অন্য এক সৃষ্টিতে।

সেইজন্য আল্লাহরই অপার মহিমা, কত শ্রেষ্ঠ এই স্রষ্টা। বিজ্ঞানঃ সেই কোন আমলে কোরানেই মাতৃগর্ভে ভ্রুণ সৃষ্টি ভ্রূণ থেকে ধীরে মানব শিশুর আকৃতি লাভের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। ---------------------------------------------------------------------------------- উত্তরঃ- কয়েকটি আয়াত দিয়ে আলোচনা করলে তা পরিস্কার হয়ে যাবে। আরবী শব্দ "আলাক" একবচন। অথবা "আলাক" শব্দটি বহুবচন এবং এটা ছয়ভাবে ব্যবহৃত হয়।

পবিত্র কোরআনে সূরা-কিয়ামার ৩৭-৩৯ আয়াতে বলা হয়েছেঃ- সে কি বীর্যের শুক্রবিন্দু ছিল না যা স্খলিত হয়? অতঃপর সে ‘আলাকায় পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ তাকে সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন এবং সুবিন্যস্ত করেছেন। অতঃপর তিনি তা থেকে সৃষ্টি করেন জোড়ায় জোড়ায় পুরুষ ও নারী। পবিত্র কোরআনে সূরা-হাজ্জ, আয়াত-৫ বলা হয়েছেঃ- হে মানুষ! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দেহে থাক তবে নিশ্চয়ই জেনে রেখো, আমি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি, তারপর শুক্র থেকে, তারপর আলাকা থেকে, তারপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট অথবা অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট গোশ্ত থেকে। তোমাদের নিকট বিষয়টি সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করার নিমিত্তে।

আর আমি যা ইচ্ছা করি তা একটি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত মাতৃগর্ভে অবস্থিত রাখি। অতঃপর আমি তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করি, পরে যাতে তোমরা যৌবনে উপনীত হও। তোমাদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যু দেয়া হয় এ বয়সেই, আবার কাউকে কাউকে ফিরিয়ে নেয়া হয় হীনতম বয়সে, যাতে সে জ্ঞান লাভের পরও কিছু না জানে। তুমি যমীনকে দেখতে পাও শুষ্কাবস্থায়, অতঃপর যখনই আমি তাতে পানি বর্ষণ করি, তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সকল প্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ। পবিত্র কোরআনে সূরা-মুমিনুন, আয়াত১২.১৪ বলা হয়েছেঃ- আর অবশ্যই আমি মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি।

তারপর শুক্রকে আমি ‘আলাকায় পরিণত করি। তারপর ‘আলাকাকে গোশ্তপিণ্ডে পরিণত করি। তারপর গোশ্তপিণ্ডকে হাড়ে পরিণত করি। তারপর হাড়কে গোশ্ত দিয়ে আবৃত করি। অতঃপর তাকে অন্য এক সৃষ্টিরূপে গড়ে তুলি।

অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়! পবিত্র কোরআনে মানব সৃষ্টির স্তরসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, আরবী "নুতফা" অর্থ শুক্রাণু "আলাক" অর্থ রক্তপিণ্ড "মুদগা" অর্থ গোশতের টুকরা "ইযাম" অর্থ হাড় কোরআনের ব্যাখ্যা করতে গেলে সবগুলো অর্থ ভহন করে। উদাহরনসরূপঃ- ধরুন আমি বললাম এক কাপ চা তৈরি করতে গরম পানি লাগে, কিছুক্ষন পর আবার বললাম চা তৈরি করতে চায়ের পাতা লাগে। তার মানে কি আমি ভূল বলছি। "জ্বি না" নাস্তিকরা আসলে সবকিছুকে নেগেটিভ চিন্তা করে তাই তারা পথ হারা পথিকের মত।

---------------------------------------------------------------------------------- ১৮: ৮৬: পরে যখন তিনি সূর্য অস্ত যাবার স্থানে পৌঁছলেন, তিনি এটিকে দেখতে পেলেন কালো জলাশয়ে অস্তগমন করছে, আর তার কাছে পেলেন এক অধিবাসী। আমরা বললাম- "হে যুলক্কারনাইন, তোমরা শাস্তি দিতে পার অথবা এদের সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার"। ১৮: ৯০: পরে যখন তিনি সূর্য উদয় হওয়ার জায়গায় পৌঁছলেন তখন তিনি এটিকে দেখতে পেলেন উদয় হচ্ছে এক অধিবাসীর উপরে যাদের জন্য আমরা এর থেকে কোন আবরণ বানাই নি। নাস্তিকরা বলেঃ- এখানে আল্লাহ যুলক্বারাইন সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলছেন, তিনি সূর্য উদয় স্থলে একবার গেলেন এবং আরেকবার গেলেন সূর্য অস্তের স্থানে। যেখানে গিয়ে যুলক্বারাইন দেখে সূর্যের কালো জলাশয়ে অস্ত যাওয়াও প্রত্যক্ষ করেন।

এখান থেকে মনে প্রশ্ন আসে, তখন কি আরবের মানুষ জানতো না যে পৃথিবী গোলাকৃতির, কেননা, সমতল হলেই পৃথবীতে সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়ার দুদিকে দুটি স্থানের প্রয়োজন পড়ে। ---------------------------------------------------------------------------------- উত্তরঃ- এখানে আরবী শব্দটা আছে সেটা হল "ওয়াজাদা" যার অর্থঃ- মনে হয়েছিল। জুলকার নাইনের কাছে মনে হয়েছিল। এখানে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদেরকে জানালেন জুলকার নাইনের কাছে কি মনে হয়েছিল। আমাদের ওলামারা সেভাবে অনুবাদ করেছেন যেন আমারা তা সহজে বুঝতে পারি।

ঐখানে আরেকটি আরবী শব্দ আছে "মাগরীব" যার অর্থঃ- সময় বা দিক। ***আসুন অন্যভাবে পর্যালোচনা করে দেখিঃ- এখন আমরা জানি যে টিভি, রেডীও, খবরের কাগজও সূর্যদয় আর সূর্যাস্ত বলে বা লেখে। সূর্য কি উঠে? সত্যি কথা বলতে গেলে সূর্য উঠে না আর সূর্য অস্তও যায় না। বিজ্ঞান বলে সূর্য কখনো অস্ত যায় না। পৃথিবী যে গুরছে এ কারণেই সূর্যদয় আর সূর্যাস্ত হচ্ছে।

কিন্তু তারপরও আপনারা খবরের কাগজে দেখতে পাবেন লেখা থাকে সূর্যদয় ভোর ৬টায় অস্ত যাবে সন্ধা ৭টায়। তাহলে কি খবরের কাগজ ভূল বলছে? আমি বলব জ্বি না। কারণ, সূর্যদয় আর সূর্যাস্ত এ শব্দটা আমরা সবাই ব্যবহার করতে অব্বস্থ। আমরা মানুষরা এভাবে বুঝে থাকি। আল্লাহ আমাদের মানুষ জাতীকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি শব্দটা বলেছেন যেন আমরা তা সহজে বুঝতে পারি।

তাছাড়া আল্লাহ তায়ারা বললেন জুলকার নাইনের কাছে মনে হয়েছিল, তিনি এটিকে দেখতে পেলেন কালো জলাশয়ে অস্তগমন করছে, তার মানে এই নই যে আল্লাহ ভূল বলেছে। নাস্তিকরা এও উল্লেখ্য করেছেঃ- "হযরত আবূ যর গিফারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন নবী করিম সা. আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, "আবূ যর, তুমি কি জান যে, অস্ত যাওয়ার পরে সূর্য কোথায় যায়?" আমি উত্তর করলাম, "আমি জানি না, একমাত্র আল্লাহর রাসুল সা. ই ভালো বলতে পারেন"। তখন তিনি বললেন, "অস্ত যাবার পরে সূর্য আল্লাহর আরশের নিচে অবস্থান করে এবং আবার পূর্বদিকে উদয় হওয়ার জন্য আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় থাকে। এমন দিন আসবে যখন সূর্য উদয়ের অনুমতি পাবে না এবং তখন পৃথিবীতে কেয়ামত নেমে আসবে"। (ভলিউম ৪, বুক ৫৪, হাদীস ৪২১)তাদেরকে বলি, এখানে বলা হয়েছে "বুক" কোন সে "বুক" নাম কি তার? নাকি! আপনারাও দেখি নতুন করে কোরআন হাদীস তৈরি করা শুরু করে দিয়েছেন।

যার কোন বিত্তি নেই ইসলামে । ============================================= ইসলাম সম্পর্কে ভাল জ্ঞান অর্জনের জন্য http://www.islamhouse.com/s/9739

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.