আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পরিবারের সাথে নেথা, নেথা আপডেট।

এম এ জোবায়ের

ধন্যবাদ হাসান শরিফ, নেথার উপর আপনার রিপোর্টটি নেথাকে তার পরিবারকে খুজে পেতে সাহায্য করেছে। ধন্যবাদ ব্লগারদের তাদের অনুভূতি জন্য। নেথা ভাল থাকুক, সুখে থাকুক, পরিবারের সাথে থাকুক। প্রথম আলো ১৪-০৩-২০১১ বাবার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে নেথা ইসলাম যখন পা রাখেন, তখন তাঁকে বেশ বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। বাড়িতে ঢুকেই সোজা চলে যান বাবার ঘরে, যেন সব অনুভূতি দিয়ে বাবাকে কাছে টানার চেষ্টা করছেন।

চোখ দুটো তাঁর বারবার ভিজে যাচ্ছিল। নাড়ির টানে নিজের শেকড়ে ফেরার আনন্দ নাকি কষ্ট তাঁকে গ্রাস করছে, সেটি বোঝা যাচ্ছিল না। বাবার ঘরে কিছুক্ষণ নিভৃতে থাকার পর নেথা বেরিয়ে এলেন। স্বজনদের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। বসে কথা বলার চেষ্টা করেন।

আস্তে আস্তে চোখের জল শুকিয়ে যায়, বিমর্ষ মুখে ফুটে উঠে হাসির আভা। সবার কাছে তাঁর একটিই জিজ্ঞাসা, ‘বাবা কেমন ছিলেন? স্বজনেরা সেই গল্প করছিলেন। আর উন্মুখ হয়ে সেই গল্প শুনছিলেন নেথা। ’ বাবার খোঁজে ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে ছুটে আসেন নেথা। কিন্তু বাংলাদেশের কোথায় খুঁজে পাবেন বাবাকে? প্রথম আলোর মাধ্যমে খোঁজ পান বাবার স্বজনদের।

প্রথম আলোয় নেথার ওই সংবাদ পড়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত শনিবার দেশে ফেরেন নেথার সৎবোন হালিমা বেগম। নেথাকে তিনিই বাবার ঘরে নিয়ে যান। আবেগাপ্লুত হালিমা বলেন, ‘প্রথম আলো পত্রিকা আমরারে জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার দিল। লন্ডনে আমার দুই ভাইবোন আছে জানতাম। কোনো দিন তাঁরার সাক্ষাৎ পাইমু স্বপ্নেও ভাবছি না।

’ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের দেউল গ্রামে নেথার বাবা ফখরুল ইসলামের পৈতৃক বাড়ি। স্থানীয় লোকজনের কাছে ‘গেটওয়ালা’ (আরশাদ মঞ্জিল) বাড়ি নামে পরিচিত। গতকাল রোববার যখন নেথা ওই বাড়িতে পা রাখেন, তার আগ থেকে আশপাশের মানুষের মধ্যে ছিল কৌতূহল। বেলা দুইটার দিকে নেথা ইসলামকে নিয়ে তাঁর চাচা নিজামউদ্দিন বাড়িতে পৌঁছান। বাড়ি পৌঁছে আত্মীয়দের বন্ধনে আবদ্ধ হন নেথা।

‘খুউব সুন্দর...’ বলে সবাইকে কাছে টেনে নেন। বাবার ঘরে ঢোকে ভাঙা বাংলায় ‘চাচি পানি খাব...’ বলার পরপরই ফুফু, চাচিরা ঘিরে ধরেন নেথাকে। আবেগে নিঃশব্দে চলে কান্না। নেথা বাংলায় বলা কথা না বুঝেও বোঝার ভান করে কেঁদেছেন, হেসেছেন, আবেগাপ্লুত হয়েছেন। মুখের ভাষা ভিন্ন হলেও মায়ার ভাষা এক—যেন এ রকম আর্তি জানিয়ে নেথাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদলেন ৭৫ বছর বয়সের ফুফু করফুল নেছা।

‘এত দিন কই আছিলে...’ ‘আমারে দেখতে দেও রে... দেখিয়া নয়ন জুড়াই’ বলে বিলাপ করছিলেন ফুফু। নিজেকে সামলে নিয়ে করফুল বলেন, ‘ফখরুল প্রায়ই কাগজে দুটি ছবি এঁকে সবাইকে দেখিয়ে বলত, এই আমার ছেলে ওমর ফারুক আর এই আমার মেয়ে নেথা। সেই থেকে দুই সন্তানরে দেখার লাগি আমরা উদ্গ্রীব আছিলাম। ’ এভাবে বাড়ির সবার সঙ্গে কুশলবিনিময় আর দেখা-সাক্ষাতের পর ঘণ্টা খানেক বিশ্রাম নেন নেথা। বিকেলে বোন শিল্পীকে নিয়ে বের হন বাড়ির আঙিনায়।

বাড়ির যেখানে তাঁর বাবা বেশি অবস্থান করতেন, সেখানে নেথাও গিয়ে আনন্দ আর বেদনায় লীন হয়েছেন। নেথার ফুফাতো ভাই খায়রুজ্জামান জানান, ‘আজ সোমবার সকালে তাঁকে তাঁর বাবার কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। ’ পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, দেউল গ্রামের হাজি ইলিয়াছ আলীর ছেলে ফখরুল ইসলাম ১৯৬০ সালের মাঝামাঝি ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। থাকতেন ল্যুটন শহরের ১২ হাইফিল্ড রোডে। ১৯৮০ সালের দিকে ফখরুল দেশে ফিরে আরেকটি বিয়ে করেন।

এরপর ১৯৮৪ সালে তিনি মারা যান। তাঁর আরেক স্ত্রী ও মেয়ে বর্তমানে চাচাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.