আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা সাধারণ মানুষ ভালো নেই, দয়া করে আমাদের পেটে লাথি মারবেন না। দয়া করে আপনারা মূল ইসলামের পথে আসুন, শান্তির পথে আসুন। আসুন সকল ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী-ধনী-গরীব বিবেধ ভুলে সবাই মিলে আদর্শ স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

ছোট ছোট ভাল কাজ দিয়ে নিজেকে বড় মাপের মানুষ করা যায়। তবে তুমি শুধুমাত্র বড় মানুষ হবার জন্য ভাল কাজ করও না । আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনেক ভয়াবহ হচ্ছে। দিন দিন মানুষের লাশের সংখ্যা বাড়তে থাকছে। স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ হয়েও আমি নিজেকে স্বাধীন ভাবতে পারি না।

আমাদের দেশে এখন হরতাল হচ্ছে আমি আমার স্বাধীনতা নিয়ে আমার কর্মক্ষেত্রে যেতে ইচ্ছা করলেও আমি যেতে পারি না। আমি রাস্তায় বের হলে আমার গাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হবে, আমাকে আহত করা হবে এবং আমার কর্মক্ষেত্র আমার দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এটার নাম কি স্বাধীনতা? আমাদের দেশের বীর শহীদেরা কি এই জন্য কি আমাদের দেশ স্বাধীন করেছিলেন? আসলে আমরা এখনও স্বাধীন হতে পারি নি। আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাদের উপর হরতাল চাপিয়ে দিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে। আমাদের উপর হরতাল চাপিয়ে দিয়ে তারা স্বাধীনতার সঙ্গা বদলে দিয়েছে।

বর্তমানে আমাদের দেশে এমন একজন ব্যক্তি এসেছেন সে কি না বিশ্বের সব থেকে উন্নত ১০ টি দেশের মধ্যে একটি দেশের রাষ্ট্রপতি। হ্যা তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী স্যার। আজ তিনি আমাদের দেশে আমাদের মাঝে এসেছেন কিন্তু এমন পরিস্থিতে এসেছেন যা তিনি বা তার দেশ কোনদিন আশা করেনি। আমার জানা মতে, এই প্রথম বাংলাদেশে ভারতের কোন রাষ্ট্রপতি এসেছেন। আজ তিনি আমাদের মাঝে এসেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার সাথে দেখা করেছেন।

সে হিসাবে তার সাথে আমাদের প্রধান বিরোধী দলের নেত্রীকে ও দেখা করা উচিত বলে মনে করি আমরা সাধারণ মানুষ। কিন্তু আজ সেই বিরোধী দলের নেত্রী হরতাল ডাকলেন। আমরা কি একজন রাষ্ট্রপতি হিসাবে প্রণব মুখার্জী স্যারকে সঠিক সন্মান করতে পারছি? তাহলে আমরা ভারতে গেলে কিভাবে সন্মানের আশা করি! মঙ্গলবার সারাদেশে হরতাল অথচ প্রণব মুখার্জী স্যার আমাদের দেশে ভ্রমন করবেন। বিএনপি’র কি উচিত ছিল না মঙ্গলবার হরতাল না করা। তারা হরতালের দিনটা পিছিয়ে দিতে পারতো তাতে প্রণব মুখার্জী স্যার আমাদের সম্পর্কে বিরূপ হয়তো একটু কম ভাবত।

শুনলাম বিরোধী দলের নেত্রী প্রণব স্যারের সাথে দেখা করবেন না। নিরাপত্তার কারণে তিনি দেখা করতে পারবেন না অথচ হরতাল তার দল করছে! তাহলে তিনি নিজের নিরাপত্তা কি নিজেই নষ্ট করেছেন? আজ স্বাধীন দেশে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার করা হচ্ছে। সংখ্যালঘুরা কি করেছে? তারাতো আপনাদের (সরকার, বিরোধী দল, ইসলামী দল বা কোন ধর্ম) নিয়ে কোন কটু কথা বলেনি। তারা ব্লগ বা সামাজিক যোগাযোগ সাইটে কোথাও তো কোন খারাপ মন্তব্য করেনি। তবে কেন স্বাধীন দেশের মানুষ হবার শর্তেও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে? আসলে ঘটনাটা ঢালের পানি, বাঘ এবং হরিণের বাচ্চার গল্পের মতো হয়েছে।

বাঘ বলে তুই আমার পানি ঘোলা করেছিস। যখন প্রমাণ হয় হরিণের বাচ্চা পানি ঘোলা করেনি, তখন বাঘ বলে তোর বাবা পানি ঘোলা করেছিল তোকে শাস্তি পেতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। একটা কথা মনে রাখা উচিত দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বিড়ালও বাঘ হয়ে যায় এবং পরিণাম খুবই খারাপ হয়। আমি আবার বলছি আমি স্বাধীন দেশের মানুষ হয়েও নিজেকে স্বাধীন দাবি করতে পারি না।

আমাদের সংবিধানে নাকি হরতাল অবরোধের কথা উল্লেখ আছে। তাতে নাকি বলা হয়েছে দাবি আদায়ের জন্য হরতাল অবরোধ করা যাবে! এখন প্রশ্ন সেখানে কি লেখা আছে জোর করে সাধারণ মানুষের উপরে হরতাল চাপিয়ে দেয়া যাবে? আমি একটা কথা বলি স্বাধীন দেশে হরতাল অবরোধ আবার কিসের? তবে কি আমাদের দেশ এখনও স্বাধীন হয়নি? আর একদিন হরতাল করা মানে দেশের উন্নয়নে ১০ দিন পিছিয়ে যাওয়া এটা কি সরকার এবং বিরোধী দল গুলো জানে না? জানলে কেন তারা দেশকে এত পিছিয়ে দিচ্ছেন? দাবি আদায়ের জন্য স্বাধীন দেশে মানববন্ধনই সব থেকে উপযুক্ত এবং গ্রহণ যোগ্য একটি মাধ্যম। কেন হরতাল করে জনগনের জান-মালের ক্ষতি করেন? সাধারণ মানুষকে পুলিশ গুলি করছে। তার প্রতিবাদে বিরোধী দল গুলো হরতাল ডাকছে আবার সেই হরতালে তারাই জনগনের জান-মালের ক্ষতি করছে যানবাহন-দোকান-ঘর-বাড়ী পুড়িয়ে দিচ্ছে! কি আজব একটা নিয়ম, সাধারণ মানুষের জীবন আজ পুতুলের জীবন হয়ে গেছে। জড় পদার্থ হয়ে গেছে সাধারণ মানুষের জীবন।

এই যে সরকারি দল এই যে বিরোধী দল গুলো এবং ইসলামী দল গুলো হ্যা আপনাদের হ্যা আপনাদেরকেই বলছি, আমরা সাধারণ মানুষ না না আমরা অতি সাধারণ মানুষ। আমারা বেশি কিছু বুঝি না আর বুঝতেও চাই না। আপনারা জেনেনিন আমরা সাধারণ মানুষেরা ভাল নেই। আপনারা আমাদেরকে ভাল থাকতে দিচ্ছেন না। আপনারা আমাদেরকে স্বাধীন ভাবে চলতে দিচ্ছেন না।

কি করলে আপনারা আমাদের ভাল থাকতে দিবেন, কি করলে আমাদেরকে স্বাধীন থাকতে দিবেন দয়া করে বলে দিবেন। আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। আমরা দিন আনি দিন খায়। দিনের পর দিন কাজ না করে আমাদের জীবন যায় যায় অবস্থা। কাজ করতে পারি না তাই টাকা আয় করতেও পারি না।

টাকার অভাবে খাদ্য কিনে পরিবারের মুখে তুলে দিতে পারি না। আপনারা তো আমাদের খেতেও দিচ্ছেন না। না খেয়ে আমাদের দিন কাটছে। আপনারা কি কখনো দিনমুজুর বা ভ্যান চালোকদের ঘরে গিয়ে দেখেছেন তাদের ঘরে উনন জ্বলে কি না? তারা ভাত রান্না করে কি না? তারা দু-মুঠো ভাত তাদের সন্তানদের মুখে তুলে দিতে পারে কিনা? এক কাজ করুন, আমাদের সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য-খাবার পৌছে দিন, তাহলে আমরা আপনাদের কথা মতো বাড়ী বসে হরতাল পালন করবো। কিন্তু দয়া করে আমাদের পেটে লাথি মারবেন না।

আমাদের পেটে মারার অধিকার আপনাদের কাউকে আল্লাহ দেননি। আপনাদের অত্যাচার আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। দয়া করে আপনারা মূল ইসলামের পথে আসুন, শান্তির পথে আসুন। আসুন সকল ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী-ধনী-গরীব বিবেধ ভুলে সবাই মিলে আদর্শ স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তুলি। যে স্বাধীন দেশের স্বপ্ন নিয়ে আপনার আমার পূর্ব পুরুষেরা স্বাধীনতা যুদ্ধে গিয়েছিলেন।

লেখকঃ মূল লেখক ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.