আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

........।সরকারের হ্যাঁ, দুদকের ন........।

ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ ড় ঢ় য় ৎ ং ঃ ঁ

সাবেক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের একটি পুরোনো দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করতে চায় সরকার। এরশাদের বিরুদ্ধে ১৮ বছর আগে করা রাডার ক্রয় দুর্নীতির মামলাটি গতকাল মঙ্গলবার প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি। তবে সরকার সুপারিশ করলেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ ধরনের মামলা প্রত্যাহারে সম্মতি দেবে না। জানতে চাইলে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন,সাবেক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের একটি পুরোনো দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করতে চায় সরকার। এরশাদের বিরুদ্ধে ১৮ বছর আগে করা রাডার ক্রয় দুর্নীতির মামলাটি গতকাল মঙ্গলবার প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি।

তবে সরকার সুপারিশ করলেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ ধরনের মামলা প্রত্যাহারে সম্মতি দেবে না। জানতে চাইলে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি একের পর এক মামলা দুদকে পাঠাচ্ছে, পাঠাতে থাকুক। তারা পাঠালেই তো আমরা সিদ্ধান্ত দেব না। সবকিছুরই একটি সময়সীমা আছে। ’ তিনি বলেন, এরশাদের যে মামলাটি কমিটি প্রত্যাহার করেছে, তা অনেক আলোচিত মামলা।

তাই সুপারিশ করলেই যে এ মামলা প্রত্যাহার হবে, তা-ও ভাবা ঠিক নয়। সময়ই বলে দেবে, দুদক এসব মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত দেবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে সুপারিশ এনে এরশাদের রাডার ক্রয় মামলাটি কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হয়। স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান সিকদার মামলাটি উপস্থাপন করেন। কমিটির সভাপতি আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করেন।

তবে এরশাদ পাঁচটি দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করলেও গতকালের বৈঠকে অন্যগুলো উত্থাপন করা হয়নি। ৮ মার্চ কমিটির শেষ বৈঠক। মামলা প্রত্যাহারের জন্য এরশাদের চিঠি: গত ১৯ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে এরশাদ বলেন, ‘আমার নামে রাজনৈতিক কারণে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য ২০০৯ সালের ১৭ মে আবেদনের সঙ্গে অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকার-নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়েছে। এসব কাগজপত্র ঢাকা জেলা কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট আদালতে সংরক্ষিত রয়েছে।

’ তিনি সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। স্বরাষ্ট্রসচিব এরশাদের এই আবেদন মামলাসংক্রান্ত কমিটিতে পাঠান। এরশাদের মামলা প্রত্যাহারের আবেদনে সুপারিশ করেন জেলা কমিটির প্রধান ও ঢাকা জেলা জজ মহিবুল হক। যোগাযোগ করা হলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনা করেই এ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে তাঁর কমিটি। এদিকে দুদক বলছে, কোনো অভিযোগ বা প্রমাণ ছাড়া কোনো মামলাই করেনি বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরো।

তাই জাতীয় কমিটি তড়িঘড়ি করে যে মামলাই প্রত্যাহারের সুপারিশ করুক না কেন, এ ব্যাপারে আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত দেবে না দুদক। তা ছাড়া কমিটি যেখানে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে যে তারা আর কোনো মামলা দুদকে পাঠাবে না, তাই এরশাদের মামলার জন্য পাঠানো সুপারিশ তারা গ্রহণ করবে কি না, সেটিও বিবেচ্য বিষয়। গত দুুই বছরে দুদকের কাছে মোট ৩৪০টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ পাঠায় সরকারের জাতীয় কমিটি। কিন্তু দুদক কোনো মামলা প্রত্যাহারে সম্মতি দেয়নি। প্রসঙ্গত, যেকোনো দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করতে হলে দুদকের সম্মতি লাগে, শুধু সরকারের কমিটি সুপারিশ করলে হবে না।

এ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি মোজাফ্ফর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, দুর্নীতির যেকোনো অভিযোগ এলে তা বিচারিক-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এগোনো উচিত। এভাবে দুর্নীতির মামলার রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে প্রত্যাহার করা হলে বিচারালয়ের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া যাঁরা এসব সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ দিচ্ছেন, তাঁদেরও অযোগ্যতা প্রমাণিত হয়। যেহেতু দুদক জানিয়ে দিয়েছে, দুর্নীতির কোনো মামলা তারা প্রত্যাহার করবে না, তাই শুধু রাজনৈতিক কারণে এসব মামলা প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করাও হাস্যকর। মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ প্রসঙ্গে কমিটির সহসভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন, মামলাটি বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখেছেন, এরশাদ দুর্নীতির আশ্রয় নেননি।

তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্যই এ মামলা করা হয়েছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ মামলা করা হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করার জন্য জাতীয় কমিটি গঠন করে। এর সভাপতি আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি শুরু থেকেই বলছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জোট আমল এবং পরের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যেসব ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ মামলা হয়, সেগুলো প্রত্যাহারের ব্যাপারে কাজ করবেন তাঁরা।

কিন্তু এরশাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছিল ১৯৯২ সালে, ১৮ বছর আগে। ফলে এই কমিটি কোন বিবেচনায় এ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে? এ প্রশ্নের জবাবে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখন আর সময় বিবেচনা করছি না। “রাজনৈতিক হয়রানিমূলক” হলেই তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হবে, এটা যে সময়েই দায়ের করা হোক। ’ রাডার মামলা: মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর কর্মকর্তা আলী হায়দার ১৯৯২ সালের ৪ মে এরশাদসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন, যা বর্তমানে বিশেষ মামলা নম্বর ১৪২/০৫ হিসেবে বিভাগীয় জজ আদালতে বিচারাধীন। এরশাদ মামলা প্রত্যাহারের আবেদনে বলেন, ‘কথিত রাডার কিনতে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।

কিংবা রাডার কেনার সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে আমি নিজে লাভবান হইনি। ’ মোট ৬৮৫৩ মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ: গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার-সংক্রান্ত বৈঠকে এরশাদের রাডার দুর্নীতি মামলাসহ মোট ৭৬টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি। বৈঠকে মোট ৮৬৩টি মামলা উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ২৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি, ৭৫৯টি মামলা পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে। এ পর্যন্ত ১০ হাজার মামলা এসেছে।

এর মধ্যে ছয় হাজার ৮৫৩টি প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। নিজেদের ভুলের ব্যাখ্যা: ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইন প্রতিমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, ‘ভুল মানুষ মাত্রেরই হয়। আমরা স্বীকার করি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় ভুল হয়ে থাকে। কেউ কেউ আবার এসব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করায় ক্ষুব্ধও হন। ২০-৫০টি মামলা ভুল হলে এই নয় যে আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছি।

কাজ করতে গিয়ে ভুল হবে, বিতর্ক হবে। তবে কেউ যদি আমাদের ভুল ধরিয়ে দেয়, আমরা পুনরায় তা পর্যালোচনা করব। বিএনপির সময় ৭৪ হাজার সন্ত্রাসীর মামলা রাজনৈতিক মামলা হিসেবে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। সে তুলনায় আমাদের মামলা কিছুই না। ’


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.