আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সমালোচনায় বিশ্বকাপ উদ্বোধন!!



বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে দর্শকদের মাঝে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দাওয়াত ও অতিথিদের বক্তৃতা এবং শিল্পীদের বিভিন্ন পরিবেশনা নিয়ে। সবচেয়ে বিরক্তিকর ছিল বিসিবি�র সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামালের সোয়া সাত মিনিটের বক্তৃতা। বিশ্ব ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একেবারে বেমানান ও অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেছেন তিনি। ইংরেজি এবং বাংলায় লিখিত বক্তৃতার পর এক্সটেম্পো বক্তৃতাও দেন তিনি।

ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণ, গ্রামে-গঞ্জে ক্রিকেটকে নিয়ে যাওয়া, কক্সবাজারে আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, ১ লাখ সিটিং ক্যাপাসিটির একটি স্টেডিয়াম করাসহ পল্টনি কায়দায় বক্তৃতা করেন তিনি। আর ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার পতা দু�দফায় ২০১১-এর পরিবর্তে �টু জিরো জিরো ওয়ান� বলেন। ভুল ইংরেজিতে ও ভুল উচ্চারণে তার বক্তৃতা ছিল খুবই বেমানান। সম্বোধনের সময় সংসদীয় কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে অনেকের নামই অযাচিতভাবে উচ্চারণ করেছেন তিনি। এ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনকে দিয়ে �ও আমার রশিয়া বন্ধু রে�-এর মতো গান কেন গাওয়ানো হল সেটা বোধগম্য নয়।

আর শিল্পী মমতাজকে দিয়ে �নান্টু ঘটকের কথা শুইনা অল্প বয়সে করলাম বিয়া, মুরুব্বিরা কইল সবাই নো টেনশন নো চিন্তা পাইছ জীবনে দারুণ একখান পোলা, পোলা তো নয় সে একখান আগুনের গোলা�-এ জাতীয় গান নির্বাচন কার মস্তিষ্ক থেকে এলো তা নিয়ে দর্শকরা প্রশ্ন তুলেছেন। বাংলাদেশের শিল্পীদের ২০ মিনিটের পরিবেশনা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে দর্শকদের। বাংলাদেশের দুই বরেণ্য নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা ও শিবলি মহম্মদের পরিবেশনায় এ সময়ের মধ্যে �দ্য রাইজিং টাইগার অব এশিয়া� পরিবেশিত হয়। এতে �৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে �৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, বাংলা নববর্ষ বরণসহ বিভিন্ন উত্সব এবং চাকমা, রাখাইন, মারমা, সাঁওতাল, গাঢ় উপজাতীয়দের সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। তবে এ পরিবেশনা আন্তর্জাতিক মানের হয়নি বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

বিশ্বকাপের থিম সং নিয়েও দর্শকরা খুশি হতে পারেননি। বিশ্বকাপ ফুটবলের থিম সং �ওয়াকা ওয়াকা ...� এখনও বিশ্বের কোটি মানুষের মুখে মুখে। অথচ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের থিম সং সে তুলনায় ন্যূনতম মানও ধরে রাখতে পারেনি। বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবখানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বারবার জোর করে টেনে আনা হয়েছে, সেটা না হয় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই করা হয়েছে। তুলনামূলকভাবে শেখ হাসিনার বক্তৃতা সংক্ষিপ্ত ছিল।

অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতায়ও পরিমিতি বোধ ছিল। আইসিসি�র সভাপতি ভারতের কৃষিমন্ত্রী শারদ পাওয়ার বাংলায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বক্তৃতা শুরু করলেও �বাংলাদেশ জিন্দাবাদ� বলে বক্তৃতা শেষ করায় অনেককেই মিটিমিটি হাসতে দেখা গেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিপত্তি ঘটে সময় নিয়ে। অনেক সাংবাদিক ও দর্শক টিকিট ও পাস থাকার পরও স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারেননি। কারণ তারা ৫টার পর স্টেডিয়াম গেটে হাজির হয়েছিলেন।

পুলিশের বক্তব্য, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছিল এ সময়ের পর কেউ ঢুকতে পারবেন না। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা বিকাল ৫টার আগেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আসবেন বলে ৫টার পর থেকে কাউকেই স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী প্রবেশের পর ৬টা ২০ মিনিটের দিকে বিশেষ ব্যবস্থায় কিছু পাসধারী এবং টিকিটধারী ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এরকম কোনো নির্দেশনা ছিল না।

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফিকে গতকাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। বিশ্বকাপে তার খেলার কথা থাকলেও নির্বাচকরা তাকে বাদ দেয়ায় খেলা তো দূরের কথা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাঠেও দেখা যায়নি তাকে। বিসিবি�র সাবেক সভাপতি বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবীর সময়ই বাংলাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের ভেন্যুটি চূড়ান্ত করা হয়। অথচ গতকাল তিনিসহ তার ওই সময়কার সহযোগীরা ছিলেন উপেক্ষিত। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এরকম জাতীয় অনুষ্ঠানে সবসময় আমন্ত্রিত হয়ে থাকেন।

কিন্তু এবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল এর ব্যতিক্রম। উৎস: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.