আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আড়িয়াল বিল ও না বলা কিছু কথা।। ইস্যু পুরান তাও কইতাছি।।

কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি ।

আড়িয়াল বিল কিছুদিন আগের ভয়াবহ এবং গা জ্বলা আন্দোলনের নাম। চায়ের টেবিল, বাসে, রাস্তায় হাটার সময়, অফিসের টেবিলে, খেলার মাঠে এবং ব্লগে কোন জায়গা বাদ নেই যেখানে আলোচনা হয় নি। কেউ বিমান বন্দরের ঘোর বিপক্ষে এবং কেউ বিমান বন্দরের পক্ষে অবস্থান করেছেন। যেহেতু আমরা ব্লগে আলোচনা করব তাই ব্লগ নিয়েই কথা বলি।

অনেক ব্লগে এই আড়িয়াল বিল নিয়ে অনেক পোষ্ট এসেছে; তেমনি বাকি ন্ই আমাদের প্রিয় সামু। ব্লগে অনেকে এই ইস্যু নিয়ে আগুন পোষ্ট দিয়েছেন অধিকাংশ ব্লগার আড়িয়াল বিলের বিপক্ষে অবস্থান করেছেনসেটি অনুমান করার অবকাশ না রেখে দেখাই গিয়েছে। ব্লগে কেউ সরকারের জাত বংশ উদ্ধার করেছেন কেউবা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জন্ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। খুবই ভাল কথা এবং খুবই ভাল লেগেছে কারণ আপনাদের দেশ প্রেম দেখে; যারা আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দরের পক্ষে ছিলেন তাদের দেশ প্রেম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখা গেছে তৎকালীন তুখোড় দেশ প্রেমিকদের। ভাবটা এমন যেন তারা দেশ প্রেমের উপর কোচিং সেন্টার খুলে বসেছেন।

তাদের কাছে গিয়ে এখনই দেশ প্রেমের উপর ক্লাশ করা প্রয়োজন। বাহ ভাল কথা। আমরা একটু অনুমানের উপর হিসাব করি কত জন আড়িয়াল বিল-এ বিমান বন্দর এর পক্ষে ছিলেন এবং কত জন বিপক্ষে ছিলেন। (অনুমান বাংলাদেশের) মোট জনসংখ্যা - ১০,০০০ জন। আড়িয়াল বিল-এ বিমান বন্দরের পক্ষে - ৩,০০০ জন।

(যেহেতু আওয়ামী লীগের অনেক সমর্থক এর বিরোধীতা করেছেন) আড়িয়াল বিল-এ বিমান বন্দরের বিপক্ষে - ৭,০০০ জন। দেখা গেল আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দরের বিপক্ষে ৭০০০ জন আছে যাদের মধ্যে প্রবল দেশ প্রেম আছে। কোনরূপ ঘাটতি ছাড়াই তাদের দেশ প্রেম উথলায় উথলায় পড়ে। তারা এই ৩০০০ জন যারা বিমান বন্দরের পক্ষে আছেন তাদের কোচিং করিয়ে দেশ প্রেম শিখাতে পারেন। এই ৭০০০ (আনুমানিক ৫০% উর্দ্ধে ) যদি এতই দেশ প্রেম থাকে তবে কেন আজকে বাংলাদেশের এই অবস্থা? কেন তারা দেশকে অতি উন্নতির পথ দেখাতে পারে না?" কেন তারা বারবার দুর্নিতীগ্রস্থ এই আওয়মী লীগ'কে ক্ষমতায় আনছে? কেউ কে পারবেন এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিতে।

নাকি এখানে অন্য কোন কারণ আছে? বিমানবন্দর দরকার কিনা? নতুন আন্তজার্তিক বিমানবন্দর দরকার কিনা সে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। উদ্ভট এক উটের পিঠে চলা স্বদেশ বাংলাদেশ! এখানে বিমানবন্দর স্থাপনের বিরোধীতা করা হয়। ট্রানজিট সারা দুনিয়ায় বাস্তবতা। গাড়িতে উঠে মানুষ এক দেশ পেরিয়ে চলে যায় আরেক দেশে। বাংলাদেশে যাঁরা ট্রানজিটের বিরোধীতা করেন, তাঁরাও যান।

আবার সারা দিন মানুষকে বোঝান-ইন্ডিয়া আইলো! ইন্ডিয়া খাইলো! আবার ক্ষমতায় গেলে নিজের কমিশনের স্বার্থে জাপানি রিকন্ডিশন গাড়ির আমদানি নিষিদ্ধ করে সুযোগ করে দেওয়া হয় ভারতীয় লক্কড় ঝক্কড় মার্কা গাড়ি আমদানির? একটা সিএনজি অটোর বাংলাদেশে দাম কতো আর ভারতে কতো? এগুলোকে যে দেশের অসহায় যাত্রী সাধারণের গলার ফাঁস করা হয়েছিল, আজও কি এ থেকে মুক্তি মিলেছে? রঙিন টেলিভিশন চালুর বিরোধিতাও করা হয়েছিল বাংলাদেশে। বলা হয়েছিল, রঙিন টিভি কিনতে পারবে না গরিব মানুষরা। এখন তো উল্টো সবাই দেখছেন প্রতিযোগীতার বাজার দিনে দিনে সস্তা হয়ে যাচ্ছে রঙিন টিভি। সাদাকালো চবির মতো সাদাকালো টিভিও চলে যাচ্ছে জাদুঘরে। অষ্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা আড়াই কোটির মতো।

আর বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে ছয় কোটির বেশি। অনেক কিসিমের বিল পরিশোধসহ নানা কাজকর্ম মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সারা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সমস্যা থেকে শুরু করে নানা কারণে ডিজিটাল প্রযুক্তি যত দ্রুতগতিতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার কথা ছিল তা হয়নি সত্য; কিন্তু আজকের অবকাঠামোগত এসব সমস্যা অন্যখানে। মিডিয়া অফিস থেকে শুরু করে নানা জায়গায় ক্ষমতাবান নেতা-আমলাসহ দেশের অনেক কিছুই এনালগ ঘরানার। অথবা এক রাজনৈতিক দল মনে করছে, এটা তো আমি করব।

ওই দল কেন করে ফেলবে? যেকোন বড় একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা যে একটি দেশের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, সে সংস্কৃতি আজ পর্যন্ত গড়ে উঠল না বাংলাদেশে। একদল ক্ষমতায় গিয়ে বন্ধ করে দেয় আগের সরকারের অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড। এমনিতে ঢাকার অ্যাভিয়েশন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানেন বাংলাদেশের এয়ারস্পেসটা কি লোভনীয়। ছোট দেশটির প্রায় এক কোটি মানুষ এখন বিদেশে থাকেন। এ সংখ্যাটি প্রতি বছর শুধু বাড়ছে।

ঢাকায় ছোট ছোট অফিস সাজিয়ে নানা দেশের এয়ারলাইন্স শুধু ব্যবসাই করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। আরো অনেক এয়ারলাইন্স আসতে চায় বাংলাদেশে। তাদের অনুমতি দেওয়া হয় না কেন? অথবা নিরাপত্তাকে যারা সবচেয়ে অগ্রাধীকার দেয়, তেমন অনেক এয়ারলাইন্স ঢাকায় না এসে দিল্লি-সিঙ্গাপুর-দুবাই-কুয়ালালামপুর থেকে বাংলাদেশের যাত্রী পরিবহনের কাজটি করে যাচ্ছে? বিএনপি বলেছে যজরত শাহজালাল (র.) আন্তজার্তিক বিমানবন্দরের আরেকটি রানওয়ে করে সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিব্যি চলে যেতে পারে ২০-২৫ বছর। তা ২০-২৫ বছর পরে যদি তা লাগবেই তা এখন শুরু করলে ক্ষতি কি! আড়িয়াল বিলে মানুষ জমি হারিয়ে নিঃস্ব ভয়ে অজুহাত দেখিয়ে আমাদের একজন ব্লগার সহানুভূতি দেখিয়ে অনেকদিন ঝুলে ছিলেন ষ্টিকি পোষ্টে। কি রকম মলম/সান্ডার তেল বিক্রির মত আবেগ দেখিয়েছিলেন মনে আছে।

যেখানে এমন একটি মন্তব্য করেছিলাম যার উত্তর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর স্থাপন আমাদের জন্য কেন প্রয়োজন বা কেন প্রয়োজন না সেই তর্ক করার আগে আমাদের রাজনীতিবিদ এবং জনগনের মূল্যবোধ খোড়া মানবতা সম্পর্কে একটু লক্ষ্য করুন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যেই সরকারেই হোক দুর্নিতীর জন্য তাদের দোষারোপ করব না। কারণ নির্বাচনের আগে তারা যেই ওয়াদাই করুক তা পূরণে ব্যর্থ হবার পেছনে আমরাই কারণ। নির্বাচনের জয়ী হবার জন্য ভোটের প্রয়োজন হয় কিন্তু আমরা জনগন োকা**দার মত পাঁচ থেকে দশ টাকার বিনিময়ে ভোট বিক্রি করে দেই একবারও ভাবি না কত্তবড় ভুলটা আমরা করছি কার হাতে আমরা আমাদের সোনার বাংলাদেশ কে তুলে দিচ্ছি পাঁচ বছরের জন্য।

কয়েকটি টাকার লোভে দেশ কে বিক্রি করে দিচ্ছি। তারা নির্বাচিত হয়ে দুর্নিতী করে তাদের বিনিয়োগ কৃত টাকা তো তুলবেই। এটাই স্বাভাবিক। আপনি আমি ও যারা ব্লগে এসে কলমে ঝড় তুলে তারাও সেটাই করত। আড়িয়াল বিমান বন্দর হয়ে কারা লাভবান হচ্ছে? এটা বড় ব্যাপার না ব্যাপার হচ্ছে আমরা কি পাচ্ছি? আমাদের দেশে একটি স্যাটেলাইট শহর হচ্ছে; পর্যটনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করবে এই স্যাটেলাইট সিটি।

আর মুন্সিগঞ্জ হবে বাংলাদেশের প্রাণ কেন্দ্র; ল্যাংড়া খোড়া রাজনীতিবিদ এটা না বুঝে বিরোধিতা করার জন্য আবারও একই প্রক্রিয়া োদনা জনগণকে ব্যবহার করছে। আর কিছু োদনা ব্লগার এর পেছনে তেল মালিশে ব্যস্ত; এই ব্যস্ততা দেখে ভালই লাগে। আজ না হোক কাল না হোক আরও ২০-৩০ বছর পর আমাদের এমন একটি বিমান বন্দর প্রয়োজন অবশ্যই হবে; (নেপাল একটি ছোট দেশ তারপরও সেই দেশে ৩০টি বিমানবন্দর বাংলাদেশের সম আয়তনের দেশ জাপানে আছে দেড়শত বিমান বন্দর); যখন আমরা আর জায়গা পাব না; তখন বসে বসে আঙুল চোষা ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। কারণ আড়িয়াল বিলে ইত্যিমধ্যে সাধারণ কৃষক ও মানুষ বেশী দামের লোভে জমি গুলো ভূমি দস্যুদের হাতে বিক্রি করে দিচ্ছে। (একটি কৌতুক আমার মনে হয় যারা ব্লগে ঝড় তুলছে তারা ভূমিদস্যুদের কাছে ভাগ পাইতেছে।

দুঃখিত এই কৌতুকের জন্য) একটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন সরকার যদি আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর তৈরি না করত। সেখানে বেসরকারি কোন কোম্পানি যদি অন্য প্রজেক্ট করার জন্য অতি সুকৌশণে জমি কিনত তাহলে দেখা যেত আজ যারা প্রতিবাদ করছে (বিমান বন্দর বিরোধকারী যাদের আমরা সাধারণ কৃষক; উপরের ছবিতে বিমান বন্দরের বিপক্ষেদের কথা বলছি) তারা তাদের এই শেষ সম্বল টুকু হাত ছাড়া করতে দ্বিধা দ্বন্ধে ভুগত না। এখন ভুগছে কারণ বিরোধিতার জন্য বিরোধ করার জন্য অনেক লোক বসে থাকে অর্থ ঢালতে; সহজেই অনুমেয় ও প্রমাণিত। ১৯৯১ এর ঘটনা কি আমরা ভুলে গেছি; পরিকল্পনা করে আগেই সিদ্ধান্ত না নেয়ার খেসারত স্বরূপ আমাদের দেশ আজকে আইটিতেত ১৫ বছর পিছিয়ে আছে। সেই সময় যদি ফাইবার অপটিক লিংক বিনামূল্যে হাতছাড়া না করতাম তবে আজকে আমরা ১৫ বছর এগিয়ে থাকতা।

অনেকেই বলেন যে বিদ্যুৎ, জ্বালানী, দ্রব্যমুল্য এসব করে তারপর বিমান বন্দর করার ব্যপারে চিন্তা করতে। কিন্ত ব্যপার গুলো আলাদা। বিদ্যুৎ, গ্যাস নিয়ে সরকার তাদের কর্মপরিকল্পনা দিয়েছে এবং সে মতে এগিয়ে চলেছে। দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রনের সাথে এব্যপারটি তেমন যোগসাজশ নেই। আর মংলা পোর্ট সম্প্রসারনের কাজ শিগগিরই শুরু হচ্ছে, ঢাকার যানজট নিরসন কল্পে বিভিন্ন পদক্ষেপ দৃশ্যমান।

ঢাকা চিটাগাং হাইওয়ে ৪লেনে উন্নীত করনের কাজ চলছে। যা ধারাবাহিক ভাবে ৬ লেনে উন্নীত হবে। আর আড়িয়াল বিল নিয়ে যাদের মেকি কান্না আমাকে দয়া করে জানাবেন গত১৫-২০বছরে কি পরিমান কৃষিজমি বিনষ্ট হয়েছে। এবং আগামী বিশ বছরে এই চোখের জলের কৃষিভুমির কি হবে তা সহজেই অনুমেয়। কারন বুড়িগংগা পার হয়ে ডেভেলপারদের দৌরাত্ব দেখেই আন্দাজ করা যায় আড়িয়াল বিলের পরিনতি।

জমি হারানোর ভয়ে আড়িয়াল বিলের মানুষ একাট্টা হবে এটি খুব স্বাভাবিক। এর আগে সেনা হাউজিংয়ের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে এমন কান্ড হয়েছে। কিন্তু আড়িয়াল বিল নিয়ে বিএনপি যে ষ্ট্যান্ড নিয়েছে, সেনা হাউজিংয়ের জমির বিষয়ে তা করেন নি কেন? সেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম ছিল না তাই? বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানে না বিএনপি। শুধু মানে না না, নামও শুনতে পারে না। অবাক এক বাংলাদেশ! যে নেতার নামে দেশ স্বাধীন হেয়েছে, সেই নেতার নাম আজকে শুনতে পারে না।

বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আজকের রাম-শ্যাম-যদু-মধু অনেকে পূর্ব পাকিস্তানের কে কোথায় থাকতেন? কিন্তু তাঁরাই শুনতে পারে না বঙ্গবন্ধুর নাম!!!!

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.