আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিটলার থেকে হিলারী



“আমি ভেবেছিলাম আমাকে এত দূর যেতে হবে না। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, আমি ভুল ভেবেছিলাম। আপনি জানেন এবং আমরাও জানি কীভাবে আপনার সরকার ক্ষমতায় এসেছে। ভুলে যাবেন না, নির্বাচনের পর আমরা বলেছিলাম, সেটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে এবং আপনাকে সাহায্য করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী, আপনি জানেন দিল্লিতে আমাদের বন্ধুদের নির্দেশে কীভাবে ফলাফল আগেই ঠিক করা হয়েছিল।

তারা যেভাবে চেয়েছিল সেভাবেই আমরা চলেছিলাম। প্লিজ, আপনি এটাও ভুলে যাবেন না যে, জেনারেল মইন যিনি আপনাকে ক্ষমতায় এনেছিলেন তিনি এখন আমেরিকাতে আছেন এবং আপনি যতখানি কল্পনা করতে পারেন, তার চেয়েও বেশি এখন আমরা জানি। আমি বলছি না যে, আমরা এখনই আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যাব। আমি শুধু ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন ইসু তুলে ধরছি। ” হিলারী ক্লিনটন এভাবে ধমকে কথা বলেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।

ইংরেজিতে এই ধমকের স্পিড অনেক বেশী। শফিক রেহমানের অনুবাদে বাক্যগুলো এনালগ মন্থরতায় আক্রান্ত। ২০০৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে হিলারী এরকম ব্রেকিং নিউজ দিলেন,অথচ তাতেও বিএনপির এমন কোন লাভ হয়নি। কারণ ২০০১ এর নির্বাচনটিও এরকম ছিল। ফলাফল আগেই ঠিক করা হয়েছিল।

ফলাফলের ফ্যাক্স আগমনের গতিপ্রকৃতির দিকে মাস্টার কনট্রোল কক্ষে বসে আমি প্রত্যক্ষ করেছি। হিলারীর কথার সঙ্গে মিলিয়ে নিলে ২০০১ এর বিএনপি-জামাত ব্রুট মেজরিটির পিছে বুশ প্রশাসনের পঞ্চায়েতি চোখে পড়ে। বুশ-প্রশাসনের দুচারটে টিকটিকি হাওয়া ভবনে বসে লালন গীতি শুনেছেন। লালন গাতক নিজেই তথ্যটি জানিয়েছেন। শফিক রেহমানের হিলারীলিক্স কল্পকাহিনী থেকে দুটো খবর আমরা কনফার্ম করলাম।

২০০৮ এর উইন্টার অব ডিসকন্টেন্ট নির্বাচনের ফল পূর্ব নির্ধারিত ছিল। ইউনুসের প্রতি কটাক্ষ করে হাসিনা ক্লিনটন পরিবারের রোষে পড়েছেন। ২০০৮ এর নির্বাচনে যা হয়েছে, ২০০১ এর নির্বাচনেও তাই হয়েছিল। ওয়াশিংটনের রক্ষণশীল রিপাবলিকানরা বিএনপিকে বেছে নিয়েছিল। ২০০৮এর ডেমোক্রাটরা ইউনুসকে বেছে নিতে ব্যর্থ হয়ে অগত্যা হাসিনাকে প্লাস ওয়ান দিয়েছে।

হিলারীর টেলিফোনালাপে তিনি বলছেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনি জানেন দিল্লিতে আমাদের বন্ধুদের নির্দেশে কীভাবে ফলাফল আগেই ঠিক করা হয়েছিল। তারা যেভাবে চেয়েছিল সেভাবেই আমরা চলেছিলাম। প্লিজ, আপনি এটাও ভুলে যাবেন না যে, জেনারেল মইন যিনি আপনাকে ক্ষমতায় এনেছিলেন তিনি এখন আমেরিকাতে আছেন এবং আপনি যতখানি কল্পনা করতে পারেন, তার চেয়েও বেশি এখন আমরা জানি। ২০০৮ এর নির্বাচনের আগের রাতে চারঘাট উপজেলার সারদা বাজারে দেখেছি, টাকা বিতরণের সময় হাতে নাতে ধৃত এক ইউপি চেয়ারম্যান রত্নকে পুলিশ মাস্টার কনট্রোল রুমে নিয়ে যাবার পর ছেড়ে দেয়া হয়। শাড়ীর ট্রাক ধরা পড়েছে, নির্বাচন কমিশন না দেখার ভান করেছে।

এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন একমাত্র ফলাফল প্রচারের কর্তব্য পালন করেছে। নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে হিলারী জানাচ্ছেন, আপনি জানেন দিল্লিতে আমাদের বন্ধুদের নির্দেশে কীভাবে ফলাফল আগেই ঠিক করা হয়েছিল। এই নির্বাচনের ফলাফলে মহাজোট ব্রুট মেজরিটি পেয়েছে। ব্যবসায়ী কলাগাছ প্রার্থীরা নূহের নৌকায় চড়ে সংসদে গণতন্ত্রের জওয়ানি শীর্ষক মুজরায় অংশ নিয়েছে। আমজনতার ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতো, কিন্তু কলাগাছ গুলো হেরে যেতো।

সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচনে চারঘাটে রাজনীতি নিরপেক্ষ মিস নার্গিস জিতে প্রমাণ করেছেন, ২০০৮ এর ডিসেম্বর নির্বাচনের ফলটি বানোয়াট ছিল। ২০০৮ এর ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তৃণ মূলের জনপ্রিয় নেতা রায়হান তৃণ মূলের ভোটে নির্বাচিত হলেও দলীয় নমিনেশান পাননি। বি এনপির জনপ্রিয় নেতা চাঁন ও দলের নমিনেশান পাননি। বাঘা চারঘাটে টাকা-শাড়ী-সোয়েটার-বিনোদনের অনুপান এর বিনিময়ে যে ভোট বানিজ্য হয়েছে, তা বাংলাদেশের ভঙ্গুর গণতন্ত্রের এক কমেডি। মিস নার্গিস চারঘাটের গণ জাগরণের প্রতীক।

নার্গিস ২০০৮এর উইন্টার অফ ডিসকনটেন্টকে সামার অফ এওকেনিং এ রূপান্তর করেছেন। ২০০৮এর ডিসেম্বর প্রহসনের প্রতিশোধ নার্গিস নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন নিজেই এখন ২০০৮ এর নির্বাচনে তাদের পারফরমেন্সের পুণমূল্যায়ন করলে বুঝতে পারবে থলের বেড়াল বেরিয়ে গ্যাছে। ২০০৮এর নির্বাচনে রাজশাহী-৬ আসনে সাংসদ পদে প্রতিযোগিতা করে আমি হেরেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আকুল আবেদন, আমার নির্বাচনী ব্যয়ের তিন হাজার ইউরো আমাকে ফেরত দিন।

কারণ ফেয়ার প্লে গাউন্ড ছিল না। টাকা বিতরণের সময় ধৃত শ্রীকৃষ্ণ ইউপি চেয়ারম্যান রত্নকে সারদা বাজারের হাজার হাজার মানুষ দেখেছে,কয়জন সাক্ষী চাই সিইসির। আপনি চাইলে বাঘা-চারঘাটের দশজন সাংবাদিক, জননেতা রায়হান-চান, সারদা বাজারের ফকির সন্যাসী, তথ্য প্রযুক্তি ও বিতর্ক আন্দোলনে সম্পৃক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আর ঋজু তারুণ্যকে জিজ্ঞেস করতে পারেন দৈবচয়নে। সাংবাদিক হিসেবে রেকর্ড করে পুরো প্রতিবেদন আপনার কাছে জমা দিতে পারি। অথবা জয়ী প্রার্থীকে জিজ্ঞেস করুন।

আমি নিশ্চিত উনি সত্যি কথাটি বলবেন। আমি উনাকে দুই দশকের বেশী সময় ধরে চিনি। উনি নিজেও জানেন সিইসির দাবীকৃত লেভেল প্লেইং গ্রাউন্ড ছিল না, নির্বাচন কমিশনের চারঘাটে কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছে ইউপি চেয়ারম্যান রত্নের খবরটি নেই। কারণ তথ্য সংগ্রহের প্রশিক্ষণ তিনি হয়তো সিইসির কাছে পাননি। আমি আশা করবো ২০০৮ এর ডিসেম্বর থিয়েটারে আমার খরচ হয়ে যাওয়া তিনহাজার ইউরো পরম পূজনীয় সিইসি মহোদয় শিশু একাডেমীর ডিজি মহোদয়কে উপহার দেবেন, যাতে শিশু একাডেমী শিশুদের ইলেকট্রনিক ভোট দেবার কার্ণিভাল করে ভবিষ্যতের সফল গণতন্ত্রের সহযাত্রী হিসেবে শিশুদের গড়ে তুলতে পারে।

হিলারীর তথ্য মিথ্যা হতে পারেনা। তবে হিলারীর কন্ঠসর ভালো লাগেনি। স্টার প্লাস নাটকের রণরঙ্গিনী ননাসের মতো হিলারী ধামকি দিচ্ছেন হাসিনাকে। হাসিনা সেই অসহায় ম্যায় কুসুম। ইউনুসের পরিবর্তে অমর্ত্য সেন, বাংলা একাডেমী জানে নোবেলে নোবেল ক্ষয়।

ঢাকা গ্রামে ইউনুসকে অপমান করে পৌরোহিত্যে অমর্ত্যকে কষ্ট দিতে নিয়ে আসার সাফল্যে স্টার প্লাসের যে কোন কুচুটে নাটকের চেয়ে জমে উঠেছে হাসিনা-ইউনুস মুখ দেখাদেখি বন্ধ ধারাবাহিক। হাসিনাকে যেখানে যুদ্ধাপরাধী-জঙ্গিবাদ-দুর্নীতি আর বিএনপির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে, সেখানে নরওয়ের একটি টিভি রিপোর্টের শিহরণে গদগদ হয়ে ধর ইউনুস মার ইউনুস ঢাকা মব থিয়েটারের অংশ হয়ে নোবেল রেসে নেমে হাসিনা অযথা ইড-ইগো-সুপার ইগো দেখাচ্ছেন। একি ইগো দেখালেন হিলারী। ইন্দিরারো একি ইগোতে ভারতে শিখ মন্দির পুড়েছে। খালেদার ইগোর গল্প আজ আর না তুলি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।