আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিথ্যাচারের জন্য শেখ হাসিনার ক্ষমা চাওয়া উচিত। বিরোধীতার খাতিরে বিরোধীতা নয়, এটাই চরম বাস্তবতা



লেখাটি পড়ার আগে ভিডিওটি একবার দেখুন। লেখাটি পুরোপুরি পড়ার পর বারবার মিলিয়ে দেখুন, কারণ শেখ হাসিনাও নাকি ভিডিওটি বারবার দেখেছেন এবং তিনি নিশ্চিত বক্তৃতাটি ৯৬ সালের। আর আপনার মতটি জানাতে ভুলবেন না যেন। http://www.youtube.com/watch?v=QY5mLQwYoiM ভিডিওটির শব্দে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে, তবে কম ভলিয়্যুমে কয়েকবার শুনলেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে শেখ হাসিনার বক্তব্য বিগত চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের পরের কোন সময়ের। তিনি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, ” … বিদ্যুতের সমস্যা, আওয়ামী লীগের আমলে বিদ্যুৎ বানিয়েছিলাম, ইনশাআল্লাহ আবার যদি আসতে পারি, বিদ্যুতের উৎপাদন আমরা বাড়াতে পারবো।

রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, যেভাবে উন্নয়ন করেছিলাম, ঐ বক্তৃতার উন্নয়ন না, সত্যিকারভাবে মানুষ যাতে সুফল পায় সে উন্নয়ন আমরা করবো। ……. আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। বিশ টাকা চাল খাব না, ধানের শীষে ভোট দেব না। নৌকা মার্কায় ভোট দেব দশ টাকায় চাল খাব। ” এর পরের কথা শুনুন (যখন কথাটি বলছেন তখন ভিডিওটির সময় ৫৯ সেকেন্ড, এবং দ্বিতীয় ভিডিওটির সময় ১.০৩ মিনিট)ৎ যারা কট্টর আওয়ামীপন্থী তারা ইতোমধ্যে নিশ্চয়ই নড়েচড়ে বসেছেন।

বলবেন, আওয়ামী আমল বলতে এখানে শেখ হাসিনা স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী শাসনামলের কথা বলেছেন। হ্যা, এমনটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক এবং এ কথা রাষ্ট্র করেও দেয়া যেত যদি না শেখ হাসিনার ডায়াসে এসটিভি ইউএস-এর মাইক্রোফোনটি না থাকতো। সচেতন মহল নিশ্চয়ই জানেন এটিএন বাংলা ১৯৯৭ সালের ১৫ জুলাই মুম্বাইয়ের এটিএন মিউজিক-এর ব্যানারে সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টার সময় (চাংক) জিটিভির কাছ থেকে কিনে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যাটেলাইট চ্যানেলের জগতে যাত্রা শুরু করে। এর পরে ১৯৯৯ সালে চ্যানেল আই এবং ২০০০ সালে একুশে টেলিভিশন অন এয়ারে আসে, যাদের পথ ধরে এখন বাংলাদেশে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের ছড়াছড়ি। সম্ভবত ২০০৪ সালের দিকে আমেরিকা ভিত্তিক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এসটিভি ইউএস যাত্রা শুরু করে এবং ২০০৭ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশেসম্প্রচার বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

তবে তখনো টিভি চ্যানেলটির অস্তিত্ব ছিল এবং নিয়মিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রিপোর্ট আমেরিকায় সম্প্রচার করতো। চ্যানেলটি আজ আর বেচে আছে কি না জানা নেই। এবার ভাবুন যেখানে ১৯৯৭ সালের পূর্বে পৃথিবীর কোথাও বাংলা স্যাটেলাইট টিভির অস্তিত্বই ছিল না সেখানে কি করে শেখ হাসিনার বক্তৃতা রেকর্ড করার জন্য ৯৬ সালেই ক্যামেরা নিয়ে হাজির হলো এসটিভির ক্রু ??? তাহলে এবার চিন্তা করুন নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যেখানে এসটিভির জম্মই হলো ২০০৪ এ, সেখানে এসটিভি কিভাবে ১৯৯৬ সালে নেত্রী ভাষন প্রচার করেছিল ?? সুতরাং এ থেকে স্পষ্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদত্ত বক্তৃতাটি ২০০৮ সালের যে কোন সময়ের। লাশ আর মিথ্যাচার এ দুই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর মিথ্যে বলার ক্ষেত্রে নেতানেত্রীদের মাঝে যেন অঘোষিত প্রতিযোগিতা লেগেই আছে।

এ ক্ষেত্রে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যখন জাতীয় সংসদে দাড়িয়ে মিথ্যে কথা বলেন, যা সংসদ টিভির মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে ভুল তথ্য সম্প্রচার করে, তখন তার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব আনা একান্ত জরুরী। আশাকরি বিরোধী দল চলতি অধিবেশনে সংসদে যোগদান করে প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাচারের তথা দশ টাকা চাল খাওয়ানোর মিথ্যে প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশ জাতিকে বোকা বানানোর অপরাধে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে। এটা ঠিক যে অনাস্থা প্রস্তাবটি সংসদে বাতিল হয়ে যাবে ,কারণ মিথ্যাবাদীদের দল আওয়ামী লীগই ওখানে সংখ্যাগরিষ্ট। কিন্তু সংসদের ইতিহাসে এটি লিপিবদ্ধ থাকুক যে, শেখ হাসিনা মিথ্যেবাদী, মিথ্যে প্রতিশ্রুতির অপরাধে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল এটি সংসদে নথিভুক্ত হোক, যাতে পরবর্তী প্রজন্ম মুখোশের আড়ালের বিভৎস চেহারাটি চিনে রাখতে পারে। সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত, সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.