আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারও দোররা ....শেষ কোথায়?



মনুষ্য সমাজের জন্য আবারও বিড়ম্বনা সৃষ্টি করল শরীয়তপুরের বকধার্মিক সমাজপতিরা। একজন ধর্ষিতা কিশোরীকে দোররা মেরে হত্যা করার জঘন্য নজির স্থাপন করল তারা। যে গ্রামে এ ঘটনা ঘটল সেটি আদৌ মনুষ্য সমাজের নিবাস কিনা সে প্রশ্নটিও সামনে এসেছে প্রাসঙ্গিকতার কারণে। কারণ একজন ধর্ষিতা কিশোরীকে দোররা মারা হলেও সমাজপতি ও বকধার্মিকদের কাণ্ডজ্ঞানশূন্য আচরণের বিরুদ্ধে কেউই টুঁ-শব্দটি করেনি। পত্রিকান্তরে প্রকাশ শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার চামটা গ্রামের হেনা নামের ১৪ বছর বয়সী কিশোরী সম্প্রতি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে এলে মাহবুব (৪০) নামের এক লম্পট তাকে বাড়ির এক পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে।

হেনার চিৎকারে ধর্ষকের স্ত্রী এবং ভাই এগিয়ে আসে। তারা উল্টো হেনাকে আটক করে বেদম প্রহার করে। পরবর্তীতে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার সালিশ ডাকা হলে স্থানীয় মসজিদের ইমাম, একজন মাদ্রাসা শিক্ষক ও ইউপি মেম্বরের উপস্থিতিতে দু'জনকে দোররা মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সালিশে ধর্ষণের বদলে দু'জনের অবৈধ সম্পর্ক 'আবিষ্কার' করা হয় এবং এর ভিত্তিতে ফতোয়াবাজির মাধ্যমে দোররা মারা হয়। দোররা মারা অবস্থায় হেনা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং ওই দিনই সে মারা যায়।

ইসলামে ফতোয়ার বৈধতা থাকলেও তা কেবল স্বীকৃত আলেমদের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের আইনে ফতোয়াবাজি বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ করা হলেও দেশের গ্রামাঞ্চলে আইন ও ধর্মীয় অনুশাসন লক্সঘন করে ফতোয়াবাজির ঘটনা ঘটছে। প্রায় সর্বক্ষেত্রেই নারীরা এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। শরীয়তপুরের আলোচ্য ঘটনায় হেনা যে ধর্ষিত হয়েছিল এর প্রমাণ_ তার গালে কামড়ের দাগ ছিল।

তারপরও বর্বর সমাজপতি এবং তাদের সহযোগী বকধার্মিকরা অবৈধ সম্পর্কের কথা বলে তাকে দোররা মেরে হত্যার ধৃষ্টতা দেখায়। আমরা প্রচলিত আইন ও ধর্মীয় অনুশাসনবিরোধী এ ধরনের ফতোয়াবাজি ও হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাতে চাই এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করি। নিজেদের সভ্যসমাজের মানুষ হিসেবে পরিচয় দানে ফতোয়াবাজির নামে মধ্যযুগীয় বর্বতার অবসানে সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কঠোর ভূমিকা নেবে_ এমনটিই কাম্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.