আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভদ্র ধর্ষণ

কথা প্যাঁচাই না।

বেশিদিন আগের কথা নয়। আমি তখন যুব রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সক্রিয় কর্মী। বয়স কম, রক্ত গরম। ফ্রি সার্ভিস দিতে কোন কুন্ঠা নেই।

রোজার সময়। লালবাগে আগুনে পুড়ে শতাধিক বাড়ি ধ্বংস। আগের দিন হাড় ভাঙ্গা খাটুনি খেটে ত্রাণ কার্ড বিতরন করে আজকে বিতরন কর্মকান্ডে শামিল হতে এসেছি। ভিতরে চরম উত্তেজনা। প্রায় শ'চারেক মানুসের চাপ ছোট্ট প্রাইমারী স্কুলটিতে।

চাপ সামলাতে আমরা জনা পনের কর্মী রীতিমত হিমশিম খাচ্ছি। একটু পরপরই জনতার চিৎকার- চেচামেচি। সবাই ঘন্টা দুযেক ধরে অপেক্ষা করছে ত্রানের জন্য। আমি নিজেও বিরক্ত। ধুর...... আর কত? গেলাম এক সিনিয়র ভাই এর কাছে।

আর উনি দিলেন দারুন একটা সংবাদ। ঐ আসনের সংসদ সদস্য (তৎকালীন) জনাব নাসির উদ্দিন পিন্টু সাহেব নাকি পদধূলি দিবেন। তাই শুভ কাজে এত দেরী!! ত্রাণ পুরোটাই রেড ক্রিসেন্টের । ব্যবস্থাপনাও আমাদের । খাটুনি খেটে ত্রাণ বিতরন কাজ ও আমাদের।

অথচ পিন্টু সাহেব এলেন এমন ভান করে যেন তিনিই সব ব্যবস্থাপক। সাথে বি,টি,ভির একজন ক্যামেরা ম্যান। এরপর চিরাচরিত উন্নয়ন মূলক ভাষণ। লাল বাগের জনগনের জন্য তার অবদানের ফিরিস্তি। ঝাড়া আধা ঘন্টা উন্নয়নের বলৎকার।

উনার ঠিক পেছনে দাড়িযে ত্রাণ বাক্স টেবিলে উঠিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ছিলো এই অধমের। গরিব দু'চার জন মা-বোন-ভাইয়ের গায়ে হাত বুলিয়ে আর ক্যমেরার দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে হেসে হেসে ত্রাণ বাক্স বিতরন যখন করছিলেন, তখন তার ভাব ছিলো এমন-- যেন তার "দয়া"-য় এই অধম কজনা বেঁচে যাচ্ছে!! সুবিধা ভোগী নেতাদের চরিত্র আমার সর্বাংগে তখন যেন আগুন ধরিয়ে দিচ্ছিল। ত্রাণ কর্মকান্ড শেষে দামি গাড়িতে করে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়তে নাড়তে ফিরে গেলেন এক "মহান নেতা" ! আর পেছনে আমি ঘটে যাওয়া নোংরামি -র ধাক্কায় স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ। নেতা শব্দটির "ভদ্র ধর্ষণ" যারা করলেন (অতীতে করেছেন, ভবিষ্যতে ও করবেন) , আসুন তাদের প্রতি ঘৃণা ভরা শ্রদ্ধায় মাথা নুইয়ে দেই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।