আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি ঢাকায় যাব!

এখন রাত দুটো'র বেশী বাজে। একা বসে আছি ল্যাপটপের সামনে। হঠাৎ করে একরাশ তাজা বেলী ফুলের গন্ধ পেলাম যেন ! আমার সারা ঘর ম ম করে উঠল, চমকে উঠলাম ! একি ভ্রম ! একি সত্যি ! একি সত্য-মিথ্যার মাঝামাঝি এক ঝলক স্বপ্ন ! একি আমার অবচেতন মনের চাওয়া ! একি ইচ্ছে ! দুরন্ত বেলী ফুলের প্রেম ! আমার এমন হয়, অনেক আগে আমি তখন ক্লাস নাইন, আমি তখন শাড়ী, স্কুল থেকে ফেরার সময় আমার দক্ষিণ হাতের মুঠো খুলতেই, সে কি বকুলের গন্ধ ! বকুল ফুলের গন্ধে পাগল আমি ঘরে ফিরে সেই হাত মাকে শুঁকিয়েছিলাম। মা অবাক হয়ে বললেন, 'সত্যিই তো' !

মহিলা সমিতি মঞ্চে আমি তখন নাটক করছি। German dramatist Bertolt Brecht এর The Threepenny Opera অবলম্বনে 'জনতার রঙ্গশালা' তো এই নাটকে দারুণ একটা সুযোগ এলো প্রতিটি শো-তে বারোটা করে বেলী ফুলের মালা খোঁপায় পরার (যেখানে সখিনা সেজে-গুজে পালিয়ে গিয়ে কালুকে বিয়ে করবে ) ঐ অত্তগুলো বেলী খোঁপায় পরে সন্ধ্যে বেলায় শুরু হত নাটক, সারা মঞ্চ জুড়ে নেচে গেয়ে হেসে কেঁদে এগিয়ে চলতো রাত, আর একটু একটু করে ফুটে উঠতো আমার খোঁপায় অজস্র তারার ফুল! নাটক শেষে ঘরে ফিরে বেডরুমে রাখা সাইড টেবিলে আমার জেডস্টোনের হালকা সবুজাভ ফ্লাওয়ার ভাসের সারা গায়ে জড়িয়ে দিতাম খোঁপা খুলে সেই ফুল, আমার মাথার চুল আর এক জীবনে আমার যত মধুর ভুল ! সে রাতে আর ঘুমাতে পারতাম না ! ফুলের গন্ধে কেমন করে ঘুমাই! আমার কাকে যেনো খুব মনে পড়তো, আমি তখন ক্লাস নাইন, আমি তখন শাড়ী!

প্রতি বছর আমি দেশে যাই বেলী ফুলের জন্য, প্রতি বর্ষায় আমার দু'হাতে ধরা কদম ফুলে নাক ডুবিয়ে গভীর শ্বাস নিয়ে কেঁদে ফেলি! দোলনচাঁপা কিনে বন্ধুর বাসায় যাই, প্রতি সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে গাড়ীর জানালা দিয়ে কিনি সবগুলো বেলী ! এই ফুলের গন্ধে মিশে আছে আমার শৈশব, আমার মধুর কিশোরীবেলা, আমার বেড়ে ওঠা, আমার বেইলি রোড, আমার মহিলা সমিতি, আমার আনন্দ বেদনা! আমার ঢাকা !

আমি আর্ত ! আমি ক্রন্দনোন্মুখ! আমি ঢাকায় যাব!   (ফেসবুক  থেকে সংগৃহীত)

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।