আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচকদের দলে মাশরাফি নেই

আমি আমার মতন।
নির্বাচকরা বিশ্বকাপ দল চূড়ান্ত করে সেটা জমাও দিয়ে দিয়েছেন বোর্ডে। আর তাই নিয়ে কাল উত্তপ্ত হলো টেকনিক্যাল কমিটির সভা। কারণ তাদের চূড়ান্ত ১৫ জনে মাশরাফি নেই। এখনো বিশ্বকাপের বাকি এক মাস, ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেখানে চাইলে ১৬ জন রাখা যায়, সেখানে কেন মাশরাফির বিষয়ে নির্বাচকদের এমন কঠোর অবস্থান।

সেই প্রশ্ন ওঠে সভায়। দেওয়ান শফিউল আরেফিনের মতো কেউ কেউ কঠোর অবস্থান নেওয়ায় তর্ক হয় পক্ষে-বিপক্ষে। আর তাই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সময় নিতে এক দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা। আজকের বদলে সেটা আগামীকাল ঘোষণা করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে বিসিবি। মাশরাফিকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের বাইরে আরো দুটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্বাচকরা।

ফিরিয়ে এনেছেন শাহরিয়ার নাফীসকে। দলে রাখা হয়েছে আশরাফুলকেও। এর বাইরে বাকি সম্ভাব্যদের সবাই আছেন তালিকায়। এই তালিকাটা নিয়ে কাল সন্ধ্যায় বিশেষ কমিটির সভায় উপস্থিত হন প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলম এবং তাঁর দুই সহকারী আকরাম খান ও জাহিদ রাজ্জাক মাসুম। বিশ্বকাপ দল নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার এ আলোচনায় যুক্তি-পাল্টাযুক্তির এক পর্যায়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে সভা।

মাশরাফি বিন মর্তুজাকে কেন স্কোয়াডে রাখা হয়নি? আবার রকিবুল হাসানকে দলে রাখা নিয়েও কঠোর জেরার মুখে পড়তে হয়েছে নির্বাচকদের। এ ব্যাপারে অবশ্য নির্বাচকদের কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে সভাশেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি পরিচালক এনায়েত হোসেন সিরাজ। বিশ্বকাপ দল কবে ঘোষণা হবে_এ প্রশ্নে তাঁর উত্তর, 'আমাদের হাতে সময় আছে। তাই আরো একটি দিন সময় নিচ্ছি।

' নির্বাচকরা দল হাতে তুলে দেওয়ার পরও তা ঘোষণায় এ বিলম্বের কারণ, 'দলে কিছু ইনজুরি সমস্যা আছে। আরো কিছু বিষয় আছে। তাই ১৯ জানুয়ারি দল ঘোষণা করা হবে। ' দল নির্বাচনে ইনজুরি সমস্যা আছে শুধু একজনের। তাহলে কি মাশরাফির জন্যই এ অপেক্ষা? তা স্বীকার করলেও বাস্তবতা সম্পর্কে এনায়েত হোসেন যে ইক্সগিত দিয়েছেন, তাতে ঘরের মাঠে মাশরাফির বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ, 'আমি খুব একটা আশাবাদী নই।

তবু সময় যখন হাতে আছে, একটু অপেক্ষা না হয় করলামই। ' আবার বিকল্প পথও দেখিয়েছেন তিনি, 'ইচ্ছা করলে স্কোয়াডটা ১৬ জনের করতে পারি। তবে সেটি ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কারণ এরপর বিশ্বকাপ স্কোয়াড চলে যাবে আইসিসির অধীনে। তখন নিজেদের খরচেও বাড়তি ক্রিকেটার দলে রাখার সুযোগ নেই।

তবে ১৫ জনের দলেও মাশরাফিকে রাখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিতান্তই সম্ভব না হলে মাশরাফিকে ইনজ্যুরড দেখিয়ে আইসিসির অনুমতি সাপেক্ষে আমরা যে কাউকে দলে নিতে পারব। ' ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যখন অপেক্ষা করা যাবে এবং যখন অন্য দলগুলোর সবাই সময় আছে বলে (ভারতের টেন্ডুলকার-শেবাগ-গম্ভীর সবাই ইনজুরিতে, তবু দলে আছেন) শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করছে, সেখানে নির্বাচকদের মাশরাফি-বিষয়ক এই অবস্থান একটু অবাক করা। মাশরাফি যেখানে দলের অন্যতম প্রধান সম্পদ, বড় কিছু করতে হলে তাঁর প্রয়োজন যেখানে প্রশ্নাতীত, সেখানে সবার উচিত কোনোভাবে তাঁকে রাখা যায় কি না সেই চেষ্টা করা। বোর্ডের বড় অংশটা সেটা বোঝে বলেই প্রশ্নটা তুলেছে।

নির্বাচকরা অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন ফিজিও মাইকেল হেনরির রিপোর্টকে। তাঁর রিপোর্টে খুব একটা আশার বাণী না থাকাতেই নাকি তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই রিপোর্ট নিয়েও প্রশ্ন থাকে। যে খেলোয়াড়টি এখন ব্যাটিং প্র্যাকটিস করছেন, দৌড়াচ্ছেন, এক মাস পরও তিনি বল হাতে নিতে পারবেন না_এই নিশ্চয়তা যে কী করে একজন দিয়ে দেন কে জানে! আর মাশরাফি ক্রাচে ভর করে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হওয়ার তিন সপ্তাহ পরই কিন্তু বল হাতে নেমেছেন। যা-ই হোক, এখন বোর্ডের সিদ্ধান্তই মাশরাফির বিশ্বকাপ স্বপ্ন সত্যি করতে পারে।

বোর্ড সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে রকম সিদ্ধান্ত নিলে বাদ পড়বেন কে? রকিবুল হাসান? তাঁকে বাদ দিলে মিডল অর্ডারে বিকল্প ব্যাটসম্যানের সংখ্যা কমে যায়। তাহলে কি ওই পজিশনে ব্যাট করার অতীত অভিজ্ঞতার কারণে রকিবুলের চেয়ে শাহরিয়ারের কদর বেড়ে যাবে? নাকি শাহরিয়ারের ওপরই খৰহস্ত হবে বোর্ড? এমন অনেক দুর্ভাবনার ভিড়ে উঁকি দিচ্ছে নাঈম ইসলামের নামও। সাকিব-মাহমুদউল্লাহ যখন আছেন, তখন আরেকজন স্পিনার-অলরাউন্ডারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। অবশ্য এ কন্ডিশনে তিন পেসারই যথেষ্ট_এই বিবেচনায় বাদ যেতে পারেন নাজমুল। এ নাটকীয়তায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ সম্ভবত একটু আগেভাগেই শুরু হয়ে গেল! বোর্ড ক্ষুব্ধ নির্বাচকদের চূড়ান্ত করা তালিকায় মাশরাফি নেই।

তাতে ক্ষুব্ধ বোর্ড। কেন তাঁকে রাখা হয়নি এই প্রশ্নে বিধ্বস্ত হতে হয়েছে নির্বাচকদের। পরে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সময় বের করতে দল ঘোষণা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এক দিন। অর্থাৎ বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল ঘোষিত হবে আগামীকাল নির্বাচকদের দল তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, জুনায়েদ সিদ্দিকী, শাহরিয়ার নাফীস, মোহাম্মদ আশরাফুল, রকিবুল হাসান, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, আবদুর রাজ্জাক, শফিউল ইসলাম, নাজমুল হোসেন, রুবেল হোসেন, সোহরাওয়ার্দী শুভ ও নাঈম ইসলাম সূত্র: কালের কণ্ঠ ।
 



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.