আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা-৮

আমি নতুন কিছু পড়তে ভালবাসি

মানবসম্পদ উন্নয়নমূলক কর্মসূচী যাকাতের অর্থ দিয়ে বিভিন্নভাবে মানবসম্পদ উন্নয়নমূলক কাজ করা যায়, তার কিছু নিম্নে আলোচিত হল- ১. দ্বীনি শিক্ষা অর্জনে সহযোগিতাঃ ইসলামী শিক্ষা অর্জন ব্যতিরেকে প্রকৃত মু'মিন হওয়া অসম্ভব। কিন্ত এ দেশে ক্রমেই সেই সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসছে। দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাদ্রাসাগুলো কোন রকমে টিকে আছে। স্কুলগুলোর মতো মাদ্রাসাগুলোতে না বই ফ্রী দেওয়া হয় আর না পোশাক (কিছুদিন পূর্ব থেকে অবশ্য নবম শ্রেণী পর্যন্ত বই ফ্রি দেওয়া হচ্ছে)। স্বাভাবিকভাবেই অর্থাভাবে অবিভাবকেরা তাদের সন্তানদেরকে মাদরাসা ছেড়ে স্কুলে ভর্তি করান।

মাদ্রাসাগুলোতো ছাত্র-ছাত্রী রাখতে হলে তাদের জন্যও স্কুলের অনুরূপ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য যদি দাখিল মাদ্রাসাগুলো সহ আলিম ও ফাযিল মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের বেছে নেয়া হয় তাহলে এদের সংখ্যা দাড়াবে দশ লাখের মত। এদের বই সরবরাহ করতে গড়ে মাথাপিছু ২০০টাকা হিসেবে দরকার হবে ২০কোটি টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভিটামিন ও আয়রন ট্যাবলেট সরবরাহ করলে প্রয়োজন হবে আরও দশ কোটি টাকার। সর্বসাকুল্যে এই ৪৫কোটি টাকার বিনিময়ে মানব সম্পদ উন্নয়নের যে স্থায়ী ভিত রচিত হবে তার ভবিষ্যৎ মূল্য অপরিসীম।

এসবের পাশাপাশি মাদ্রাসার লিল্লাহ বডিংগুলোতে খাদ্যমান বাড়াবার জন্যে যাকাতের অর্থ ব্যবহার অপরিহার্য। ২. ইসলামী সাহিত্য প্রকাশঃ মনে রাখা দরকার, ইসলামের প্রচার ও প্রসার এবং ইসলামী জীবন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও সেসবের বিকাশের কোনও বিকল্প নাই। সে জন্যে মাদ্রাসা সহ অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান দ্বীনের কাজে সক্রীয়ভাবে লিপ্ত তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। একইসাথে ইসলামের চিন্তা ও বিশ্বাসের ধারক বই-পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা প্রকাশের কাজে বিশেষ মনোনিবেশ করতে হবে। সহজবোদ্ধ করে লেখা ইসলামী জীবন ব্যবস্থার বুনিয়াদী শিক্ষার পাশাপাশি জ্ঞানগর্ভ, যুক্তিপূর্ণ বইয়ের আজ বিশেষ প্রয়োজন।

এসব বই পৌছে দিতে হবে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীদের হাতে। এছাড়া পাশ্চাত্যের ভোগবাদী দুনিয়াসর্বস্ব জীবন দর্শনের মুকাবিলা করা আদৌ সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে বর্তমান শতাব্দীর প্রখ্যাত মনীষী ও ইসলামী চিন্তাবিদ ডঃ ইউসুফ আল কারযাবী তাঁর ইসলামে যাকাত বিধান বইয়ে স্পষ্টভাবে লিখেছেন "যাকাত খাতের সমস্ত আয় সাংস্কৃতিক, প্রশিক্ষণমূলোক ও প্রচারধর্মী কার্যাবলীতে ব্যয় করাই এ কালে উত্তম। সঠিক ইসলামের দাওয়াত প্রচারের কেন্দ্র স্থাপন এবং অ-মুসলিমদের মধ্যে ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব পালন একালে সব কয়টি মহাদেশেই একান্ত কর্তব্য। কেননা একালে বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদের মধ্যে প্রচন্ড দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষ চলছে।

একাজও জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। দেশের অভ্যন্তরে ইসলাম প্রচার কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং মুসলিম যুব সমাজকে এ কাজে নিয়োজিত ও প্রতিপালন করা একান্ত আবশ্যক। খালেস ইসলামী মতবাদ ও চিন্তাধারামূলক বই-পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা প্রচার করাও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তা প্রতিহত করবে বিধ্বংসী ও বিভ্রান্তিকর চিন্তা-বিশ্বাসের ধারক বই-পুস্তক ও পত্র-পত্রিকার যাবতীয় কারসাজি। তার ফলেই আলাহর কালেমা প্রাধান্য লাভ করতে পারে এবং সত্য-সঠিক চিন্তা সর্বত্র প্রচারিত হতে পারে।

এ কাজও আল্লাহর পথে জিহাদ। "

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.