আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা-৭

আমি নতুন কিছু পড়তে ভালবাসি

১১. ইউনিয়ন মেডিকেল সেন্টারঃ এদেশের পল্লী এলাকায় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবার সুবিধা যে কত অপ্রতুল ও অবহেলিত তা ভুক্তভোগীই মাত্র জানে। এদেশের গ্রামীন জনগন সু-চিকিৎসার অভাবে হাতুড়ে ডাক্তারদের হাতে জীবন সঁপে দিয়ে ধুঁকে ধুঁকে অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দেশের এই বৃহৎ জনগোষ্ঠির অধিকাংশই দরিদ্র। এদেরকে সুস্থ্যভাবে বাঁচার সুযোগ দিতে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা পল্লী এলাকায় পৌছে দিতে হবে। এজন্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ন্যুনতম সুযোগ-সবিধা সম্পন্ন মেডিকেল সেন্টার গড়ে তোলা প্রয়োজন।

ইউনিয়ন প্রতি গড় মাসিক ব্যয় যদি ২০হাজার টাকা ধরা যায় তাহলে মাসিক ব্যয় দাঁড়াবে ১০৬কোটি ৮২লক্ষ টাকা। ১২. নওমুসলিম পূনর্বাসনঃ দেশে প্রতি বছরই বিভিন্ন জেলায় কিছু কিছু ব্যক্তি বা পরিবার ইসলাম গ্রহণ করছে। ইসলাম গ্রহণের সাথে সাথেই এরা পারিবারিক সহযোগিতা ও সম্পদ হতে বঞ্চিত হয়। এদের ছেলে মেয়েরাও লেখা-পড়ার সুযোগ পায়না। এদের সম্মানজনক পূনর্বাসনের জন্যে সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়া আমাদের দ্বীনি দায়িত্ব।

যদি সারা দেশে প্রতি বছর অন্ততঃ পঞ্চাশটি নওমুসলিম পরিবারকে এ উদ্দেশ্যে ন্যুনতম মাসিক ৫,০০০টাকা হারে এক বছর ভাতা প্রদান ও কর্ম সংস্থানের জন্যে এককালীন ১০,০০০টাকা সাহায্য করা যায় তাহলে বছরে ব্যয় হবে ৩৫লক্ষ টাকা। ১৩. মরনোত্তর ঋণ পরিশোধঃ সহীহ হাদীসে উলেখ আছে "ঋণ রেখে মারা গেলে আল্লাহ শহীদকেও ক্ষমা করবেন না। " ঋণ বান্দার হক, এই ঋণ পরিশোধ না করার গোনাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন না, যতণ পর্যন্ত ঋণদাতা তা ক্ষমা করে না দেয়। সুতরাং ঋণ গ্রহীতা ঋণ পরিশোধ না করে মারা গেলে এবং তার ছেলে-মেয়ে বা উত্তরাধিকারীরা সেই ঋণ পরিশোধে অক্ষম হলে আখিরাতে ঐ ব্যক্তির অন্ততঃ আজাবের আশঙ্কা রয়েছে। তাই ঋণগ্রস্থ দরিদ্র কৃষকের জমি অবমুক্ত করার জন্যে যে ধরনের সহযোগিতার প্রস্তাব ইতোপূর্বে করা হয়েছে অনুরূপ সাহায্য এ ক্ষেত্রেও দেওয়া যেতে পারে।

বরং এর ক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। কৃষিকাজ ছাড়াও নানা কারনে লোকে ঋণ নেয় এবং অনেকে তা সাধ্যমত চেষ্টা সত্ত্বেও শুধতে পারে না। এদের মরনোত্তর ঋণ পরিশোধে এগিয়ে এলে অসহায় ছেলে-মেয়ে ও বিধবা পীড়ন ও অসম্মান হতে রেহাই পাবে। উপরন্তু ঋণ যদি জমি বন্ধক রাখার কারনে হয়ে থাকে তাহলে ঋণ পরিশোধের ফলে জমি ফিরে পাবে ওয়ারিশরা। এতেও বিরাট কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

১৪. শরনার্থী সহায়তা ও উদ্বাস্তু পূনর্বাসনঃ বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা সন্ত্রাসের শিকার। স্বদেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিচ্ছে অসহায় হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ। জীবন বাঁচাবার জন্যে নিরুপায় হয়ে অনেকেই শুধু পড়নের কাপড়টুকু সম্বল করে অজানা গন্তব্যের দিকে পাড়ি জমিয়েছিল, তাদের বর্তমান বিভীষিকাময় ভবিষ্যৎ অজানা ও অনিশ্চিত। লাখো লাখো বনি আদমের সাহায্যে মুসলিম মিল্লাতকেই এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে যাকাতের অর্থও দিতে হবে আজকের এসব অভাবী ভাই-বোনদের প্রয়োজন পুরনের জন্যে, তাদের পূনর্বাসনের জন্যে।

ক্ষুধা-তৃষ্ণায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পাশাপাশি শীতের ঠান্ডা ও গ্রীষ্মের দাবদাহ হতে রক্ষার জন্য চাই উপযুক্ত আশ্রয়স্থল। এর প্রয়োজন পুরনে যাকাতের অর্থ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। চাই শুধু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও যথাযথ পরিকল্পনা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.