আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাইলাতুল ক্বদর ও রমজানের আখেরীরাত



উম্মুল মোমেনিন মা আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে রসুল সাঃ এরশাদ করেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাতগুলিতে লাইলাতুল ক্বদর তালাশ কর। (বোখারী ,মায়াযেফ) হযরত আযেশা ছিদ্দিকা রাঃ বলেন আমি রসুরুল্লাহ সাঃ এর খেদমতে আরজ করেন, লাইতাতুল ক্বদর সম্পর্কে অবগত হওয়ারপর সেই রাতে আমি আল্লাহর পাকেরে দরবারে কি দোয়া করব? তিনি এরশাদ করলেন- এই দোয়া অর্থাৎ আয় আল্লাহ! আপনি ক্ষমাকারী (এবং) অত্যন্ত দয়াময়, আপনি ক্ষমা পছন্দ করেন, সুতরাং আমাকে ক্সমা করুন। (মারেফুল হাদীস) রমজানের শেষ বা আখেরী রাতঃ হযরত আবু হোরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে রসুল সাঃ এরশাদ করেন ,রমযানের আখেরী রাতে আমার উম্মতের জন্য মাগফিরাত ও ক্ষমার ফায়সালা করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো সেই রাতটি কি লাইলাতুল ক্বদর? এরশাদ হলো লাইলাতুল ক্বদর নয়; তবে ব্যাপার হলো আমলকারী যখনতার আমল সম্পন্ন করে ,তখন তাকে পূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হয়। ( মুসনাদে আহমাদ, মায়ারেফ) সুরা ক্বদর মক্কা অবতীর্ণঃ আয়াত ৫ পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু - ১) আমি একে নাযিল করেছি শবে ক্বদরে।

২) শবেক্বদর সম্পর্কে আপনি কি জানেন? ৩)শবেক্বদর হলো একহাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। ৪)এতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালন কর্তার নির্দেশক্রমে। ৫) এটা নিরাপত্তা যা ফযরের উদয হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। শানে নযুলঃ ইবনে আবী হাতেম রাঃ এর বর্ণনায় আছে রসুল সাঃ একবার বনী ইসরাইলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। সে এক হাজার মাস পর্যন্ত অবিরাম জেহাদে মশগুলে থাকেন।

এবং অস্ত্র সংবরণ করেনি। মুসলমানগণ একথা শুনে বিস্মিত হলে এ সুরা অবতীর্ণ হয়। এতে উম্মতের জন্য শুধু একরাত্রির ইবাদতই সে মুজাহিদের একহাজার মাসের এবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করা হয়েছে। ইবনে জারীর রহ অপর এক ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেন বনী ইসরাইলের জনৈক এবাদতকারী ব্যক্তি সমস্ত রাত্রি এবাদতে মশগুল থাকতো ও সকাল হতে ই জেহাদের জন্য বের হয়ে যেত এবং সারাদিন জেহাদে লিপ্ত থাকত। সে এক হাজার মাস এভাবে কাটিয়ে দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই আল্লাহ তায়ালা সুরা ক্বদর নাযিল করে এ উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছেন। এ থেকে আরও প্রতীয়মান হয় যে শবে ক্বদর উম্মতে মুহাম্মদীরই বৈশিষ্ট। লাইলাতুর ক্বদরের অর্থঃ ক্বদরের অর্থ মাহাত্ন ও সম্মান। কেউ কেউ এ স্থলে এ অর্থই নিয়েছেন। এর মাহাত্ম্য ও সম্মানের কারনে একে লাইলাতুল ক্বদর তথা মহিমান্বিত রাত বলা হয়।

আবু বকর ওয়াররাক বলেনঃ এ রাত্রিকে লাইলাতুর ক্বদর বলার কারণ এই যে আমল না করার কারনে এরপূর্বে যার কোন সম্মান ও মূল্য মহিমান্বিত থাকেনা সে এ রাত্রিতে তওবা ও এবাদতের মাধ্যমে সম্মানিত হয়ে যায়। ক্বদরের আরেক অর্থ তকদীর এবং আদেশও হয়ে থাকে। এ রাত্রিতে পরবর্তী এক বছরে অবধারিত বিধিলিপি ব্যবস্থাপক ও প্রয়োগকারী ফেরেশতাগণের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রত্যেক মানুষের বয়স,,মৃত্যু ,রিযিক,বৃষ্টি ইত্যাদির পরিমান নির্দিষ্ট ফেরেশতাদের লিখে দেয়া হয়,এমনকি,এ বছরে কে হজ্জ্ব করবে,তাও লিখে দেয়া হয়, এমনকি, এ বছর কে হজ্জ করবে,তাও লিখে দেয়া হয়্ হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ এর উক্তি অনুযায়ী চারজন ফেরেশতাকে এসব কাজ সোপর্দ করা হয়। তারা হলেন ইসরাফীল ,মীকাইল ,আযরাইল ও জিবরাইল (আঃ)।

- (করতুবী) অধিকাংশ তফসীরবিদের মতে লাইলাতিল মুবারাকাতি এর অর্থ শবে ক্বদর ই। কেউ কেউ এর অর্থ নিয়েছেন শবেবরাত। তারা বলেন যে ,তকদীর সংক্রান্ত বিষয়াদির প্রাথমিক ও সংরক্ষিত ফয়সালা শবেবরাতেই হয়ে যায়। অতঃপর তার বিশদ বিবরণ শবেক্বদরে লিপিবদ্ধ হয়। (মারেফুল কোরআন) ------------------------------------------------------ শবে ক্বদর খুবই তাৎপর্য পূর্ণ একটি রাত।

এই রাতে দোয়া ও আমল করে সাড়ে ৭২ বছর ইবাদতের নেকী অর্জন করা যায়। কথিত আছে রসুল সাঃ শবে ক্বদর রাত নির্দিষ্ট করে দিতে চেয়েছিলেন। দুই ব্যক্তির ঝগড়ার ফলে সেটি নির্ধারণ করে দেয়া ব্যাহত হয়। মোদ্দা কথা ঝগড়াবিবাদ আল্লাহ তায়ালা খুবই অপছন্দ করেন। নাখোশ হোন।

সবাই মিলেমিশে থাকাকে তিনি দারুণ পছন্দ করেন। আল্লাহ তায়ালা সকল মানুষকে ক্বদরের মহত্ব বোঝার ও আমল করার তওফীক দান করুণ। আর সবাইকে মিলে মিশে শান্তির নীড় প্রতিষ্ঠা করার তৌফিক দান করুন। আমীন ।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৬ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।