আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি রিভিউঃ ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ(১৯৫৭)

seremos como el Che
ইঙ্গমার বার্গম্যান। যাকে ধরা হয় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফিল্ম ডিরেক্টরদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে। তার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার প্রকাশ এই ‘ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ’ মুভিটি। বার্গম্যানের মুভিগুলো বেশীরভাগ মানুষের একাকিত্ব, মৃত্যুভাবনা, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি, কিছু কিছু সময়ের প্রেম-ভালবাসা ইত্যাদি বিতর্কিত বিষয়গুলোকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমার ধারনা ‘ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ’ মুভিটিতে সংমিশ্রণ ঘটেছে এর প্রায় সবক’টির।

বার্গম্যানের চিন্তায় এই মুভিটি আসে গাড়িতে ষ্টকহোম থেকে ডালানা ভ্রমণ করার সময়। পথে পড়ে তার ফেলে আসা শৈশবের শহর উপসালা, তার ছোটবেলার বেড়ে ওঠার বাড়িঘর। তিনি চিন্তা করলেন যে এটা কেমন হত যদি এমন একটা দরজা থাকত যেটা দিয়ে আমরা প্রবেশ করতে পারতাম আমাদের শৈশবে? যেখানে থেমে যায় সময়, জীবন পায় একটি অন্যরকম দর্শন। আবার আর একটি দরজা দিয়ে আমরা ফিরে আসতে পারি আমাদের বর্তমান সময়ে, যেখানে জীবন চলছে তার আপন গতিতে। যেখানে সন্মান, ডিগ্রী, অর্থ, সফলতা হয়ে দাঁড়ায় মূল লক্ষ্য।

এই দুই জীবনের মধ্যে সংঘাতই ‘ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ’ মুভিটির মূল উপজীব্য। ইসাক বর্গ নামের একজন ডাক্তারকে নিয়েই মুভিটির কাহিনী। তার অত্যন্ত সফল জীবনের পরও তার জীবনের যে শান্তির অভাব, সেটাই মূর্ত হয়ে উঠেছে এখানে। উঠে এসেছে বিভিন্ন ঘটনা যা তিনি নানানভাবে ভুলে যেতে চেয়েছেন, তার কৈশোরের প্রেমিকার কথা বিশেষভাবে। ছেলেবেলায় ফেলে আসা গ্রীষ্মকালীন বাড়ি আর দশ ভাইবোনদের নানান ঘটনা।

এই সবই ঘটে গাড়িতে করে ষ্টকহোম থেকে লুন্ডের পথে তার পুত্রবধূর সাথে ভ্রমণের সময়ে। আর সাথে এটাও স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে সবকিছু পেয়েও তার ছেলের জীবন তার থেকে কিছুমাত্র আলাদা হয়নি। ইসাক বর্গের একাকিত্ব, মৃত্যুভাবনা দারুণভাবে নাড়া দেবে সবাইকে আর উৎসাহিত করবে নিজের জীবনকে পর্যালোচনা করতে। আমার ধারণা এই চরিত্রটির মধ্য দিয়ে বার্গম্যান তার বাবাকে বুঝিয়েছেন, যদিও আমি নিশ্চিত নই। কিন্তু এখানে ওখানে যতটুকু পড়লাম, সেটা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশী।

মুভিতে ইসাক বর্গের স্ত্রীর নাম দেখানো হয়েছে কারিন বর্গ, বার্গম্যানের মা’র নাম ছিল কারিন বার্গম্যান। যদিও আমি জানি এটা কোন যুক্তি না, এটা কাকতালীয়ও হতে পারে। সাদাকালো এই মুভিটির ভাষা সুইডিশ। রিলিজ হয়েছিল ১৯৫৭ সালে। সুইডিশ ভাষায় নাম ছিল Smultronstället যেটার ভাবগত অর্থ দাঁড়ায় ‘কোন একটি জায়গার অবহেলিত সম্ভাবনা’।

ভিক্টর সিসট্রোম অভিনীত শেষ মুভি এইটি, এছাড়াও বিবি এন্ডারসন এবং ইনগ্রিড থুলিন আছেন দু’টি প্রধান চরিত্রে। যারা মুভি দেখতে ভালবাসেন তাদের মুভিটি ভাল লাগবে বলে আমার ধারনা। টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করতে চাইলে তা করতে পারবেন এখান থেকে অথবা এখান থেকে । স্পিড পাবেন কিনা সন্দেহ আছে যদিও। বার্গম্যানকে নিয়ে একটা বেশ ভাল লেখা পড়েছিলাম কিছুদিন আগে।

লিঙ্কটা দিলাম, আপনাদের আগ্রহ থাকলে পড়তে পারেনঃ ইঙ্গমার বার্গম্যান : চলচ্চিত্রে চিন্তাশীল আলোকসম্পাত । ৭ই ডিসেম্বর, ২০১০, ঢাকা।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.