আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রানজিট : আর্থিক বেনিফিটের গ্যারান্টি নেই-৩



ট্রানজিট যদি দিতেই হয়, তাহলে চীন, নেপাল ও ভুটানকে এর সঙ্গে যুক্ত করা উচিত। পাশাপাশি সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককেও নিশ্চিত করতে হবে আগে, যাতে আমরা বছরে ১০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করতে পারি। ভারত যে ছলে-বলে সো-কল্ড ট্রানজিট নিতে চাচ্ছে, তা এদেশবাসী কমবেশি জানেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধান উপদেষ্টাকে নয়, ভারত বাংলাদেশের জেনারেল মইন উ আহমদকেই দেশটি সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এটার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল 'ট্রানজিট চুক্তি গেলানো'।

আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, জাতীয় স্বার্থের ধূয়া তুলে ভারত কিভাবে সিকিম, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কায় সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল। দিক্ষণ এশিয়ায় বন্ধুত্বের সব পরীক্ষায় ব্যর্থ রাষ্ট্রটির নামই তো ভারত। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের প্রতি ভারত তার পররাষ্ট্র নীতিতে মাত্র একটি নীতিদই পালন করেছে। আর তা হচ্ছে put pressure and meet the demand. স্রেফ সেভেন সিস্টার্সের বিদ্রোহ দমন করতে ভারত তার সেনাবাহিনীর অর্ধেকটাই এখন জড়ো করেছে সেভেন সিস্টার্সে। শিঁলিগুড়ি করিডর দিয়ে ভারত সেভেন সিস্টার্সে এখন ঢুকছে।

কিন্তু 'নিরাপত্তার অজুহাতে' নেপালকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি ভারত। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অসংখ্য জাহাজ ডুবির কারণে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ভারতের কাছে কলকাতা বন্দর সাময়িকভাবে ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল। তাও ভারত দেয়নি নিরাপত্তার অজুহাতে। এখানেই শেষ নয়।

ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা করতে নেপাল মাত্র ১৬ কিলোমিটারের ট্রানজিট চাইলেও ভারত তা দিতে রাজি হয়নি। বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে ট্রানজিট এখন অতি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক হাতিয়ার বিবেচিত। কিন্তু ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার আগে আমাদেরকে অনেক কিছু ভাবতে হবে। কারণ ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় ব্রাহ্মণ্যবাদী নেতারা সেভেন সিস্টার্সের খনিজ সম্পদ শোষণ করার মাধ্যমে এলাকাবাসীকে আরও দরিদ্র বানানোর যে 'মহান' পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে চাইছেন এবং সেই পরিকল্পনা ট্রানজিটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে ফেললে ভৌগোলিক সংলগ্ন সেভেন সিস্টার্সের অধিবাসীদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা স্থায়ী তিক্ততার সম্পর্ক রচিত হয়ে যাবে। এটা পৃথিবীর যে কোনো জাতির ব্যাপারে বাস্তব হতে বাধ্য।

তাই বুঝে শুনে পা না দিলে তার মাশুল আমাদেরকে গুনতে হতে পারে। তবে অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, বর্তমান সরকারে কাছে এজেন্ডা মাত্র একটাই। আর তা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব, কোনো প্রকার জরিপ ছাড়াই ভারতকে করিডর দিয়ে দেয়া। এটা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.